• ক্রিকেট

আমাদের মুশফিক

পোস্টটি ৪৭৪৯ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

২০০৫ সালে বি প্লাস গ্রেডের ব্যাটসম্যান এবং উইকেট কিপিং পারেন যে কিনা খালেদ মাসুদ পাইলটের পর দলের উইকেটরক্ষক হিসেবে খেলবেন, এমন একজন হিসেবেই দলে আসেন। জেমি সিডন্স এর সময় তার ওয়ানডে ব্যাটিং গড় ২৫-২৬ এর মাঝামাঝি ছিলো। টেস্টে ৩০ এর একটু কম। সময় বদলেছে, সেই বি প্লাস গ্রেডের মুশফিক এখন ব্যাটিং টেকনিকে বর্তমানে খেলা উপমহাদেশের সেরা পাঁচ জনের মধ্যে একজন। ওয়ান্ডে ব্যাটিং গড় ৩২ আর টেস্টে ৩৫ এর কাছাকাছি।
আসল কথায় আসি। এই ছেলেটাকে দেখলে কেন জানি আমার সাঙ্গাকারার কথা মনে পড়ে যায়। ক্রিকেটীয় হিসাবের কিছু তথ্য দেই। মাহেলা জয়াবর্ধনে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সেরা ট্যালেন্টেড ব্যাটসম্যান । পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এমন অনেক ম্যাচ মনে আছে, যখন সাঙ্গা আর জয়াবর্ধনে একসাথে ব্যাটিং করেছেন, কিন্তু মনে হয়েছে এই পাশ থেকে সাঙ্গাই অনেক সময় ধরে কষ্ট করে ব্যাটিং করছেন। আর ২২ গজের ওপাশে জয়াবর্ধনে খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলে যাচ্ছেন। এখানে জয়াবর্ধনে কে এই জন্য নিয়ে আসা, কারণ ব্যাটসম্যান জয়াবর্ধনের মত নান্দনিক শট খেলার মত অত বড় ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটসম্যান ছিলেন না সাঙ্গা। সেই জন্যই হয়তো, টেস্ট গড় যখন শচীন, লারা, ক্যালিসদের উপরে চলে গেলো, অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু, যত সময় গেছে, সাঙ্গা দেখিয়েছেন, কষ্ট করেও ক্রিকেটীয় লিজেন্ড হওয়া যায়। নিজেকে নিয়ে যাওয়া যায় অনেক উপরে। একটা পরিসংখ্যান দেখাই, উইকেট কিপিং দিয়ে শুরু করেও সাঙ্গাকারা পরবর্তীকালে টেস্টে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। ৪০ এর আশেপাশে থাকা টেস্ট ব্যাটিং গড় ৫৭ তে নিয়ে গেছেন ক্যারিয়ার শেষে। কারণ একটাই, ব্যাটসম্যান সাঙ্গার টেস্ট ব্যাটিং গড় ছিলো ৬৬। এর পেছনে সময়ের সাথে সাথে তার ক্রিকেটীয় টেকনিকের উন্নতি যেমন একটা কারণ, তেমনই লম্বা সময় কিপিং করে ব্যাটিং করা লাগেনি সেটাও একটি কারণ।
টেস্টের আত্মবিশ্বাস সাঙ্গার ওয়ানডে ক্যারিয়ারও পাল্টে দেয়। ওয়ান্ডেতে আরও বহুদিন উইকেটকিপিং করে গেলেও, ক্যারিয়ার শেষে ৪০ এর উপরে গড় নিয়ে যান। টানা ৪ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন।
এতকিছু বলার একটাই কারণ, মুশফিক একদিন বাংলাদেশের সাঙ্গাকারা হয়ে উঠুক, টেস্ট ক্যাপ্টেনের মত আচরণ করুক, ক্যাপ্টেন্সির উন্নতি করুক।

মুশফিক একদিন টেস্টে দশহাজার রান করবে সেই আশাই করি।