• ক্রিকেট

উইকেটরক্ষক-অধিনায়ক-ওপেনার

পোস্টটি ১১৪৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

ক্রিকেটে কাপ্তানের দায়িত্বটা স্বাভাবিকের চেয়ে  একটু বেশিই।দলের সবাইকে আগলে রাখার কাজটা তাদের   করতে হয় নিষ্ঠার সাথে। এখানেই কি শেষ?  অধিনায়ককে আরো কত ধরনের ভুমিকা পালন করতে হয়!

 

টেস্ট ক্রিকেটে একটা জায়গায় কাপ্তান ও যেন ব্যতিক্রম। একসাথে অধিনায়কত্ব ও উইকেটরক্ষকের  দায়িত্ব পালন করতে আমরা অনেক কাপ্তানকে দেখেছি। কিন্তু, এদের মধ্যে গুটি কয়েক ছিলেন যারা ব্যাট হাতেও ইনিংস সূচনা করতেন। এই সংখ্যা মাত্র তিন জনের। 

 

 তাদের গল্প শুনি আজ- 

 

পার্সি শেরওয়েল (দক্ষিণ আফ্রিকা)

 

একজন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার। দশ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন এই শেরওয়েল।

উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে  দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১৩ টেস্ট খেলেছেন। ক্যারিয়ারে ১৩ টেস্টে  ২২ ইনিংস ব্যাট করেছেন।  ২৩ এভারেজে  মাত্র ৪২৭ রান করেছেন। একটা শতকের পাশাপাশি আছে একটা অর্ধশতক ও। ৪ বার অপরাজিত ছিলেন। তাঁর  অভিষেক টেস্টেই ইংল্যান্ডকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ১৯০৬ সালে জোহানসবার্গে ইংল্যান্ডকে হারাতে তাঁর অপরাজিত ২২ ইনিংসটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছিল। শেষ উইকেটে সতীর্থের সাথে তাঁর ৪৮ রানের জুটিই দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দিয়েছিল এক উইকেটের জয়। ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটাও করেছেন ইংল্যান্ডের লর্ডসে।

 

উইকেটকিপার হিসেবে ২০ টা ক্যাচ নিয়েছেন। স্টাম্পিং করেছেন ১৬ টা। শুধু ক্রিকেট নয়; শেরওয়েল টেনিসও খেলতেন। টেনিসে দক্ষিণ আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নশিপ টাইটেল জেতার অভিজ্ঞতাও আছে তাঁর।   

 

তবে একটা জায়গায় তাঁর রেকর্ডটা এখনো কেউ টপকাতে পারে নাই। টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে একইসাথে ব্যাটিং ওপেন ও উইকেটরক্ষকের  দায়িত্ব পালন করা প্রথম ক্রিকেটার তিনি। ৭ বার এমন নজির দেখান তিনি।

 

গ্যারি  আলেকজান্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) 

 

এই জ্যামাইকান ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ২৫ টেস্ট। তিনি ছিলেন মূলত উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ২৫ টেস্টে ৩৮ ইনিংসে ব্যাট করার সৌভাগ্য হয়েছিল তার। ৩০ এভারেজে করেছেন ৯৬১ রান। একটা শতক আছে। সাতটা অর্ধশতকও আছে। 

 

গ্লাভস হাতে ৯০ ডিসমিসাল আছে তাঁর। ৮৫ টা ক্যাচ; স্টাম্পিং ৫টা। 

 

১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচের  টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেতৃত্ব দেন। জয়ও পেয়েছিল তাঁর দল। ব্যাটে ও উইকেটের পিছনে পারফর্ম ও করেন। সেকেন্ড টেস্টের সেকেন্ড ইনিংসে একটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসও খেলেছিলেন। 

 

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই তাঁর সাফল্যের পাল্লাটা ভারী। ক্যারিয়ারে একমাত্র সেঞ্চুরিটা এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই করেছিলেন। শুধু কী তাই? টেস্টে সাত ফিফটির  ছয়টা তো তাদের বিপক্ষেই। 

 

একটা রেকর্ডও আছে তাঁর। একই টেস্টে অধিনায়কত্ব, উইকেটরক্ষক ও ব্যাটিং ওপেন করার রেকর্ড। ইতিহাসের দ্বিতীয় ক্রিকেটার যে ২ টেস্টে একইসাথে উইকেটকিপার ও ওপেনিংয়ে ব্যাট করেছেন। 

 

ইমতিয়াজ আহমদ (পাকিস্তান)  

 

পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট দলের অন্যতম সদস্য সে। তিনি মূলত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। মাঝেমধ্যে দলের প্রয়োজনে খেলতেন টপ অর্ডারেও। ব্যাটে হাতে ৪১ ম্যাচে ২ হাজারের উপরে রান করেছেন। তিনটা সেঞ্চুরি,  ১১ টা হাফ সেঞ্চুরি আছে। একটা ডাবল সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। ইতিহাসে প্রথম উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান  হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড তাঁরই।  

 

উইকেটকিপার হিসেবেও সফল তিনি। ৯৩ টা ডিসমিসাল আছে। এরমধ্যে ৭৭ ক্যাচ; ১৬ টা স্টাম্পিং। 

ইমতিয়াজ আহমদ টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে  তৃতীয় অধিনায়ক যিনি ৩ ম্যাচে একই সাথে উইকেটরক্ষক ও ব্যাটিং ওপেন করেছিলেন।

 

নিকট অতীতে এমন রেকর্ড নেই বললেই চলে। হ্যাঁ, অধিনায়কত্ব ও উইকেটকিপারের ভুমিকায় ছিলেন অনেকেই। তবে,  একইসাথে  তিন ভুমিকায় দেখা গেছে এই তিনজনকেই।