• ক্রিকেট

রানা, তোমার জন্য...

পোস্টটি ১০১৩৩ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

১৬ মার্চ, ২০০৭। পরের সপ্তাহে সমাজ, গণিত সহ খুব সম্ভবত চারটি ক্লাস টেস্ট। ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষাও আসন্ন। কিন্তু স্কুলের পড়া, কোচিংয়ের দৌঁড়াদৌঁড়ি, বাবা-মা’র পড়তে বসার তাগাদা- খেলাধূলার খোঁজখবর রাখা থেকে দূরে রাখতে পারত না কোনোটিই। দিনটা ছিল শুক্রবার। ঠিক কী কারণে মনে নেই, তবে খবরটা কানে আসতে একটু দেরিই হল। প্রথমবার শুনলাম এলাকার বন্ধুদের কাছে, সন্ধ্যায় ছাদে ক্রিকেট খেলে ফেরার সময়। হতবিহবল, কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় নামাজ সেরেই চালু করলাম টিভি। এবার আর সন্দেহের অবকাশ নেই। মঞ্জুরুল ইসলাম রানা আর নেই। স্মিত হাসির, শ্যাম বর্ণের বাঁ-হাতি সেই অলরাউন্ডার আমাদের ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। সেই চমৎকার ঘুর্ণি, সেই মন ছুঁয়ে যাওয়া হাসি আর দেখব না কোনোদিন- কোনোভাবেই এমনটা মানতে প্রস্তুত ছিলাম না ১২ বছর বয়সী আমি।

দল থেকে বাদ পড়েছিলেন কেনিয়া সিরিজে ব্যর্থতার পরই। ওদিকে সাকিব আল হাসানও নাম কুড়াচ্ছিলেন বেশ। বিশ্বকাপটা খেলা হল না তাই। প্রায়ই প্রিয় বন্ধু মাশরাফিকে ফোন করতেন, “দলে আবার সু্যোগ পাব তো?” মাশরাফিও অভয় দিয়ে যেতেন, “অবশ্যই। প্র্যাকটিসে মনোযোগী হ”। বাদ পড়লেও একেবারেই যে ফর্ম হারিয়ে ফেলেছিলেন- এমনটা নয় মোটেও। জাতীয় ক্রিকেট লিগে ছিলেন খুলনার অধিনায়ক। দুর্ঘটনার দিনও খুলনার স্থানীয় এক ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হলেন। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ সেলিম প্রস্তাব দিলেন, আব্বাস হোটেলের ‘চুঁই ঝাল’ চেখে আসতে। এমনিতেই বাঙ্গালীদের অন্যতম প্রিয় খাবার, তার ওপর খুলনার!

লোভটা সামলাতে পারলেন না রানা। সাথে ছিলেন আরেক ক্রিকেটার বন্ধু সাজ্জাদুল ইসলাম সেতু। প্রথমে দুজন দুই মোটরসাইকেলে থাকলেও পথিমধ্যে সেতুর পেছনেই চড়ে বসলেন রানা। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! পথিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে এক মাইক্রোবাস, পরে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কা খেল বাইকটি। চুঁই ঝাল উপভোগের আনন্দ মূহূর্তেই ছিনিয়ে নিল বাংলার ক্রিকেটের দুই উজ্জ্বল প্রদীপ। রানা বনে গেলেন সর্বকনিষ্ঠ প্রয়াত টেস্ট ক্রিকেটার। এমন ‘রেকর্ড’, যা নিজের করে নিতে হয়তবা কেউ চাইবে না কখনোই...

দল থেকে বাদ পড়লেও স্বাভাবিকভাবেই যোগাযোগ ছিল সবার সাথেই। বিশ্বকাপ সামনে রেখে ক্যারিবিয়ানের উদ্দেশ্যে টাইগাররা দেশত্যাগের আগে অধিনায়কের হাবিবুল বাশার সুমনের কাছে আবদার করেছিলেন রানা, “ভাই, একটা ম্যাচ জেতা লাগবে কিন্তু”। রানার মৃত্যুসংবাদ যখন হাজার মাইল দূরে থাকা বাংলাদেশ দলের কাছে পৌঁছল, তখন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না অনেকেই। তার ওপর আবার পরদিন খেলা টেন্ডুলকার, গাঙ্গুলীদের ভারতের বিপক্ষে। তখনকার শক্তিমত্তার বিচারে যাদের চেয়ে আমরা আলকোবর্ষ পিছিয়ে। জয়ের চিন্তাও হয়ত মাথায় আসেনি অনেকেরই। বন্ধু হারানোর দুঃখে তখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত টাইগাররা।

