• ক্রিকেট

হারিয়ে যাওয়া প্রতিভা-৫ম পর্ব

পোস্টটি ২২৯৭ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

মোহাম্মদ আশরাফুল

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ শতরানের মালিক মোহাম্মদ আশরাফুল বাংলাদেশ ক্রীড়া জগতের অন্যতম নক্ষত্র। কিন্তু এই নক্ষত্র থেকে বিশ্ব ক্রিকেট যেভাবে আলোকিত হাওয়ার কথা ছিল তার আগেই অপ্রত্যাশিতভাবে সেই নক্ষত্র হারিয়ে যায় এক ব্ল্যাকহোলে।

২০০১ সালের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক।সেই বছরের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্টে তার তাক লাগানো আবির্ভাব। মাত্র সতের বছর বয়সে মুরলিধরন,ভাসের মত সেরা বোলারদের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে শতরান করে বিশ্ব রেকর্ড নিজের নামে করে নেয়।দীর্ঘ ২০ বছরেও তার এই রেকর্ড অক্ষত রয়েছে।মোহাম্মদ আশরাফুল দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে এমন একজন  যাকে ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা হয়তো কখনো ভুলতে পারবে না।যারা বাংলাদেশ ক্রিকেট অনুসরন করে তাদের কাছে একসময় চোখের মণি ছিল,তার ব্যাটিং শৈলী মুগ্ধ করেছে দেশ বিদেশের বহু ক্রিকেট ভক্তকে।তার আক্রমনাত্মক ব্যাটিং সেই সময়ের বাংলাদেশ অনেক শক্তিশালী দেশের বিপক্ষেও জয়ের স্বপ্ন দেখত।এমনকি সেই সময়ের সেরা দল অস্ট্রেলিয়াকে একাই হারিয়ে হিরো বনে যায়।তার বদৌলতে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে বিশ্ব দরবারে নতুন রুপে পরিচয় করিয়েছে।কিন্তু তাকেও বাদ পরতে খারাপ ফর্মের কারনে। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে আশরাফুলকে ঘিরে দেশবাসী অনেক স্বপ্নের জাল বুনেছিল।অথচ ১৪.২০ গড়ে মাত্র ৭১ রান করে সবাইকে হতাশ করে দলে জায়গা হারায়।২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে দলে ফিরে ৩১ বলে ৫১ রানের ইনিংসে খেলে দেশকে জয় এনে দেয়। এরপর সেই বছরের ভারতের বিরদ্ধে টেস্ট দলে ডাক পায়।চট্টগ্রাম টেস্টের কথা কোন বাংলাদেশীই ভুলতে পারবে না।১৫৮ রানের অসাধরণ এক ইনিংস তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের সর্বকালের সেরা পাঁচ টেস্ট ইনিংসের মধ্যে আশরাফুলের ইনিংসটি থাকবে অবশ্যই।

 

 

images

 

 

২০০৮ সাল থেকেই আশরাফুলের ব্যাটিং হারাতে থাকে উজ্জ্বলতা।এর মাঝে ২০০৯ সালে অধিনায়কত্ব হারায়।২০১০ সাল থেকে দলে অনিয়মিত হয়ে যায় তার স্থান। তামিম,সাকিব,মুশফিকদের মত নবীনরা ক্রমশঃ দলে জায়গা পোক্ত করতে থাকে।আর আশরাফুল পিছিয়ে যেতে থাকে।২০১৩ সালে আবার ফিরে এসে ক্যারিয়ার সেরা ১৯০ রানের ইনিংস খেলে আবারও আশা জাগিয়ে তোলে সবার ' আশা ' আশরাফুল।কিন্তু এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায় যা আমরা কেউ স্বপ্নেও ভাবিনি।ম্যাচ গড়াপেটায় তার নাম উঠে আসাটা অনেকটা মেঘ ছাড়াই বাজ পরে আশরাফুলের জীবনে।পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞায় আশরাফুলকে নিয়ে সব আশা শেষ হয়ে যায়।শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম পোস্টার বয়,সুপার স্টার এর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদচারনা।৬১ টেস্টে ২৪ গড়ে ২৭৩৭ রান আর ১৭৭ ওয়ানডেতে ৩৪৬৮ রান তার প্রতিভাকে তুলে ধরতে পারবে না।

 

Information & image courtesy: www.espncricinfo.com