• ক্রিকেট

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ: সাকিব পর্ব।

পোস্টটি ৭১৬২ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
ক্রিকেট যদি উপন্যাস হত, সাকিব আল হাসান নিশ্চয় তার নায়ক হতেন। কিন্তু না, ক্রিকেট কাব্য বা উপন্যাস বুঝে না। ক্রিকেট বুঝে পরিসংখ্যান। আর সাকিব আল হাসান হলেন সেই ক্রিকেটার, যিনি ক্রিকেটের এই পরিসংখ্যান কে করেছেন সমৃদ্ধ, করে যাচ্ছেন বলা ভাল। অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন বন্ধুদের প্রিয় ময়না। তার বাবা খুলনা বিভাগীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলতেন, তার এক কাজিন তো বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়েই ফুটবল খেলতেন। এমন ফুটবল প্রেমী পরিবারে বড় হয়েও সাকিব আল হাসান ক্রিকেটে নিজ প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন, বিস্মিত করেছেন ক্রিকেট বিশ্ব কে নিজ প্রতিভা গুণে। বাংলাদেশ নামক ছোট, অনুন্নত, উন্নত বিশ্বের কাছে অপরিচিত দেশ কে তিনি করেছেন পরিচিত ,গর্বিত। বাংলাদেশ দলের হয়ে উঠেছেন মধ্যমণি, "দ্য ওয়ান ম্যান আর্মি"। সাকিবের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে। শুরুর দিকে সাকিব আল হাসান দলে ব্যাটসম্যান হিসেবেই মূল ভূমিকা পালন করতেন। একজন জেনুইন অলরাউন্ডার হয়েও সাকিব ২০০৮ সাল পর্যন্ত ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। সে বছর নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথমবার কোচ জিমি সিডন্স তাকে স্পেশালিষ্ট বোলার হিসেবে টেস্ট দলে খেলায়। আর সাকিব তাতে শতভাগ সফলও হোন। ৩৭ রানে ৭ উইকেট নিয়ে সাকিব তার সামর্থ্যের যথার্থ প্রমাণ দেন। এটাই এখন অবধি সাকিবের টেস্টে সেরা বোলিং ফিগার। ক্রিকেট খেলার প্রতি সাকিবের আগ্রহ দেখে এবং তার প্রতিভা দেখে তার জেলার স্থানীয় এক আম্পায়ার প্রথম তাকে অবজারভ করেন। আর তার অবজারভ যে ভুল ছিল না তা তো আজকের সাকিব কে দেখলেই বলা চলে। শুরুতে সাকিব কিন্তু পেস বোলিং করতেন। পরে জাতীয় পর্যায়ে খেলা শুরু করলে তিনি স্পিন বোলিং প্রাক্টিস শুরু করেন। আর এই স্পিন দিয়েই সাকিব ঘায়েল করেছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের। গড়েছেন রেকর্ডের পর রেকর্ড। পরে হয়ে উঠেছেন ভক্তদের "রেকর্ড আল হাসান"। সাকিব আল হাসান হলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্র‍্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ দল অনেক উন্নত করেছে ক্রিকেটে। নিজেদের স্থান বিশ্ব সেরাদের কাতারে নিয়ে গেছে পারফর্মেন্স দিয়ে। বাংলাদেশ দলেও আবির্ভাব হয়েছে বিশ্বমানের তারকা ক্রিকেটারের, নিয়মিত পারফর্মারের। কিন্তু এর আগে, বেশ কিছু বছর ছিল, যখন অন্যান্য দেশের ক্রীড়ামোদী মানুষ বাংলাদেশ ক্রিকেট বলতে সাকিব আল হাসানকেই চিনতো, বুঝতো। বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিতির ক্ষেত্রেও সাকিব মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সে সময়টায়। সাকিবের পরিচিতি এবং খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। ব্যাটিং আর বোলিং জাদু দিয়ে সাকিব মোহিত করেছিলেন বিশ্বের অগণিত ক্রিকেট প্রেমীকে। ক্রিকেট রেকর্ডের খেলা। প্রতি টি বলে, ওভারে ম্যাচে কত শত নতুন রেকর্ডের জন্ম হয় ক্রিকেটে। আবার অন্য ম্যাচে পুরানো রেকর্ড ভেঙ্গে নিত্য নতুন রেকর্ড হচ্ছে ক্রিকেটে। ক্রিকেটে রেকর্ড করাকে সাকিব যেন ডালভাত করে ফেলেছেন। তিনি