বাংলাদেশের পরবর্তী ব্যাটিং 'কান্ডারী'
পোস্টটি ১৫৯৩৭ বার পঠিত হয়েছেবয়স তাঁর কেবল ২১! বাংলাদেশের শততম টেস্টে অভিষেক কিংবা সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহর পরিবর্তে দলে জায়গা পাওয়া; কোনোটাতেই ঘাবড়ে যান নি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। হেরাথ-লাকমালদের বল যেভাবে খেলছিলেন, তাতে ক্ষণিকের জন্য মনে হতেই পারতো সৈকত ঢাকায় কোনো নেটে ব্যাটিং করছিলেন। ঠিক যেন ২০০১ এর সেই কিশোর আশরাফুলই ফিরে এসেছিলেন শ্রীলংকার মাঠে।
রঙ্গনা হেরাথের মত বোলারকে ইনসাইড-আউট করে এক্সট্রা কাভারের উপর দিয়ে হাঁকানো ছয় কিংবা লাকমলের বলে কভার ড্রাইভ এবং বাউন্সারে করা পুল শট গুলোই বলে দেয় এত অল্প বয়সেই ব্যাট হাতে কতটা পরিপক্ব তিনি। তাই তো ক্রিকেটের ম্যাচুরিটির লেভেলে এই তরুণকে সমবয়সীদের চেয়ে খানিকটা এগিয়ে রাখেন কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম কিংবা তামিম ইকবালও।
প্রিমিয়ার লিগে গত মৌসুমে আবাহনীর মত দলে সাকিব, তামিম কিংবা ইউসুফ পাঠানদের ভিড়েও ঠিকই নিজের দিকে আলো টেনে নিয়েছিলেন মোসাদ্দেক। চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে ব্যাট হাতে একাই প্রায় ৪/৫টি ম্যাচ জিতিয়েছেন এই তরুণ। তাছাড়া জাতীয় লিগেও সৈকতের ব্যাট হেসেছে নিয়মিতই। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে মোসাদ্দেকের ব্যাটিং গড় প্রায় ৭০ এর কাছে। ২০১৫/১৬ মৌসুমেই করেছেন ৭টি সেঞ্চুরি! যার মধ্যে ৩টি আবার ডাবল সেঞ্চুরি (২৮২, ২৫০, ২০০*)। তাছাড়া বাকি ৪টি সেঞ্চুরির দু'টোতে রয়েছে ১৫০+ স্কোর।
ঘরোয়া ক্রিকেটে গত কয়েক মৌসুমের ধারাবাহিকতার প্রতিফলনটাই এবার টেস্ট অভিষেকে করে দেখিয়েছেন সৈকত। ক্রিজে আর কিছুক্ষণ সাকিব থাকলে হয়ত আশরাফুলের মত লংকার মাঠে অভিষেক সেঞ্চুরিটা হয়ে যেত তাঁরও। তবে বাংলাদেশের হয়ে আট নম্বরে ব্যাটিং করে রেকর্ড ৭৫ রান করে জানিয়ে রাখলেন, ক্রিকেটকে অনেকদিন শাসন করতেই এসেছেন এই তরুণ। তা হবেই বা না কেনো, যে ছেলে মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর শোক না যেতেই মৃত্যুর দিন বিকালেই ব্যাট-প্যাড নিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে মাঠে নেমে যেতে পারেন তাঁর পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়!
হয়ত এত অল্প সময়েই তাঁকে নিয়ে এরকম কিছু বলা একটু বাড়াবাড়িই হতে পারে। তবে এই অল্প সময় তাঁর ব্যাটিং পরিসংখ্যান কিংবা খেলার স্টাইলই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আশা জাগিয়ে রাখছে, একদিন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘কান্ডারী’ হয়ে উঠবেন মোসাদেক হোসেন সৈকত।
- 0 মন্তব্য