• ফুটবল

রদ্রিগো'র টুকিটাকি

পোস্টটি ৫৬২৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

"সম্ভবত আমি যখন ব্রাজিলের জার্সি পড়ে দলের সাথে জাতীয় সঙ্গীত গাইবো, তখন তা হবে আমার জীবনের অন্যতম সেরা মুহুর্ত" - ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ডাক পাওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই নিজের আবেগ প্রকাশ করেন রদ্রিগো!

আপনি যদি ব্রাজিলের কথা বলেন, তবে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, এখানকার অলিতে গলিতে ফুটবলের পুজা করা হয়। লাখো শিশু কিশোর কিংবা তরুণের স্বপ্ন থাকে ফুটবলার হওয়ার, কয়জনই বা সেই পথ পাড়ি দিতে পারে, আর কজন'ই বা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়াতে পারে!

ব্রাজিলের হলুদ জার্সি গায়ে চড়ানোর আগেই অবশ্য এই ১৮ বছর বয়সী তরুণ তুর্কীর আরো একটা স্বপ্ন পুরণ হয়ে গেছে, তা হলো রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা!

মাত্র ১৮ বছর বয়সেই স্বপ্নগুলো ধরাছোঁয়ার মাঝে, এখন হয়তো নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পালা, নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পালা।

শুরুটা হয়েছিলো, ২০০১ সালের ৮ জানুয়ারি!


সাও পাওলোয় জন্ম নেওয়া বাবা-মা'র প্রথম সন্তান রদ্রিগো! রদ্রিগো'র বাবা-মা সুখী একজন দম্পতি, ভালোবাসা থেকে প্রেম, অতঃপর টিনেজেই বিয়ে। রদ্রিগো যখন ভূমিষ্ঠ হয়, তখন ওর বাবা'র বয়স মাত্র ১৭ আর ওর মা'র মাত্র ১৪!

রদ্রিগো ছিলো মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, যেখানে আয়ের উৎস ছিলো ফুটবল! রদ্রিগো'র বাবাও একজন ফুটবলার ছিলেন, খেলেছেন সাও পাওলোর স্টেট লীগে! নিজের ক্যারিয়ারে অপুর্ণ থাকা স্বপ্ন গুলো রদ্রিগোর বাবা তার সন্তানের মাঝে দেখতে চেয়েছিলেন, চেয়েছিলেন সন্তানকে অনেক বড় একজন খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলতে!

রদ্রিগো'র ফুটবল খেলার শুরু তাই নিজের শোবার ঘর থেকেই! ফুটবলের দীক্ষা পাচ্ছিলেন নিয়মিত বাবা'র থেকেই! রদ্রিগো'র বাবা ছিলেন একজন রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক এবং প্রিয় তারকা ছিলেন রবিনহো! এরিক তাই সন্তানকে সর্বদা রবিনহো'র নানান ভিডিও দেখানোয় ব্যাস্ত রাখতেন। রদ্রিগো কেবল তা উপভোগই করতোনা, বরং খুব সহজেই প্রতিটি কৌশল রপ্ত করে ফেলতেন! এভাবেই বেড়ে উঠা রদ্রিগো'র!

৯ বছর বয়সে সান্তোসে ট্রায়ালের জন্যে ডাক পায় রদ্রিগো! সেখানে সান্তোসের ফুটসাল দলে খেলা শুরু করে রদ্রিগো, ঠিক যেভাবে শুরু করেছিলেন পরিবারের আইডল রবিনহো।

বল পায়ে রাখা, ড্রিবলিং করে দু একজন ডিফেন্ডার কে কাটিয়ে, হুট করে গতি বাড়িয়ে গোল করা; রদ্রিগো একজন টিপিক্যাল ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় হিসেবেই গড়ে উঠছিলেন সান্তোসের ফুটসাল দলে।

২০১৭ সালে সান্তোসের যুবদলে ডাক পায় রদ্রিগো, এর পরে ২০১৮ তে প্রমোট হোন সান্তোসের মুল দলে। একই বছরে খেলেন ব্রাজিলের অ-১৭ দলেও। এরপরে নজরে পড়েন মাদ্রিদ স্কাউটের। ২০১৮ 'র জুনে মাদ্রিদের হয়ে নাম লিখান, ২০১৯ এ যোগ দেন। অনেকটা স্বপ্নের মতোই ২০১৯'র শেষে ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ডাক পেলেন রদ্রিগো।

রদ্রিগোকে ধরা হয় এই মুহুর্তে ব্রাজিলের অন্যতম প্রতিভাবান একজন খেলোয়াড় হিসেবে! রদ্রিগো'র ক্যারিয়ারের যে ঊর্ধ্বগামী গ্রাফ, তা যেনো কখনো নিম্নগামী না হয়; ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ সফলতাটুকু নিজের করে ছিনিয়ে নিক; কেবল এটুকুই প্রার্থনা!

শুভকামনা, রদ্রিগো দি সিলভা গয়েজ! ❤