বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব : চমক,স্বস্তি ও অঘটন
পোস্টটি ১৩৮৪৫ বার পঠিত হয়েছেবিশ্বকাপ বাছাইপর্ব প্রায় শেষের দিকে। গত কয়েকদিন দর্শক অনেক উথান পতনের সাক্ষী হল। একদিকে সালাহর অন্তিম মুহুর্তের গোলে মিশর ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করল, মেসি দুর্দান্ত হ্যট্রিক করে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে নিয়ে গেল অন্যদিকে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদানায় পুড়ল হল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও চিলি।
যেহেতু বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষের দিকের খেলা সেহুতু জানাই ছিল অনেক ম্যাচে বাড়তি উত্তেজনা থাকবে। ফুটবলপ্রেমীরা নাটকিয় কিছু ম্যাচ নিশচয়ই আশা করেছিলেন। আর কোন দলের না হলেও বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা সমর্থকরা ভালই উৎকন্ঠায় ছিলেন। চিরশত্রু ব্রাজিল যেখানে সেই কবে বিশ্বকাপ যাত্রা নিশ্চিন্ত করে বসে আছে সেখানে আর্জেন্টিনার কি না এই অবস্থা।
হল্যান্ডের দুর্দশা চলছেই। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের শুরু থেকেই তারা ক্রমাগত হোঁচট খেতে থাকে। শেষমেশ সমীকরণ দাড়ায় যে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন বাঁচাতে হলে সুইডেনের সাথে সাত গোলের বাধ্যবানে জিততে হবে। হল্যান্ড দলের পাড় ভক্ত ছাড়া কেউই আশা করেনি এমনি কিছু হবে। অবশ্য প্রথমার্ধে রোবেনের দুই গোলের পর কিছুটা আশা জাগলেও হল্যান্ড সুইডেনের জালে আরও পাঁচ বার বল জড়াতে ব্যর্থ হয়।
ভিদাল,সানচেজ, ব্রাভোর মত প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকা সত্বেও কোপা আমেরিকা বিজয়ী চিলি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয়। হল্যান্ডের বিশ্বকাপ না খেলা নিশ্চিন্ত হওয়ার পর রোবেন অবসর গ্রহন করেন আর চিলির ব্যর্থতার পর অবসর নেন ভিদাল। সানচেজ, ব্রাভোদের হয়ত আর বিশ্বকাপ খেলা নাও হতে পারে। ২০২২ সালে বয়স তো আর কম হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে না পারায় দেশটির ফুটবল দল, কোচ ও বোর্ড তীব্র সমালোচনার মুখে পরেছে। ১৯৮৪ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপ খেলবে না যুক্তরাষ্ট্র। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সাথে ২-১ গোলে হেরে তাদের বিশ্বকাপ যাওয়া হল না। যেখানে ড্র করলেই গত সেখানে তারা এমন দলের কাছে হেরে বসল। যুদধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন ভঙ্গ হল বুড়ো টিম কাহিলের গোলে। এই গোলই অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপের আশা টিকিয়ে রেখেছে।
রোবেন, ভিদাল, ডনাভোনকে ছাড়া হয়ত বিশ্বকাপ একটু রং হারাবে কিন্তু যদি মেসি বিশ্বকাপ না খেলতেন তখন বিশ্বকাপ বিশ্বকাপ মনে হত না। বিশ্বকাপ হবে কিন্তু আর্জেন্টিনা থাকবে এমন অবিশ্বাস্য ব্যাপার প্রায় ঘটেই যাচ্ছিল। আর্জেন্টিনা - ইকুয়েডর ম্যাচের প্রথমেই গোল করে বসে ইকুয়েডর। কিন্তু এরপর পুরো ম্যাচ জুড়ে শুধু মেসি। মেসি বলতে গেলে একাই আর্জেন্টিনাক্ বিশ্বকাপে নিয়ে গেলেন।
এশিয়ান মেসি সালাহ হ্যট্রিক করেননি কিন্তু তাতে তার কীর্তির গুরুত্ব একটুও কমেনি। ৯৪তম মিনিটে গোল করে পুরো মিশরকে আনন্দ ভাসিয়েছেন। বিতর্কিত এক গোলে প্রথম বারের মত বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করে পানামা। জয় উৎযাপনের জন্য ম্যাচের পরের দিন সরকারি ছুটি ঘোষনা করা হয়।
এবার প্লে অফের পালা। এরপরই নিশ্চিত হবে ২০১৮ বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করবে কোন বত্রিশটি দল।
- 0 মন্তব্য