যখনই খেলতে নামেন, সেটা যে ফরমেটেই হোক না কেন, নতুন কোনো রেকর্ড উকি মেরে বসে থাকে তার জন্য। তার ভাণ্ডারে যুক্ত হওয়ার আশায়। রেকর্ড গড়তে গড়তে সাকিব এখন রেকর্ডবয় খেতাব পেয়ে গেছেন। ক্রিকেটের রেকর্ডের পাতা যেমন সমৃদ্ধ করেছেন ঠিক তেমনি বিশ্ব ক্রিকেটের রথি মহারথীদের সাথেও নিজের নাম বসিয়েছেন তিনি। অনেক ক্ষেত্রে ছাড়িয়ে গেছেন বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক লিজেন্ডকেই। ক্রিকেট খেলায় তিনটি বিভাগ থাকে, বোলিং, ব্যাটিং ও ফিল্ডিং। কেউ বোলিং ক্যারিশমা দিয়ে নিজের জাত চিনিয়ে দলে অন্তর্ভুক্ত হোন, আবার কেউ কেউ ব্যাটিং প্রতিভা দিয়ে দলে ঢুকে যায়। বিশ্ব ক্রিকেটের এমন অনেক তারকা ক্রিকেটার আছেন যারা শুধু ফিল্ডিং দিয়েই দলে যেমন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ঠিক তেমনি বিশ্ব জুড়ে খ্যাতিও পেয়েছেন। কিন্তু সাকিব এমন একজন প্লেয়ার, যিনি একই সাথে মাঠে ক্রিকেটের তিন বিভাগেই সমান ভূমিকা পালন করতে পারদর্শী। ব্যাটিং বোলিং দিয়ে তো সাকিব নিজেকে প্রমাণ করেছেনই, হয়েছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডারও, ফিল্ডিংয়েও সাকিব আল হাসান দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেন মাঠে। বিশ্ব ক্রিকেটে সাকিবের মতো ক্রিকেটার পাওয়া দুষ্করই বটে। ৩২ বছরের সাকিব আল হাসান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলে চলেছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। দীর্ঘ এই পথচলায় সাকিব নিজের নামের পাশে অসংখ্য কীর্তি গাথা লিখেছেন, লিখে চলেছেন। রেকর্ডে রেকর্ডে ছেয়ে গেছে তার ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার। এখন অবধি ১৯৮টি ওডিয়াই ম্যাচ খেলেছেন সাকিব আল হাসান। ১৮৬ ইনিংসে ব্যাট করে ৩৫.৫১ গড়ে রান করেছেন ৫৭১৭ রান। সেঞ্চুরি করেছেন ৭টি, হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৪২ টি। তবে সাকিবের সেঞ্চুরি আরো অনেক বেশি হতে পারতো। ৯০ এর ঘরে অসংখ্য বার সাকিব আত্মবলিদান দিয়ে সেঞ্চুরির মাইলফলক ছোঁয়া হয়নি তার অসংখ্যবার। ১৯৮ টি ওডিয়াই খেলে ১৯৫ ইনিংস বল করে সাকিব ২৪৯টি উইকেট শিকার করেছেন। মোট ১ লাখ ৭৩ টি বল করে সাকিব ওডিয়াইতে রান দিয়েছেন ৭ হাজার ৪শ ৫৪। ওডিয়াইতে সাকিবের ইকোনোমিও ঈর্ষান্বিত করবে যে কাউকে। ৪.৪৪ তার ওডিয়াই ইকোনোমি। তামিমের পর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব দেশের হয়ে ২য় সর্বোচ্চ রানের মালিক। বোলিংয়েও উইকেট শিকারির তালিকায় সাকিব মাশরাফির পর ২য় অবস্থানে আছেন। বর্তমান বিশ্বে সাকিবের মতো এমন ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ অলরাউন্ডার একটিও নেই। তিনি অনেক দিন যাবত বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সাকিব আল হাসান ক্রিকেটের তিন ফরমেটে একই সাথে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়ার অনন্য গৌরব অর্জন করেছিলেন, যা বিশ্ব ক্রিকেটের কোনো রথী মহারথীই করতে সামর্থ্য হননি। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সাকিবের পথচলা শুরু ২০০৭ বিশ্বকাপে। এরপর সব গুলো বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন বাংলার ক্রিকেটের প্রাণ সাকিব আল হাসান। মোট ৩টি বিশ্বকাপ খেলে সাকিব দেশের হয়ে সর্বাধিক রান ও উইকেটের মালিক। বিশ্বকাপে ২১ ম্যাচে অংশ নিয়ে সাকিব ৩০ গড়ে রান করেছেন ৫৪০। সর্বোচ্চ ৬৩ রান। ফিফটি রয়েছে তার ৫টি। সমান সংখ্যক ম্যাচে বল হাতে সাকিব দেশের হয়ে সর্বাধিক ২৩টি উইকেট শিকার করেছেন। বেস্ট বোলিং ফিগার ৫৫ রানে ৪ উইকেট। বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরই সাকিব শুরু করেছেন ১ম ম্যাচে ফিফটি দিয়ে। আসন্ন আসরেও তেমনটা হবে বলেই প্রত্যাশা করছি। বিশ্বকাপে সাকিবের দুটি ব্যক্তিগত অপূর্ণতা রয়ে গেছে, সাকিবের মতো একজন গ্রেট খেলোয়াড়ের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, সাকিব আসন্ন বিশ্বকাপেই এসব অপূর্ণতা কে পূর্ণতা দান করবে। বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যান সাকিবের কোনো সেঞ্চুরি ইনিংস নেই। আইসিসির সর্বোচ্চ মর্যদার আসরে সাকিবের সেঞ্চুরি থাকলে সেটা অবশ্যই বিশেষ কিছু হবে সাকিব ও তার অগণিত ভক্তকুলের জন্য। তবে আইসিসি ইভেন্টে সাকিবের সেঞ্চুরি রয়েছে। সেটা অবশ্যই সাকিবের জন্য প্লাস পয়েন্ট। আরো আশার বিষয় সাকিব সেঞ্চুরি টি করেছিলেন ২০১৭ সালে ইংল্যান্ড এর মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। আর এবারের বিশ্বকাপও এই ইংল্যান্ডেই অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং, সাকিব ভক্তরা আশায় বুক বাধতেই পারে। বিশ্বকাপে অধিনায়ক সাকিবও কিন্তু মোটামুটি সফল বলা চলে। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপে সাকিব বাংলাদেশ কে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিলেও ৬ ম্যাচ খেলে ৩ ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ। এছাড়া ২০১৫ সালের বিশ্বকাপেও সাকিব একটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন টাইগার দের। সেটি অবশ্য হেরে যায় বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের মতো এবারের বিশ্বকাপ আসরেও সাকিব মাশরাফির সহকারী হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম সদস্য, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কাছে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক। সাকিবও দেশের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মাশরাফি মুশফিকের পর সাকিব বাংলাদেশের বর্তমান দলের মোস্ট সিনিয়র ক্রিকেটার। তার অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে আর কি বলবো। ক্রিকেট খেলুড়ে সব গুলো দেশের বিরুদ্ধে তার অসংখ্য ব্যক্তিগত অর্জন, রেকর্ড রয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব গুলো জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগে সাকিবের খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অভিজ্ঞতায় টয়টুম্বুর সাকিব এখন পরিণত, শানানো একজন ক্রিকেটার। বুদ্ধিদীপ্ত আর ক্ষুরধার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক কাজে লাগিয়ে সাকিব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য নিজেকে উজার করে দিয়ে পারফর্ম করবেন সেটাই চাওয়া পাওয়া সাকিবের কাছে। গত কয়েক বছরে সাকিব ওডিয়াইতে ব্যাটিংয়ে দারুণ ধারাবাহিক পারফর্মেন্স করছেন। এবং গত বছর থেকে ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পজিশন ৩ নাম্বারে ব্যাটিংও করছেন সাকিব। তবে বার বার ইনজুরি তাকে সাময়িক থামিয়ে দিলেও তার পারফর্মেন্সে তা ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। ৩ নাম্বারে খেলে সাকিবের ব্যাটিং গড় ঈর্ষনীয়। ১৫ ইনিংস খেলে ৭টি ফিফটি প্লাস ইনিংস খেলেছেন সাকিব। ৩ নাম্বারে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের কোনো প্লেয়ার তার ধারে কাছেও নাই পারফর্মেন্স এর বিচারে। সম্প্রতি শেষ হওয়া আয়ারল্যান্ডে ট্রাই নেশন সিরিজেও ৩ নাম্বারে ব্যাটিং করে দারুণ খেলেছেন সাকিব। ৩ ম্যাচ খেলে ২টি ফিফটি করেছেন তিনি। সাকিবের ব্যাটিং স্টাইল সাধারণত আক্রমণাত্মক। তবে ৩ নাম্বারে ব্যাটিং করার পর থেকে সাকিবের ব্যাটিং স্টাইলে পরিবর্তন লক্ষণীয়। অবস্থার চাহিদা অনুযায়ী আক্রমণাত্মক বা রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করছেন সাকিব। সাকিবের ৮০% শট কাট শট। আর কাট শট ভালও খেলেন সাকিব। এই শটটি কিন্তু বেশ বিপদজনক। তবে লাস্ট দুই বছরে সাকিবের ব্যাটে দারুণ সব শট দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। অনিন্দ্য সুন্দর কাভার ড্রাইভ, সুপার সুইপ (এই শটটির জন্য ২০১১ বিশ্বকাপে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন সাকিব) কাট শটের ফুলঝুরি দেখতে পাওয়া যায় সাকিবের ব্যাটিংয়ে। ২০১৫ বিশ্বকাপে সাকিব প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ৪ হাজার রানের মাইলস্টোন ছুঁয়ে ছিলেন। এবারের বিশ্বকাপে তার সামনে সুযোগ ৬ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করার। ৩০০ রান করতে পারলেই হয়ে যাবে সেটা। আর এই রান করাটা খুব সম্ভবও বটে। কারণ প্রতিটি দলই ৯টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে ১ম রাউন্ডে। সুতরাং, সাকিবের ব্যাট থেকে শত রানের ম্যাজিক্যাল ইনিংসও দেখতে পাবো সাথে সাকিব মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলবে, সেটাই প্রত্যাশা করি আমরা। সাকিব কে নিয়ে সমালোচনা বেশি হয়। নানা সময়ে নানান বিষয়ে তিনি আলোচিত হোন খবরের পাতায় বা টিভি নিউজে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে একটা কথা এই ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, যে আলোচনার যোগ্য বা যাকে নিয়ে আলোচনা বেশি হয় কিংবা যিনি সর্বদা আলোচনায় থাকেন তাকে নিয়েই যে সমালোচনা বেশি হবে, এটাই কি স্বাভাবিক না? সে যাই হোক, আলোচনা বা সমালোচনা যাই হোক, সাকিবই যে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বকাপ উপলক্ষে সাকিবের প্রস্তুতিও বেশ প্রশংসার দাবিদার। জিমে বেশ ঘাম ঝড়িয়েছেন সাকিব। ৫-৬ কেজি ওজন কমিয়ে পুরো ফিট হয়েই বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন বিশ্বের নাম্বার ওয়ান অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যতই হোক, বাংলাদেশের খেলা নিয়ে তিনি কতটা পজেজিব তা সবারই জানা। তিনি দেশের হয়ে যখন খেলেন, তখন বাকি সব কিছু বেমালুম ভুলে যান। পুরো ফোকাস থাকে তার খেলায়। এটাই সাকিবের বিশেষত্ব। দেশের খেলার সময় সাকিব নিজের সর্বোচ্চ উজার করে দেশের জন্য লড়ে যান। এজন্যই তিনি এদেশের ক্রিকেটের প্রাণ। সাকিবের সাম্প্রতিক ফর্ম বিশ্বকাপে বজায় থাকলে সাকিবই বাংলাদেশের ১৯ বিশ্বকাপে এক্স ফ্যাক্টর হবেন সেটা নির্দ্বিধায় বলা চলে। তার ক্ষুরধার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক আর অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং বোলিং দিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কে স্বপ্নের শিরোপা এনে দিবেন, তা ১৮ কোটি বাংলাদেশি ক্রিকেট প্রেমী বিশ্বাস করে। সাকিবের স্বপ্ন, এদেশের কোটি মানুষের স্বপ্ন, বাস্তবে পরিণত কর, নিজের জন্য, সবার আগে দেশের জন্য ভাল খেল। সেটাই প্রত্যাশা করছি। শুভ কামনা সাকিব। শুভ কামনা বাংলাদেশ।