কিন্তু ‘জেন্টেলম্যানস গেম’-এ যে আবেগের জায়গা নেই! যতটা পারলেন, নিজেদের সামলে নিলেন। টিম মিটিং-এ হয়ত ধরা গলায়, ঠোঁট কামড়ে অশ্রু আটকে প্রতিজ্ঞা করলেন, রানার জন্য জিততেই হবে কাল। সবচেয়ে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞাটা করলেন মাশরাফি। অনূর্ধ্ব-১৭ তে খেলার সময় থেকেই সখ্যতা দুজনের। ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের বললেন, “উইকেট যদি ভেজা থাকে, আর আমরা প্রথমে বোলিং করি, তাহলে ওদের ধরে দিবানি”। এখান থেকেই উৎপত্তি ‘ম্যাশ-এর বিখ্যাত উক্তিটির। যে উক্তি রক্ত গরম করে দেয়, যে উক্তি আওড়িয়ে আমরা পাই দুর্গমকে জয় করার অনুপ্রেরণা।

ম্যাচ শুরু হল বাংলাদেশ সময় খুব সম্ভবত রাত ৮টার দিক। ম্যাচের দিন সকালে মাশরাফি টের পেলেন, হাড় কাঁপিয়ে জ্বর এসেছে। থার্মোমিটারে দেখলেন, ১০৩ ফাহরেনহাইট। একে ‘ভাই’ হারানোর বেদনা, তার ওপর জ্বর। ম্যাশের কাঁধে হাত রাখলেন বাশার, “পারবি?” একবারের জন্য ইতস্তত বোধ করলেন না নড়াইল এক্সপ্রেস, “না পারলেও খেলতি হবে সুমন ভাই। রানার জন্য খেলতি হবে”। রানার প্রতি ভালবাসা এবং শোককে শক্তিতে পরিণত করার কল্যাণেই সেদিন অগ্নিশর্মা ধারণ করলেন তিনি।

ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই গুঁড়িয়ে দিলেন শেবাগের স্ট্যাম্প। কলার উঁচু করা উদযাপনে তখন মাতোয়ারা ১৬ কোটি বাঙ্গালী। উথাপ্পাকেও ফেরালেন প্রথম ১০ ওভারের মাঝেই। তখনও হয়ত এমন স্মরণীয় কিছুর স্বপ্নে বুঁদ হয়নি বাঙ্গালী। কিন্তু স্বপ্ন ঠিকই দানা বাঁধতে শুরু করল, যখন রফিক-রাজ্জাকের স্পিনজাদুতে সাজঘরে ফিরলেন টেন্ডুলকার এবং দ্রাবিড়। স্কোরবোর্ডে তখন ৭২ রানে ৪ উইকেট ভারতের। কিন্তু শুরু থেকেই ‘পথের কাঁটা’ হয়ে উঠা গাঙ্গুলীকে অপর প্রান্ত থেকে উপযুক্ত সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছিলেন তরুণ যুবরাজ সিং।

কিন্তু সেদিন কোন কিছুই যেন দমাতে পারত না বাংলাদেশকে। ৪৩ ওভার এবং ৪৪ ওভারে আবারও সেই রাজ্জাক-রফিক জুটিতে মাত্র পাঁচ বলের মাঝে ফিরে গেলেন গাঙ্গুলী এবং যুবরাজ। ভারতীয় ব্যাটিং-এর লেজটা কেটে দিতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি টাইগারদের। হরভজন সিং এবং ধোনিকে বিদায় করে তিন উইকেট করে নিলেন রাজ্জাক এবং রফিক। মাঝপথে ভারতীয়দের টেনে ধরলেও শুরুটা করেছিলেন মাশরাফিই। শেষটাও করলেন তিনিই। অজিত আগারকার এবং মুনাফ প্যাটেলকে ফিরিয়ে ১৯১ রানেই ‘প্যাকেট’ ভারত। ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মূল হন্তারকের ভূমিকায় থাকলেন নড়াইল এক্সপ্রেসই। উপর থেকে হয়ত তখন ‘পাগলা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্সে গর্বে বুক ফুলিয়ে হাসছিলেন রানা।

