• ফুটবল

অফসাইডের যত নিয়ম

পোস্টটি ২৪১০৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

যুগের আধুনিকতার  সাথে তাল মিলিয়ে যেমন পরিবর্তন ঘটে আমি আপনি সমাজের তেমনি আধুনিকতার ছোয়ার পড়ে খেলায়ও  পরিবর্তনটাও  হয়ে উঠে । যেকোনো  খেলা কয়েকটা নিয়মের মধ্যে বন্ধী থাকে। সময়ের সাথে সাথে  পরিবর্তিত হয়  নিয়মেরও। যুগের সাথে পরিবর্তন হওয়া নিয়মগুলি  প্রতিটা পক্ষের পালন করে খেলায় অংশগ্রহণ করতে হয়। তেমনি  ফুটবল খেলাও কয়েকটি নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ।  কিছু নিয়ম খেলোয়াডের পক্ষে থাকলেও কিছু নিয়ম থাকে রেফারির পক্ষে। ফুটবল খেলার  চেয়েও কঠিন এর সহজ-সরল নিয়মগুলো বোঝা। ফুটবল খেলায় সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তর্ক বাধে যে জিনিসটি নিয়ে, সেটি হলো ‘অফসাইড’। 

 

১৮৬৩ সালে সর্বপ্রথম অফসাইড চালু করা হয়। ১৮৭২ সালে সর্বপ্রথম অফিসিয়াল ম্যাচে অফসাইডের প্রচলন করা হয়। এসময় অফসাইডের নিয়ম ছিল- প্রতিপক্ষের তিনজন খেলোয়াড় সামনে থাকতে হত (গোলকিপার)। যদি তিনজনের কম হত তাহলেই আফসাইড। অর্থাৎ যদি সামনে একজন খেলোয়াড় এবং গোলকিপার থাকত তাহলেও অফসাইড ধরা হত।

 

সেই অফসাইডের নিয়ম চলতে থাকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত। এরপর নিয়মে সামান্য কিছু পরিবর্তন আসে। যা চলতে থাকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। এই পরিবর্তন ছিল সামনে অন্তত দুজন খেলোয়াড় থাকতে হত (গোলকিপার সহ)

 

১৯৯০ সালে অফসাইডের রুলসে আরও কিছু পরিবর্তন আসে যেট এখনো চলতেছে। তবে এর মাঝে বিভিন্ন সময়ে যেমন- ২০০৫ সালে এবং ২০০৯ সালে অফসাইডের রুলসে কিছু কিছু পরিবর্তন আসে।

 

সে হিসেবে দেখা যায়, বর্তমান সময়ের অফসাইডের তুলনায় আগের অফসাইডও কোন অংশেই কম শক্তিশালী ছিল না। বরং সেই সময়ে অফসাইড রুলস আরও কঠিনই ছিল। কেননা, গোলকিপার সহ তিনজন এবং ১৯২৫ সালের পর গোলকিপার সহ দুজন খেলোয়াড় সামনে না থাকলেই অফসাইডের বাশি বাঁজানো হত।

 

বর্তমান ফুটবল বা  ফুটবলে আধুনিকতায় যত পা রাখছে অফসাইডের নিয়মেও লেগে যাচ্ছে আধুনিকতার ছোয়া। বর্তমান রুলসটি ছিল:-পাস দেওয়ার সময় এক দলের কোনো খেলোয়াড় যদি প্রতিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারদের তৈরি করা সমান্তরাল রেখার আগে চলে যায়, তখন সেটি অফসাইড হিসেবে ধরা হয়। সোজা কথায়, আক্রমণে যাওয়া কোনো খেলোয়াড় বল ছাড়া কোনো ডিফেন্ডারের আগে যেতে পারবেন না। বল নিয়ে ডিফেন্ডারকে পার হতে হবে, নয়তো বল পাস পাওয়ার সময় ডিফেন্ডারের সমান্তরালে অথবা পেছনে থাকতে হবে। অন্যথায় সেটি অফসাইড বিবেচিত হবে। 

 

কিন্তু ২০১৫ সালে গোল করা আরো কষ্টসাধ্য হতে চলেছে ফুটবলারদের কাছে। মৌসুম শুরুর  আগেই অফসাইডের নিয়মে কিঞ্চিৎ পরিবর্তন করে রেফারি-লাইন্সম্যানদের হাতে নতুন ‘অস্ত্র’ তুলে দিয়েছে ফিফা। এতদিন নিয়ম ছিল, অফসাইডে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো খেলোয়াড় বল ছুঁলে তবেই ‘অফসাইড’ হতো। অর্থাৎ, সেই খেলেয়াড় যদি বলের দিকে এগিয়ে যেতেন বা বল ধরার জন্য পা বাড়াতেন, কিন্তু বলে পা লাগাতেন না, তাহলে অফসাইড হতো না। কিন্তু এবার ফিফা জানিয়ে দিয়েছে, অফসাইড পজিশনে দাঁড়িয়ে কোনো খেলোয়াড় বলের দিকে এগোলে বা বল ধরার চেষ্টা করলেও রেফারি তার বাঁশি বাজাবেন। ফিফার এই নতুন নিয়মে রেফারি ও লাইন্সম্যানদের সমস্যা অনেকটাই লাঘব করবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তবে ফুটবলার ও কোচেদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে এই নতুন নিয়ম। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নিয়মের ফলে গোলের সংখ্যা অনেকটাই কমে যাবে। 

 

অফসাইড রুলস আরো কঠিন হয়ে উঠে ২০১৮  থেকে ব্যবহৃত হওয়া VAR এর আগমনের কারণে ভিএআর হচ্ছে ফুটবল খেলায় সম্প্রতি প্রচলিত ভিডিওর সহায়তায় তৈরি রেফারি এসিস্ট্যান্ট সিস্টেম। এটি খেলার ভিডিও রিপ্লের মাধ্যমে মাঠের রেফারিকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে থাকে। সেক্ষেত্রে মাঠের বাইরে থাকা স্টুডিওতে বিশেষ একটি টিম ভিডিও রিপ্লে বিশ্লেষণ করে। এতে রিপ্লাই এর মাধ্যমে খুব সহজেই অফসাইড ধরা যায়।  যার ফলের রেফারির ভুল হলেও ভিএআর এর মাধ্যমে চেক করে রেফারি সঠিক সিদ্ধান্ত জানাতে পারে।যদিও অনেক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকে ভিএয়ার যা ফুটবলের আকর্ষণকে অনেক বাধাগ্রস্ত করে৷