• ফুটবল

মেইড ইন চায়না...

পোস্টটি ১২৩৭ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।



আমাদের সবারই জানা কিভাবে চীন, সব সেক্টরে তাদের বুদ্ধি এবং টেকনোলজি দিয়ে জয় করে নিচ্ছে। সময়টা ২০০২, ইউরোপের লীগ গুলো পুরো দমে চলছে, প্রতি বছরে আগের বছর থেকে ভালো করছে, ফিনান্সিয়াল এবং খেলার মান দিয়েও পৃথিবীতে সেরা। 

চাইনিজ জ্বিয়া-এ লীগ এর কথা আমরা কয়জনবা শুনেছি? ২০০২ পর্যন্ত এটাই ছিলো চীনের শীর্ষ লীগ। চীনের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান এর উদ্যোগে শুরু হয় চীনের ফুটবল বিপ্লব। যেই কথা সেই কাজ ২০০৪ শুরু হয় চীনের ফুটবল ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়, শুরু হয় চাইনীজ সুপার লীগ বা সিএসেল। মূলত চাইনিজ জ্বিয়া-এ লীগের নাম পরিবর্তন করে এই নাম রাখা হয়। শুরু হয়ে যায় ইউরোপের আদলে মেইড ইন চায়না ফুটবল লীগ। 

সময়ের সাথে সাথে চীন বুঝতে পেরেছে ফুটবলে এখন টাকার খেলা, ফুটবলকে কেন্দ্র করে ইউরোপের দেশের অর্থনীতি পরিবর্তন হয়, তাছাড়া সুনাম তো আছেই, যেটা চীনেরও দরকার। চাইনীজ সুপার লীগ শুরু হওয়ার পর এশিয়া তে তাদের দাপট অনেক গুনে বেড়েছে। 

২০০৯ পর্যন্ত এফসি  চ্যাম্পিয়নশীপে ২টা স্লট বরাদ্দ করা হলেও পরে সেটা ৪টা করা হয়। এফসি  চ্যাম্পিয়নশীপের র‍্যাংকিং এও সবার উপরে চাইনীজ সুপার লীগ। চাইনিজ ফুটবল এসোসিয়েশন তাদের লক্ষ সেট করেছে ৬ষ্ঠ বেস্ট লীগ হওয়ার পৃথিবীতে। 

আসল বিপ্লব শুরু হয় ২০১১ সালে যখন সিএফসি তাদের এন্টি করাপশন মুভমেন্ট শুরু করে। চাইনীজ সুপার লীগের সবচেয়ে সফল দল গুয়াংঝুর, তারা সর্বোচ্চ ৮ বার শিরোপা ঘরে তোলে। কি ছিলো নাহ চাইনীজ সুপার লীগে! টাকা আর নতুন নতুন প্লেয়ার ইউরোপ থেকে এনে পুরো পৃথিবীকে চমক লাগিয়ে দিয়েছিলো, তাতে বাদ যায়নি কোচও। 

উইফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ বিজয়ী প্লেয়ার থেকে শুরু করে ছিলেন ফিফা বিশ্বকাপ জয়ী কোচও। ফলটা পেতেও দেরি হয়নি ২০১৩ তে গুয়াংঝুর প্রথম চাইনীজ দল হিসেবে জিতে এফসির শিরোপা। ফুটবল ওয়াল্ডে সবচেয়ে বড় চমক ছিলো চেলসির ড্রগবা,এনেলকা দিয়ে শুরু হয়, বার্সোলনার কেইটা, ডর্টমুন্ডের লুকাস, ব্রাজিলের রামিরেস, অস্কার,পাতো,হাল্ক, আর্জেন্টিনার টেভেজ, ইতালির কার্ভাহো, কিংবা নাইজেরিয়ার মিকেল দিয়ে শেষ, অনেক প্রতিভাবান প্লেয়ার পাড়ি জমায় চীনের সুপার লীগে। প্লেয়ারের পাশাপাশী কোচও ছিলো চোখে পরার মত, যেমন- মার্সেলো লিপ্পি, ক্যানেভারো, সার্জিও বাতিস্তা, স্কোলারি এছাড়া অনেকে।

চাইনীজ সুপার লীগে গুয়াংঝুর হচ্ছে সবচেয়ে সফল ক্লাব, ১৭টা সিজনের ৮টার চ্যাম্পিইয়ন তারাই, সাথে ২টা এফসি শিরোপা। তাদের মালিকানার ৪০ ভাগ আবার আলিবাবার। করোনা মহামীরতেও গুয়াংঝুর ন্যু ক্যাম্পকেও টেক্কা দেবের মতো স্টেডিয়াম বানাচ্ছে।  

গ্লেমারের দিক দিয়েও কম যায়নি এই চাইনীজ সুপার লীগ পাভেল নেদ্ভেদ, ডেভিড ব্যাকহাম ছিলেন গ্লোবাল এম্বাসিডর। পলিনিহো কে বার্সার কাছে বিক্রি করে ইতিহাস গড়া। সবই ছিলো চাইনীজ সুপার লীগে, ইউরোপের মত স্ট্যান্ডান্ড নাহ হলেও তারা যে ফুটবল নিয়ে অনেক এগিয়েছে এনিয়ে হয়তো কেউ দ্বিমত করবে নাহ, তবে এখনো অনেকটা পথ বাকি আছে। সামনের বছর গুলোতে আরো এগিয়ে যাবে চাইনীজ সুপার লীগে এবং চাইনীজ ফুটবল।
jpeg