এবার জবাবের পালা। ভারত বধ হয়েছে আগেও। কিন্তু বিশ্বকাপের মত অঙ্গনে এমন কিছুর মাহাত্ম্য অবশ্যই কয়েকশ’ গুণ বেশি। শ্রদ্ধাভাজন রানা ভাইকে বিখ্যাত এক জয় উপহার দেওয়ার গুরুদায়িত্বটা কাঁধে নিলেন সাকিব-তামিম-মুশফিকরাই, কৈশোরের গন্ধটা যাদের গায়ে তখনও দিব্যি। শুরু থেকেই আক্রম্নাত্মক ভঙ্গিতে খেলছিলেন তামিম। ৪র্থ ওভারে মাত্র ২ রান করে শাহরিয়ার নাফীস ফিরলেও মনোবল হারাননি ১৭ বছর বয়সী এই ওপেনার। জহির খানের একটি বল সজোরে হেলমেটে আঘাত করে তার। ভারতীয় পেসারের তাচ্ছিল্যসূচক হাসি যেন তরুণ রক্ত আরও গরম করে দেয় তামিমের।

পরের বলেই ‘ডাউন দ্যা ট্র্যাক’-এ এসে লং অনের ওপর দিয়ে মারেন এক দর্শনীয় ছক্কা, ১১ বছর পরও যে ভিডিও এখনও ঘুরে বেড়ায় হাজারও ক্রিকেটপ্রেমীর ইউটিউবের অনুসন্ধান তালিকায়। যে ছবি এখনও ঘুরে ফেরে ফেসবুক, টুইটারে। জহির, আগারকারের পেস বা হরভজন, যুবরাজদের স্পিন- কোনো কিছুই কাবু করতে পারেনি বাংলার দামাল তরুণদের। ৫১ রানে তামিম ফেরার ওভার দুয়েক পর আউট হয়ে যান আফতাবও। ঈষাণকোণে জমতে থাকা শঙ্কার কালোমেঘ তখন কেবল দেখা দিচ্ছে আবছা আবছা। তখনই তারুণ্যের জয়গান দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরের কাছাকাছি নিয়ে যান সাকিব-মুশফিক। ৮৪ রানের পার্টনারশিপে তামিমের মতই হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন দুজনই। জয় থেকে মাত্র ২৮ রান দূরে থাকতে শেবাগের বলে স্ট্যাম্পড হয়ে ফিরে যান সাকিব।

কিন্তু মুশফিক টিকে ছিলেন অতন্দ্র প্রহরীর মত। ১০৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ধৈর্যের এক অনন্য উদাহরণই স্থাপন করেন ‘মুশি’। মুনাফ প্যাটেলের বলে দৃষ্টিনন্দন এক কাভার ড্রাইভ মেরেই দু’হাত প্রসারিত করলেন মুশফিক, আশরাফুল। মাঠে ছুটে আসলেন দলের অন্যরা। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সমগ্র বিশ্ব শুনল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গর্জন। সাবাস বাংলাদেশ! এই পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়! মুশফিকের সেই বাউন্ডারির পর মাঝরাতের নিশুতি নিরবতাকে তোয়াক্কা না করে বুনো উল্লাসে মেতেছিল চারদিকের মানুষেরা

স্বভাবত কাঠখোট্টা, গম্ভীর গোছের বাবা-মা, চাচা, মামারাও সেদিন গাম্ভীর্যের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। লাল-সবুজের ক্রিকেট সেদিন একসুতোয় গাঁথল খেলা পাগল নাতি এবং অশীতিপর দাদাকে। ম্যাচ শেষে বাশারের কন্ঠে ঝড়ল গর্বের ধ্বনি, “আজকের জয়টা আমরা রানাকে উৎসর্গ করতে চাই”। ওপর থেকে তখন সতীর্থদের উদযাপনে শামিল হচ্ছিলেন আরও একজন। ক্ষণস্থায়ী ক্যারিয়ারে খেলেছেন মোটে ৬ টেস্ট এবং গোটা পঁচিশেক ওয়ানডে। পরিসংখ্যান দিয়ে রানাকে বিচার করা বোকামি। এই পরিসংখ্যান থেকে কখনোই বোঝা যাবে না, নিজেদের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে ২-০ তে পিছিয়ে পড়েও কিভাবে রানাতে সওয়ার হয়ে ৩-২ এ জিতেছিল টাইগাররা। সে সময় বাংলাদেশের কোচ ছিলেন ডেভ ওয়াটমোর।

