• ক্রিকেট

কেমন গেলো বাংলাদেশের প্রথম চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সেমি ফাইনাল

পোস্টটি ৫০১৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

ইনিংসের পঞ্চম বলে সৌম্য আউট। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলে না বুঝে ড্রাইভ করতে যাওয়ার পরিণতি। ভুবেনেশ্বর কুমারের বলে বোল্ড। তামিম শুরুতে দেখেশুনে খেলেন। অন্য দিকে সাব্বির নেমেই নিজের উদ্দেশ্য প্রকাশ করেন। প্রথম বলেই চার। ইন্ডিয়ান বোলাররা চেপে ধরার আগেই তাদেরকে প্রায় থতমত করে দেন। ভুবেনেশ্বর কুমার চালাক বোলার। বুমরা- ভুবেনেশ্বর পেস জুটি সাব্বিরকে কোনঠাসা করে দেয়। টানা তেরটি ডট বোল। ভুবেনেশ্বরের দুটা শর্ট বল একটা সাব্বির ডাক করেন আরেকটা চেষ্টা করেও ব্যাটে লাগাতে পারেন না। সাব্বির অধৈর্য হয়ে তৃতীয় শর্ট বল কাট করতে  নিয়ে আউট হন। ক্যাচ তালুবন্ধি করেন রবিন্দ্র জাদেজা।৩৩ রানে ২ উইকেটের পতন।

Soumya out

এরপর ক্রিজে আসেন মুশফিকুর। নিজের প্রথম ব্যক্তিগত ১২ রান তুলেন ভুবেনেশ্বর কুমারকে পর পর তিনটা চার মারে। এরপর বেশ কয়েকটা ওভার তামিম এবং মুশফিক মিলে নির্ঝঞ্ঝাট ভাবে পার করে দেন। ১ রান ২ রান করে নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখেন। মাঝেমধ্যে কয়েকটা চার মারেন।

 ষোল ওভার চলাকালীন অবস্থায়ে তামিম হার্দিক পানডিয়ার বলে অদ্ভুত ভাবে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান। ফিফটি করার পর একুশতম ওভারে তামিম আশ্নিনের বলে পর পর তিনটা চার মারেন। তামিম ৭০ রান করে নিজেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বর্তমান আসরের সর্বচ্চো রান সংগ্রহকের তালিকায় প্রথম স্থানে নিয়ে যান। পরে অবশ্য ধাওয়ান তাকে ছাড়িয়ে যান।

তামিম  ও মুশফিক বেশি চার ছক্কা না মেরে এক দুই রান করে নিয়েও ভাল গতিতে রান তুলছিলেন। ভিরাট কোহলি তো বসে থাকার পাত্র না। কোহলির বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং পরিবর্তন কাজে দেয়। পার্ট টাইম অফ ব্রেক বোলার কেদার যাদাব তামিম ও মুশফিকের  ১২৩ রানের পার্টনারশিপ ভাঙতে সক্ষম হন। কিছু ওভার পরেই জাদেজার বলে সাকিব আউট হয়ে যান। ব্যাটের কানায়ে লাগা বল ক্যাচ ধরেন ধোনি। গত মাচের ফর্ম এই ম্যাচে টেনে আনতে ব্যর্থ হন সাকিব।

রিয়াদ ব্যাট করতে আসার সময় মনে হচ্ছিল যে রিয়াদ এবং মুশফিক মিলে আরেকটা বড় পার্টনারশিপ গড়তে পারলে বাংলাদেশ তিনশর উপর রান করতে পারবে। তা হল না। এবারে যাদাবের শিকার মুশফিক। অফের বাহিরের বল সুইং করার চেষ্টা করেন মুশফিক। বল চলে যায় মিডউইকেটে দাঁড়ানো ভিরাটের হাতে। মুশফিক ৬১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। মোসাদ্দেক রিয়াদ জুটি আশা জাগালেও বেশি দূর এগোতে পারেনি। দুই জনই বুমরার কাছে ধরাশয়ি হন।

শেষের পাঁচ ওভারে আর কোন উইকেটের পতন ঘটেনি। তাসকিনকে নিয়ে মাশরাফি দলকে পঞ্চাশ ওভার অবধি নিয়ে যান।শেষের দিকে মূলত  মাশরাফিরর ৩০ রানের ইনিংসের উপর ভর করে বাংলদেশ ভারতকে ২৬৫ রানের টার্গেট দিতে সফল হয়ে।

ভারত দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেক আগ্রাসী ব্যাটিং করে।বাংলাদেশি বোলাররা অনেক চেষ্টা করেও দুই ওপেনারকে পরাস্ত করতে ব্যার্থ হন। প্রথম নয় ওভারের মধ্যে মাশরাফি চারজন পেস বোলার ব্যাবহার করে ফেলেন।তাসকিনের দুই ওভারে ধাওয়ান এবং রোহিত শর্মা ২১ রান তোলেন।সাকিব বল করতে আসেন তেরতম ওভারে। শিখর ধাওয়ানের মহা আকাংক্ষিত উইকেটি তুলে নেন মাশরাফি।মাশরাফি তার প্রথম স্পেলে দুর্দান্ত বোলিং করেন। আট ওভার শেষে ২৯ রানে ১ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ উদযাপন করার এই একটাই সুযোগ পায়। ধাওয়ান আউট হওয়ার পর শুরু হয়ে রোহিত শর্মা ও ভিরাট কোহলি শো। দুই ব্যাটসম্যানের নিখুঁত ব্যাটিং বাংলাদেশি বোলারদের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয়।তাদের অসাধারণ ব্যাটিং প্রদর্শনী মুগ্ধ করে সবাইকে। ভিরাটের কভার ড্রাইভ, ফ্লিকের টাইমিং  ও প্লেসমেন্ট অনন্য। এদিকে ওয়ানডে ক্রিকেটার নাম্বার ওয়ান ব্যাটসম্যান ভিরাট কোহলি অন্য দিকে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির মালিক রোহিত শর্মা। রোহিত শর্মা তার ক্যারিয়ারের এগারোতম সেঞ্চুরি হাঁকান।দুজন মিলে বাংলাদেশি বোলার কোন সুযোগই দেননি। দশ ওভার আর নয় উইকেট রেখে জিতে যায় ভারত।

Virat Rohit

 বাংলাদেশ প্রথম বারের মত একটা আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনাল খেলল। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য এবং সমর্থকদের জন্য বিশাল ব্যাপার। সেমি-ফাইনালের ফল আশানুরূপ হয়েনি এটা সত্যি।ভারতের এ ধরণের ম্যাচ খেলার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। সে তুলনাই বাংলাদেশ দল এরকম অভিজ্ঞতা খুবই কম। বাংলাদেশ হারের কারণ খুজলে হয়ত অনেক কারণ বের হবে। ভারত চমৎকার খেলে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে।