• ক্রিকেট

ওয়ানডে হ্যাট্রিকের কথকতা

পোস্টটি ৯৫০৯ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

পর পর তিনটি বৈধ বলে তিনজন ব্যাটসম্যানকে আউট করলেই হয় হ্যাট্রিক। তবে কাজটি যে খুব সহজ নয় তার প্রমাণ দিচ্ছে পরিসংখ্যান। ৩৮৫৬তম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাসকিন করলেন মোটে ৪১তম হ্যাট্রিক। গড়ে প্রায় প্রতি ৯৫ ম্যাচে হচ্ছে একটি করে হ্যাট্রিক।

 

প্রথম ১৫৭ ওয়ানডেতে দেখা মেলেনি হ্যাট্রিকের। ১৫৮তম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কঠিন এই কীর্তির সূচনা করেছিলেন ডানহাতি পাকিস্তানী পেসার জালালউদ্দীন। পরের ২০০ ওয়ানডেতে আবার উধাও হ্যাট্রিক। ১৯৮৬ তে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো এই কীর্তি গড়েন অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার ব্রুস রিড। বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাট্রিকম্যানও উপমহাদেশের এক পেসার। সাতাশির বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চেতন শর্মার হাত ধরে শুরু,  এরপর বিশ্বকাপে হয়েছে আরও ৭টি হ্যাট্রিক।

 

এ ব্যাপারে একচ্ছত্র আধিপত্য পেসারদের। বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম ও আবদুর রাজ্জাক, পাকিস্তানের সাকলাইন মুস্তাক, জিম্বাবুয়ের উতসেয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকার ডুমিনিকে বাদ দিলে বাকি ৩৫টিই করেছেন পেসাররা। এদের মধ্যেও অনন্য ওয়াসিম আকরাম। তার দুই হ্যাট্রিকে কোন ফিল্ডারের সাহায্যই প্রয়োজন হয়নি। তিন ব্যাটসম্যানকেই বোল্ডের কীর্তি আছে চেতন শর্মা, ওয়াকার ইউনুস ও ড্যানি মরিসনেরও। 

 

 

২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইনিংসের প্রথম তিন বলেই ভাস ফেরান হান্নান সরকার, মোহাম্মদ আশরাফুল ও এহসানুল হককে। ম্যাচের প্রথম ওভারে এই কীর্তি গড়তে পারেননি আর কেউই। অন্যদিকে ফিন আর তাসকিন হ্যাট্রিক পূরণ করেছেন ইনিংসের শেষ ওভারে।

 

এই আলোচনায় একটি আলাদা অনুচ্ছেদ দাবি করতেই পারেন লাসিথ মালিঙ্গা। হ্যাট্রিকের হ্যাট্রিক করেছেন কেবল বাহারি চুলের এই পেসার। ২ বার করেছেন ওয়াসিম আকরাম, সাকলাইন মুস্তাক আর চামিন্দা ভাস। ২০০৭ বিশ্বকাপে শন পোলক, আন্ড্রু হল, ক্যালিস ও এনটিনিকে পরপর চার বলে ফেরান মালিঙ্গা। এই ফোরট্রিকের কীর্তিও নেই আর কারই।

 

 

অভিষেকে এই বিরল কীর্তি গড়েছেন এখন পর্যন্ত দুইজন, বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা। ওয়ানডে ও টেস্ট দুই ফরম্যাটেই হ্যাট্রিকম্যান পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম ও মোহাম্মদ সামি। আর ব্রেট লি ও থিসারা পেরেরা করেছেন ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টিতে।

সর্বোচ্চ আটবার এই নজির গড়েছেন পাকিস্তানি বোলাররা, ৭ হ্যাট্রিক নিয়ে তারপরই শ্রীলঙ্কানরা। সবচেয়ে বেশি ৬বার হ্যাট্রিকের শিকার অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা।

 

শেষ করব এমন বিরল কীর্তি গড়েও দলের হার ঠেকাতে না পারা সাতজনের কথা বলে। ২০০৬ সালে এই ক্লাবের সূচনা করেন শাহাদাত হোসেন। এরপর যোগ দিয়েছেন ক্লিন্ট ম্যাকাই, স্টিভেন ফিন, ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ান, শেন বন্ড, লাসিথ মালিঙ্গা ও প্রসপার উতসেয়া।