• ফুটবল

বাংলাদেশ ফুটবল: ফুটবলের উন্নয়নে আমার কিছু পরিকল্পনা

পোস্টটি ২০৬৭ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

আমার এ লেখা, একজন সাধারণ দর্শকের কাতারে থেকে, ফুটবলের প্রতি নিখাদ ভালোবাসা থেকে! বাংলাদেশ ফুটবলের উন্নয়নে আমার ছোট্ট চিন্তাভাবনা থেকে একটা প্ল্যানিং! জানি, অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, অনেক সংকট আছে, এরপরেও সব সীমাবদ্ধতা ও সংকট কে উর্ধ্বে রেখে আমার এই চিন্তাভাবনা! কমেন্টে আপনাদের মতামত জানাবেন অবশ্যই! 

 

♦ ১২/১৬ বছরের একটা ভিশন নিয়ে আমরা এগুবো, যেখানে ১৬ বছর পরে আমাদের লক্ষ্য থাকবে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ কিংবা বাছাইয়ে সর্বোচ্চ সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়া। সুনির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে গেলে ঠিক ১৬ বছর পরেই বিশ্বকাপে অংশ না নিতে পারলেও, নিঃসন্দেহে একটা কাঠামো দাঁড়িয়ে যাবে দেশের ফুটবলে, যেখান থেকে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন হয়ত খুব বেশি দূরে থাকবেনা।

 

♦ আমার পরিকল্পনার শুরু বয়সভিত্তিক দল কেন্দ্রিক, যেখানে আমরা ৩ টি দল নিয়ে এগুবো। 

* অনুর্ধ্ব ১২ (ক্লাস ৫)

* অনুর্ধ্ব ১৬ (ক্লাস ১০)

* অনুর্ধ্ব ২০ 

 

♦ সারাদেশের সকল ইউনিয়ন এবং পৌরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয় বা সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে প্রতিবছর "ইউনিয়ন/পৌরসভা অ-১২ আন্ত স্কুল" টুনার্মেন্ট আয়োজন করা। এখান থেকে সেরা স্কুলগুলো নিয়ে "উপজেলা অ-১২ আন্ত স্কুল" টুনার্মেন্ট আয়োজন করা। এখান থেকে সেরা স্কুলগুলো নিয়ে "জেলা অ-১২ আন্ত স্কুল" টুনার্মেন্ট আয়োজন করা। পর্যায়ক্রমে বিভাগ পর্যায়ে এবং দেশের সকল বিভাগের সেরা দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি টুনার্মেন্ট আয়োজন করা।

 

♦ একইভাবে হাইস্কুল গুলোকে নিয়ে প্রতিবছর অ-১৬, কলেজগুলোকে নিয়ে অ-২০ টুনার্মেন্ট আয়োজন করা।

 

♦ সারা দেশের সকল জেলা পর্যায়ে বা থানা পর্যায়ে যত ফুটবল ক্লাব আছে, এদেরকে অর্থায়ন করতে হবে, ফুটবলে সংশ্লিষ্টতা বাড়াতে হবে। এবং ক্লাব গুলোকে বা নতুন নতুন ক্লাবকে কিছু নিয়মাবলীতে বাফুফের আন্ডারে নিজ জেলা বরাত দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে, এবং নিয়মিত টুনার্মেন্টে অংশ নিতে হবে।

 

♦ সারাদেশে বয়সভিত্তিক যে টুনার্মেন্ট গুলো আয়োজন করা হলো, এই টুনার্মেন্ট গুলো থেকেই ক্লাব গুলো খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তি করাবে। প্রতিটি রেজিস্টার্ড ক্লাবের ৩ টি করে বয়সভিত্তিক দল থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে (১২, ১৬, ২০)।

 

♦ অতঃপর প্রতি জেলায় ক্লাবগুলোকে নিয়ে অ-১২, অ-১৬, অ-২০ লীগ আয়োজন করতে হবে। জেলা লীগ শেষে উত্তীর্ণ বিভাগ পর্যায়ে, বিভাগ পর্যায়ের লীগ শেষে জাতীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণ করণ। এইভাবে প্রতিবছর টুনার্মেন্টগুলো পরিচালনা করতে হবে।

 

♦ এক্ষেত্রে সময়সূচি একটা বড় বাধা হতে পারে, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করলে তা দূর করা সম্ভব।

 

♦ বয়সভিত্তিক দলের বাইরে আসা যাক। ইউনিয়ন বা পৌরসভা পর্যায়ের প্রতিটি গ্রাম বা মহল্লা নিয়ে নিয়মিত একটি ফুটবল টুনার্মেন্ট আয়োজন করতে হবে। পর্যায়ক্রমে যা থানা পর্যায়ে এবং জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে।

 

♦ ক্লাব গুলো পেশাদার খেলোয়াড়দের পাশাপাশি এই টুনার্মেন্ট গুলো থেকে খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তি করবে। ক্লাব গুলোকে নিয়ে জেলা পর্যায়ে নিয়মিত লীগ আয়োজন করতে হবে।

 

♦ জেলা লীগ আয়োজন করতে হবে। যেখানে কয়েকটি স্তরে দেশের সকল জেলা নিয়ে লীগ আয়োজন করা যেতে পারে। 

 

♦ এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ক্লাবগুলোকে নিয়ে বর্তমানে যে টুনার্মেন্ট গুলো পরিচালনা করা হয়, সেগুলো যথাক্রমে চলতে থাকবে। ক্লাব ফুটবল কে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে হবে।

 

♦ প্রতিবছর অ-১২/১৬/২০ ও জেলা লীগ থেকে বাফুফে ৫০ জন করে মোট ২০০ জনকে আলাদা করে বাছাই করতে পারে। যাদেরকে বড় একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে।

 

♦ নিয়মিত বাংলাদেশ জাতীয় দল এবং বয়সভিত্তিক দলের প্রীতিম্যাচের আয়োজন করতে হবে।

 

♦ আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে সাফে নিয়মিত ভালো করা, তারপরে এশিয়ায় নিজেদের একটা পোক্ত জায়গা করে নেয়া, তারপরে বিশ্ব দরবারে নিজেদেরকে চেনানো।

 

এই ছিলো একটি বৃহৎ পরিকল্পনার মুল অংশ গুলো। এছাড়াও দেশের মানুষকে ফুটবলে সংশ্লিষ্ট করতে এবং ফুটবলমুখী করতে যা যা সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব, সময়ের সাথে সাথে তা গ্রহণ করতে হবে। 

 

জয় বাংলা!

সুদিন আসবেই!