• ফুটবল

কোথায় গিয়ে থামবেন তিনি?

পোস্টটি ১২৫৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

বয়স ৫৩ ।কথা ছিল বুট জোড়া তুলে রাখার। অথচ এখনো দিব্যি খেলে যাচ্ছেন। বয়সটা স্রেফ একটা সংখ্যা বানিয়ে ফেলেছেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে  এই বয়সেও যে খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।  তাঁর জ্বলন্ত উদাহরণ তো জাপানিজ ফুটবলার কাজুয়োশি মিউরা। 

 

সবচেয়ে অবাক  করা ব্যাপার হচ্ছে, সময়ের সেরা ফুটবলার লিও মেসি যখন জন্মগ্রহণ করেন। তখন তিনি একজন পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। এবার বুঝুন অবস্থা! 

 

পুরো নাম কাজুয়োশি মিউরা হলেও সবাই তাঁকে 'কাজু' নামে চিনে। জন্ম ১৯৬৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ডাকনামও একটা আছে তাঁর 'কিং কাজু'। বর্তমানে খেলছেন জাপানিজ ক্লাব ইয়োকোহামা এফসিতে। স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলেন তিনি। 

 

আচ্ছা, কেউকে যদি প্রশ্ন করা হয়; ফুটবলে জাপানের প্রথম সুপারস্টারের নাম কী? ফুটবল না দেখলে হয়তো আপনার উত্তরটা দিতে একটু কষ্ট হবে। কিন্তু, ফুটবলের খবর রাখলে তো দুইবারও ভাবতে হবে না। এই কাজুয়োশি মিউরার  নামটাই আগে আসবে আপনার মনে। 

 

ফুটবলাররা অনেকে অনেকরকম উদযাপন করেন। এই জাপানিজ ফুটবলারও আলাদা একটা ভঙ্গিতে উদযাপন করেন।। অসাধারণ সব গোল তো তিনি মাঠে নেচে উদযাপন করেন। যা 'কাজু ড্যান্স নামে পরিচিত। 

 

কিংবদন্তি পেলে এবং হালের সেনসেশন নেইমারের সাবেক ক্লাব সান্তোসের হয়ে তাঁর পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু হয়।১৯৮৬ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে সান্তোসের হয়ে তাঁর অভিষেক হয়। শুধু সান্তোস নয়,  ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাস ও করিটিবার জার্সিও গায়ে জড়িয়ে ছিলেন। এরপর আবার ফিরেন জাপানিজ লীগে। 

 

মিউরা  ইতালিয়ান 'সিরি আ'তে খেলা প্রথম জাপানিজ ফুটবলার। ক্রোয়েশিয়ান ক্লাব ডায়নামো জাগরেবেও যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেও তিতু হতে পারেননি। 

 

শেষ পর্যন্ত ফিরতে হয় ঘরের ক্লাবে। ইয়োকোহামা এফসিতে যোগ দেওয়ার আগে খেলেন আরেক জাপানিজ ক্লাব ভার্ডি কাওয়াসাকির  হয়ে। তাঁদের হয়ে লীগ জিতেছেন অনেকবার। বার্সেলোনা কিংবদন্তি আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বর্তমান ক্লাব ভিসেল কুবেতেও খেলেছেন কাজুয়োশি।  

FB_IMG_1613637613078

 

জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় ১৯৯০। এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের বিপক্ষে। জাপানের হয়ে ৮৯ ম্যাচে করেছেন ৫৫ গোল। জাপানের ফুটবল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ৯৪' বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ১৩ ম্যাচে করেছিলেন ১৩ গোল।  যদিও জাপান চূড়ান্ত পর্বে খেলতে ব্যর্থ হয়। জাতীয় দলের হয়ে বলার মতো সাফল্য নেই তাঁর। দীর্ঘ  দশ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ২০০০ সালে। 

 

 FB_IMG_1613637622084

 

পেশাদার ফুটবলে সবচেয়ে বয়স্ক  ফুটবলার এই জাপানিজ স্ট্রাইকার।  পেশাদার ফুটবলে সবচেয়ে বেশি বয়সে (৫০ বছর) গোল করার রেকর্ডও তার দখলে। বর্তমানে খেলছেন এমন ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক (৫৩) ফুটবলারও তিনি। পাঁচটা আলাদা আলাদা দশকে ফুটবল খেলা প্রথম ফুটবলার এই কাজুয়োশি। প্রথম জাপানিজ ফুটবলার হিসেবে জেতেন এশিয়ান বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরষ্কার।   

 

সম্প্রতি জাপানিজ ক্লাব ইয়োকোহামা এফসির সাথে নতুন চুক্তি করেছেন।  এটা তাঁর ৩৬তম সিজন।  ভাবা যায়? এখন তিনি কোথায় গিয়ে থামেন সেটাই দেখার বিষয়।