• ক্রিকেট

নড়বড়ে নব্বইয়ে আটক

পোস্টটি ১১৮৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

 

ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। ক্রিকেট  ইতিহাসের অনেক প্লেয়ার আছেন, যারা ক্যারিয়ারে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। ভুড়ি ভুড়ি শতক, অর্ধশতক করেছেন। কিন্তু এমন কিছু প্লেয়ার আছেন, যাদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি শতক যেমন আছে; তেমনি আছে নব্বইয়ের ঘরে সবচেয়ে বেশি আউট হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতাও।  

 

আচ্ছা,এমন কোনো ব্যাটসম্যান আছে, রান নব্বইয়ের ঘরে গেলে ভয় পাই না? হাঁটু কাঁপে না? 

সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার থেকে শুরু করে এবি ডি ভিলিয়ার্স, রাহুল দ্রাবিড়,  জ্যাক ক্যালিস,  এমনকি হালের কেন উইলিয়ামসনেরও এই অভিজ্ঞতা আছে। তাঁরা দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেকবারই নব্বইয়ের ঘরে আটকে পড়েছেন।   

 

এই তালিকার উপরের দিকে থাকা মহাতারকাদের গল্প শুনি আজ- 

শচীন রমেশ টেন্ডুলকার (ভারত)

সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকা করলে, তাঁর নাম উপরের দিকে থাকবে  তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ছয়শতাধিক ম্যাচ খেলেছেন। হাজার চৌত্রিশের উপরে রান করেছেন। তাঁর চেয়ে বেশি রান করতে পারে নাই কেউই।ওয়ানডে ক্রিকেট প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটার তিঁনি। ক্রিকেট ইতিহাসের সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটারও যেন তিনি। এই ব্যাটিং মাস্টারক্লাস 'নার্ভাস নাইনটির' শিকার হয়েছেন ২৮ বার! ভাবা যায়? টেন্ডুলকার নিশ্চয় এই রেকর্ডের কথা শুনলে আফসোস করবেন। আর দুইটা শতক বেশি কেন করতে পারলাম না এই ভেবে! 

 

এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা) 

ক্রিকেট  বিশ্বের ভয়ংকর  ব্যাটসম্যানের একজন।  টেন্ডুলকারের মতো অতটা দীর্ঘ নয় তাঁর ক্যারিয়ার। তবে, তাঁর ক্যারিয়ারও সমৃদ্ধ। ক্যারিয়ারে চারশোর অধিক ম্যাচে বিশ হাজারের মতো রান করেছেন।ওয়ানডে ক্রিকেট দ্রুততম শতক এবং দ্রুততম 'দেড়শ' রানের রেকর্ড তাঁরই। ৪৭ টা শতক আছে তাঁর। আছে নব্বইয়ের ঘরে ১৪ বার আউট হওয়ার রেকর্ডও।  

 

রাহুল দ্রাবিড় (ভারত)

ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি।  'দ্য ওয়াল' নামে ডাকা হয় তাঁকে। বলা হয়ে থাকে, দ্রাবিড় ৫ রানের ইনিংস খেললেও, সে ইনিংসটাও হবে একদম নিঁখুত।পাঁচশোর অধিক ম্যাচে  হাজার চব্বিশের মতো রান করা তো  চাট্টিখানি কথা নয়। ক্যারিয়ারে নব্বইয়ের ঘরে ফিরতে হয়েছে ১৪ বারের মতো! এই ইনিংস গুলাকে শতকে রুপ দিতে পারলে, সেঞ্চুরি সংখ্যা ষাট ছাপিয়ে হতো ৬৪!  

 

জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা) 

জ্যাক ক্যালিসকে  সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার বললে, একদমই ভুল হওয়ার কথা নয়! তাঁর সময়ে ব্যাটে-বলে সমান ভাবে পারফর্ম করে গেছেন,  এমন অলরাউন্ডারের সংখ্যা খুব কমই ছিল! ব্যাটে-বলে সমান ভাবে উজ্জ্বল এই অলরাউন্ডার ক্যারিয়ারে রান করেছেন ২৫ হাজারের উপরে! সেঞ্চুরির সংখ্যা ৬২। ১৩ বারই নব্বইয়ের ঘরে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।  

 

রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া) 

অস্ট্রেলিয়ার সেরা অধিনায়কদের একজন রিকি পন্টিং। দুইবার বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন অজিদের। বেশ সমৃদ্ধ শালী ক্যারিয়ার তাঁর। ৫৬০ ম্যাচে ২৭ হাজারের অধিক রান আছে তাঁর। ৭১ বার শতকের দেখা পেয়েছেন। ১৩ বার নব্বইয়ের ঘরে  ফেরার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে তাঁরও। 

 

কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)

বর্তমান বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। নিউজিল্যান্ডকে গত বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। হয়েছেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন বছর দশেক হয়ে গেল। মাত্র ২৯৬ ম্যাচে ১৫ হাজারের মতো রান করে ফেলেছেন! সেঞ্চুরি আছে ৩৭ টা। বাকিদের  তুলনায়  তাঁর আফসোস টা একটু বেশিই হবে। এতো অল্প ম্যাচে ১২ বারই যে নব্বইয়ের ঘরে আউট হয়েছেন তিনি!  

 

এছাড়া মহেন্দ্র সিং ধোনী ১১ বার, ভিরাট কোহলী ১০, সাঙ্গাকারা ৯ বার এবং বাংলাদেশী মুশফিকুর রহিম ৭ বার নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন।