কিক অফের আগে: ইংল্যান্ডের 'বাড়ি ফেরা'-র পথের কাঁটা ক্রোয়েশিয়া
ইংল্যান্ডের 'বাড়ি ফেরা'-র পথের কাঁটা ক্রোয়েশিয়া
ইংল্যান্ড বনাম ক্রোয়েশিয়া; সেমিফাইনাল; ১১(১২) জুলাই, রাত ১২টা; লুঝনিকি স্টেডিয়াম; বিটিভি, মাছরাঙ্গা, টেন ২/৩
এক দলের অপেক্ষা ২৮ বছরের, আরেক দলের ২০ বছরের। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে সুকার-বোবানে সওয়ার হয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল ক্রোয়েশিয়া। এরপর আরও ৪ বিশ্বকাপ আসলেও শেষ চারে আর উঠা হয়নি ক্রোয়াটদের। ইংল্যান্ডের অবস্থা তো আরও হতাশাজনক। সেই ১৯৯০ বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানির কাছে শেষ চারে পেনাল্টিতে হেরে বিদায়। এরপরের বিশ্বকাপগুলো থেকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে এবং বুকভরা হতাশায়। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ আগেরগুলোর মত না কোনো দলের জন্যই। মাঠের খেলার সাথে ফলাফলও নিজেদের অনুকূলে থাকায় শেষ চারে পৌঁছে গেছে দু’দল। আজ লুঝনিকি স্টেডিয়ামে একে অপরের মুখোমুখী হবে তারা। ক্রোয়েশিয়ার লক্ষ্য নিজেদের সোনালী প্রজন্মের (খুব সম্ভবত) একত্রে শেষ বিশ্বকাপে অভূতপূর্ব ইতিহাসের জন্ম দেওয়া। আর ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ১৯৬৬-এর সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনা।
তাহারা বলেন
পানামা ম্যাচের পর থেকেই মূলত ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে বুঁদ হওয়া শুরু হয়েছিল ইংলিশ সমর্থকরা। বড় ব্যবধানে জয়ের সাথে মাঠের বোঝাপড়াটাও দারুণ। সব মিলিয়ে ইংলিশদের আত্মবিশ্বাসটাও আছে তুঙ্গে। তবে পা এখনও মাটিতেই রাখছেন বলে জানিয়েছেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট, “অনেকদিন পর আমরা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এসেছি। এজন্য ছেলেরাও বেশ আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু এর মানে এই না যে আমরা এখনই সব জিতে যাওয়ার উচ্চাশায় ভুগছি। ক্রোয়েশিয়া দুর্দান্ত এক দল। বিশেষ করে তার মাঝমাঠটাও অসাধারণ। তবে দলগত ভাবে আমাদের লক্ষ্য একটাই, ১৯৬৬-এর সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনা। এই মাঠেই আগামী সপ্তাহে ফাইনাল হবে বিশ্বকাপের। আশা করি আমরা আবারও লুঝনিকিতে ফেরত আসতে চাই।”
এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ধারাবাহিক দল তারা। হারিয়েছে আর্জেন্টিনার মত দলকেও। কিন্তু তারপরও আজ ইংল্যান্ডকেই ফেভারিট মানছেন দালিচ, “এই ম্যাচে নিঃসন্দেহে ইংলিশরাই ফেভারিট। মাঠের খেলায় আমার মতে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল তারা। এত বছর পর সেমিফাইনালে আসায় তাদের মধ্যে ফাইনালে খেলার ইচ্ছাটাও প্রবল। সামর্থ্যের বিচারেও তারা আমাদের থেকে এগিয়ে। তবে আমরাও কাল জয়ের জন্যই খেলব। ছেড়ে কথা বলার জন্য ক্রোয়েশিয়া এই বিশ্বকাপে আসেনি।”
দলের খবর
২৮ বছর পরের সেমিফাইনালে পূর্ণশক্তির স্কোয়াডই পাচ্ছেন সাউথগেট। তবে প্রতিপক্ষ ম্যানেজারের মত এতটাও নির্ভর থাকতে পারছেন না দালিচ। ডেনমার্ক এবং রাশিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি শুটআউটের নায়ক ড্যানিয়েল সুবাসিচের খেলা নিয়ে আছেন যথেষ্ট সংশয়। ইনজুরির কারণে সিমে ভ্রাসালকোর খেলা নিশ্চিত নয় খুব একটা।
সম্ভাব্য মূল একাদশ
ইংল্যান্ড (৩-৫-২): পিকফোর্ড; ওয়াকার, ম্যাগুয়ের, স্টোনস; ইয়ং, আলি, লিনগার্ড, হেন্ডারসন, ট্রিপিয়ের; স্টার্লিং, কেইন।
ক্রোয়েশিয়া (৪-২-৩-১): সুবাসিচ; ভ্রাসালকো, ভিদা, লভ্রেন, স্ট্রিনিচ; রাকিটিচ, ব্রোজোভিচ; রেবিচ, মদ্রিচ, পেরিসিচ; মানজুকিচ।
ট্যাকটিক্সের টুকিটাকি
রাইটব্যাক সিমে ভ্রাসালকো না খেললে রহিম স্টার্লিংকে আটকাতে বেশ বেগ পেতে হবে ক্রোয়েশিয়াকে। স্ট্রাইকার কেইনকে আটকাতে লভ্রেন-ভিদা জুটির দিকেই তাকিয়ে থাকবেন দালিচ। ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠের ‘নিউক্লিয়াস’ লুকা মদ্রিচকে আটকাতে পারলেই ক্রোয়াট আক্রমণভাগকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া যাবে অনেকটাই। ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ককে আটকানোর দায়িত্বটা পড়বে জর্ডান হেন্ডারসনের ওপর।
সংখ্যায় সংখ্যায়
- আজকের আগে ৮ বার দেখা হয়েছে দু’দলে। ইংল্যান্ড জিতেছে ৪বার, ক্রোয়েশিয়া জিতেছে ২বার।
- নিজেদের বিশ্বকাপ নকআউট পর্বের ইতিহাসে মাত্র ১বারই হেরেছে ক্রোয়েশিয়া (ফ্রান্স, ১৯৯৮)।
- ১৯৮২ সালের পর একই বিশ্বকাপে কখনোই ইউরোপের দু’দলকে হারাতে পারেনি ইংল্যান্ড।