সাবেক এই শিষ্যের ব্যাপারে বলতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তিনি, “রানা দারুণ একজন ক্রিকেটার। প্রথম দেখাতেই ওকে ভাল লেগে যায়, জাতীয় দলেও সুযোগ দিয়ে দিই। খেলার পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও সে দারুণ। ড্রেসিংরুমে ওর সমকক্ষ মেলা ভার। সর্বক্ষণ হাসি লেগেই থাকত ওর মুখে। সবসময়ই সে আমার খুব আপন একজন হয়ে থাকবে”। ২০১৬ সালে জিম্বাবুয়ের হয়ে যখন এদেশে এসেছিলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও ছুটে গিয়েছিলেন খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের কোল ঘেঁষা রানার বাড়িতে। এই বাড়ির দোতলাতে রানার রুম এখনও আছে সেভাবেই। গোলাপি আভার রুমে বিছানা রয়েছে দু’খানা। কাঠের জানালাটির একপাশে রাখা অটোগ্রাফ করা একটি ব্যাট। বাংলাদেশের জার্সি, প্যাড সবই এখনও শোভা পাচ্ছে রুমটিতে। এছাড়াও রানার প্রথম আন্তর্জাতিক ক্যাপ, হেলমেটও আছে স্বমহিমায়।

ধূলো যাতে না পড়ে, সেজন্য যত্ন করে ছেলের জিনিসপত্র প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রেখেছেন রানার মা। ছেলের ব্যাপারে বলতে গিয়ে স্বভাবতই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রানার মা, “আমি কেন বেঁচে আছি  এখনও জানি না। ও মারা যাওয়ার দু’বছর পরই ক্যান্সারে ওর বাবাও মারা গেলেন। মাশরাফি প্রায়ই আসে আমার সাথে গল্প-গুজব করতে। নিজের মা-র মতই শ্রদ্ধা করে আমাকে। ২০১২ সালে এই মাঠে প্রথম টেস্টের আগে বিসিবির প্রেসিডেন্টও এসেছিলেন আমার খোঁজখবর নিতে এবং কিছু লাগবে কি না এসব জানতে। রানার নামে স্টেডিয়ামে একটি স্ট্যান্ড চেয়েছিলাম আমি। দু’দিনের মধ্যে সেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে শোভা পাচ্ছিল মঞ্জুরুল ইসলাম রানা স্ট্যান্ড। বোর্ডের এমন আচরণে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ”।

নিকষ কালো অন্ধকার না হলে ঘুমোতে পারতেন না রানা। এ বিষয়টি নিয়ে তাকে প্রায়ই বিদ্রূপ করতেন সতীর্থরা। এমনকি হোটেল লবির ক্ষীণ আলো এলেও ঘুম হত না রানার। খুলনায় সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর কবরে সেই গভীর অন্ধকারেই ঘুমোচ্ছেন রানা। তার এই অকাল মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি এক দারুণ সম্ভবনাময় অলরাউন্ডারকে, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে যিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন আইসিসির উদীয়মান ক্রিকেটারদের তালিকায়। মাঝে কেটে গেছে প্রায় ১১ বছর।

রানার মৃত্যুবার্ষিকীতে খেলা ভারতের বিপক্ষে টেন্ডুলকারের শততম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি ম্যাচ, বা আফগানিতস্তানের বিপক্ষে ‘১৪-এর টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ- কোনোটিই হারেনি টাইগাররা। কিন্তু সব ছাপিয়ে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে পোর্ট অফ স্পেনের সেই জয়। যেদিন বিশ্বকাপে প্রথমবার আমাদের গর্জন শুনেছিল বিশ্ব। যে জয়ে আনন্দের মাঝে ছিল আপনজন হারানোর তীব্র বিষাদ। যে ম্যাচের শিরোনাম হয়ত হবে ‘আনন্দ বেদনার কাব্য’। যেদিন ১১ তরুণ টাইগারের ইতিহাস রচনার সময় উপস্থিত ছিলেন আরও একজন; যার হাসি এখনও আমাদের মন কেড়ে নেয়, যার বদনখানি এখনও চোখজোড়া করে দেয় ঝাপসা। যে জয়টা কেবলই ছিল রানার জন্য, কেবলই রানার জন্য...