• ফুটবল

বার্সার অবিশ্বাস্য জয়!

পোস্টটি ৮৬৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে সেরা কামব্যাকের কথা বললে অবশ্যই আগে আসবে বার্সেলোনা-পিএসজির ম্যাচের কথা। ন্যূ ক্যাম্পে যেভাবে প্যারিসের ক্লাবটিকে নাকানিচুবানি খাইয়ে বার্সেলোনা ম্যাচ জিতেছিল তা এখনো ফুটবল প্রেমীদের চোখে লেগে আছে। আরেকবার সেই দৃশ্য ফিরিয়ে আনলো বার্সা। কোপা ডেল রে'র কোয়ার্টার ফাইনালে গ্রানাডার বিপক্ষে যেভাবে কামব্যাক করে ম্যাচ জিতলো তারা তা সত্যি অবিশ্বাস্য! অকল্পনীয়! 

FB_IMG_1612437261622

দিন কয়েক আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে দুই বার এগিয়ে গিয়েও জিততে পারে নাই তারা। অ্যাটলেটিকো বিলবাও এর কাছে হেরেছিল ২-৩ গোলে।তাও ইনজুরি টাইমের গোলে। এবার কোপা ডেল রে'তে ঘটলো তার উল্টো দৃশ্য। ৮৮' মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে বার্সা! গ্রানাডা তখন সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে ফেলছিল।এবার বার্সা অসম্ভবকে সম্ভব করলো! অবিশ্বাস্য ভাবে ম্যাচ জিতে নিল ৩-৫ গোলের ব্যবধানে!  

প্রথমার্ধের  ২৫' মিনিটের মাথায়  প্রতিপক্ষের প্লেয়ারকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন লিওনেল মেসি।  ৩৩' মিনিটে এগিয়ে যায় গ্রানাডা। বার্সা ডিফেন্ডার উমতিতির ভুলে বল পেয়ে যান  আলবার্তো সোরো। তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া বলে গোল করে গ্রানাডাকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার কেনেডি। বার্সেলোনাকে বেশি হতাশ করেছেন গ্রানাডার স্প্যানিশ গোলরক্ষক  
অ্যারন এসক্যানডেল। একের পর এক আক্রমণ করেও গোলের দেখা পাইনি বার্সা। মেসি,  গ্রীজম্যান, ত্রিনকাও,   সবার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। সুযোগ গুলাকে কেউ গোলে পরিণত করতে পারেননি।

প্রথমার্ধে গ্রানাডার  গোলমুখে ১৩ টা শট নিয়েছিল বার্সা। এরমধ্য ৬ টায় অন টার্গেট শট। একটাও জাল খুঁজে পাইনি। অপরদিকে একটা মাত্র অন টার্গেট শটে গোল করে এগিয়ে যায় গ্রানাডা!  

সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া বার্সা উল্টো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল খেয়ে আরো কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ৪৭' মিনিটে স্প্যানিশ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এঞ্জেল মুনতোরোর পাস থেকে গোল করে গ্রানাডাকে ২ গোলের লিড এনে দেন রবার্তো সলদাদো। বার্সা তখন গোল করতে আরো মরিয়া হয়ে উঠে। আক্রমণের পর আক্রমণ  করেও গোলের দেখা মিলছে না। গোলবারও যেন এ দিন বার্সার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। মেসি,  ডেম্বেলে, ত্রিনকাও তিনজনেরই শটই গোলপোস্টে লেগে ফিরে আছে। 

ম্যাচের তখন মিনিট দুয়েক বাকি। গ্রানাডা ২ গোলে এগিয়ে। লিওনেল মেসির ক্রস থেকে পা ছুঁইয়ে ব্যবধান কমান গ্রীজম্যান। ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো অনেক বাকি! মেসির ক্রস খুঁজে পায় গ্রীজম্যানকে। নিঃস্বার্থ গ্রীজম্যান হেডে বল বাড়িয়ে দেন আলবাকে। আলবার নিঁখুত লক্ষ্যভেদ। সমতায়  ফেরে বার্সা! গ্রানাডা ২,  বার্সা ২! 

FB_IMG_1612431852615

ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। অতিরিক্ত সময়ের ১০ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় বার্সা। আলবার ক্রস থেকে হেডে গোল করেন গ্রীজম্যান। এর মিনিট তিনেক পর পেনাল্টি পায় গ্রানাডা।ডি বক্সে সার্জিনো ডেস্ট প্রতিপক্ষের প্লেয়ারকে অবৈধ ভাবে বাধা দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ফেডে ভিকো গোল করে আবার সমতায় ফেরান গ্রানাডাকে। ম্যাচের ১০৮ মিনিটের মাথায় মেসির শট গ্রানাডা গোলরক্ষক আটকে দিলেও, ফিরতি শটে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে নেন ডি জং। এর কিছুক্ষণ পর গ্রীজম্যানের পাস থেকে আলবা গোল করলে বড় জয় নিশ্চিত হয় বার্সার। চরম নাটকীয়তায় ভরা এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনা জিতে ৩-৫ গোলোর ব্যবধানে। 

জর্দি আলবা জোড়া গোল, জোড়া অ্যাসিস্ট করেছেন। গ্রীজম্যানের ও জোড়া গোলের পাশাপাশি জোড়া অ্যাসিস্ট।  ডি জং গোল করেছেন। এই ম্যাচে লিওনেল মেসি গোল করতে পারেন নাই। মাত্র একটা অ্যাসিস্ট করেছেন। পুরো খেলাজুড়ে লিও মেসির বডি ল্যাঙ্গুয়েজ,  নৈপুণ্য ছিল দেখার মতো। যারা ম্যাচটা দেখেছেন, শুধু তারাই বলতে পারবেন, লিও মেসি কতটা প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছেন এই ম্যাচে। প্রতিটি আক্রমণে তাঁর বাঁ পায়ের সাহায্য ছিলই!