প্রিমিয়ার লিগের আগে আবারও আলোচনায় 'চার বিষয়'
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। বাংলাদেশের ক্রিকেট ঐতিহ্যের শুধু অংশ নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটারদের রুটি-রুজির অনেক বড় উৎসও এটি। প্রতি বছর এ লিগের সঙ্গে আসে অন্তত চারটি আলোচনা- সময়, ক্রিকেটারদের দল বা দলগুলোর ক্রিকেটার বাছাই প্রক্রিয়া, আম্পায়ারিং এবং ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক। ৮ মার্চ শুরু হতে যাওয়া প্রিমিয়ার লিগের প্লেয়ারস ড্রাফট ছিল ১৮ ফেব্রুয়ারি, এরপর প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক সংস্থা সিসিডিএমের সংবাদ সম্মেলনে ঘুরে ফিরে আসলো এ চারটি বিষয়।
ঋতুভেদে ক্রিকেটের জন্য এদেশে সবচেয়ে উপযুক্ত মৌসুম শীতকাল। তবে প্রিমিয়ার লিগ সে স্লটটা হারিয়ে ফেলেছে বিপিএলের কাছে। বিপিএল শেষ হলেই এখন মেলে সেটা। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে কাকে পাওয়া যাবে, সেটা নিয়ে খুব একটা ভাবতে চায় না সিসিডিএম। বরং ঘরোয়া ক্রিকেটারদের আয়ের পথটা মসৃণ করার দিকেই নজর তাদের।
ক্রিকেটারদের সঙ্গে ক্লাবগুলোর পারিশ্রমিক সংক্রান্ত ঝামেলা নিয়ে এবার আরও কঠোর হতে চায় সিসিডিএম। গত মৌসুমেও বিসিবির দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলাবাগানের কয়েকজন ক্রিকেটার, রেলিগেটেড হয়ে যাওয়া তাদের ক্লাব পারিশ্রমিক নিয়ে গড়িমসি করেছিল বলে। এবার এমন ক্লাবগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবে পয়েন্ট কেটে রাখা বা প্রয়োজনে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে সিসিডিএম, এমন ধারাও যুক্ত করা হয়েছে বাই-লজে।
ক্রিকেটার বাছাই প্রক্রিয়াতে এবারও নেওয়া হয়েছে ‘প্লেয়ারস বাই চয়েজ’ পদ্ধতির। এবার তিনজন ক্রিকেটার ধরে রাখার সুযোগ পেয়েছে ক্লাবগুলি। এরপর ড্রাফট, তবে ড্রাফটে যেসব ক্রিকেটার দল পাননি, বা যারা ড্রাফটে ছিলেনই না, তারা গণ্য হবেন ‘ফ্রি প্লেয়ারস’ হিসেবে। সরাসরি ক্লাবের সঙ্গে দর-কষাকষি করতে পারবেন তারা, অবশ্য কোনও ক্রিকেটারের মূল্যই বিসিবি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি হবে না।
এর বাইরেও থাকবে ‘অদল-বদল’-এর পদ্ধতি। ড্রাফটের পর এক ক্লাব সর্বোচ্চ তিনজন ক্রিকেটার ছেড়ে দিয়ে নিতে পারবে সর্বোচ্চ আটজন ক্রিকেটার। এ অদল-বদল চলতে পারবে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচ শুরুর আগ পর্যন্ত। গতবারও যেমন শুরুতে মাশরাফি বিন মুর্তজা ছিলেন শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবে, এরপর গিয়েছিলেন আবাহনীতে। এই পদ্ধতিতে অপেক্ষাকৃতি বড় ক্লাবগুলি সুবিধা পায় কিনা, সে প্রশ্নের জবাবটা সিসিডিএম চেয়ারম্যান দিয়েছেন ঘুরিয়ে, “গত বছর পাঁচজন ক্রিকেটার ধরে রাখার সুযোগ ছিল। এক্ষেত্রে যেটা হয়, অপেক্ষাকৃত ছোট বা নতুন ক্লাবগুলি ক্রিকেটার নেওয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ কম পায়। তাদের তাদের অনুরোধেই এটা। সবাই দেখেছে। সবাই বিবেচনা করছে।
“তিন-চারটা ক্লাবের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বিষয়টা তুলেছিল। পরে অন্য ক্লাবগুলোর সংগেও কথা বলেছি। কারও সম্মতি ছাড়া এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সবাই সম্মতি দিয়েছে। প্রথম ম্যাচের আগেই (অদল-বদল) করতে হবে।”
বিদেশী ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে অবশ্য নিয়ম আছে আগের মতোই- যে কোনও সংখ্যক ক্রিকেটার নিবন্ধনের সুযোগ থাকলেও প্রতি ম্যাচে দলপ্রতি খেলতে পারবেন একজন করে। এছাড়াও প্রথম বিভাগ থেকে প্রতি দল নিবন্ধন করাতে পারবে একজন করে ক্রিকেটার, অবশ্য সে ক্রিকেটারের সুযোগ থাকবে পরের মৌসুমে সিসিডিএমের অনুমতি সাপেক্ষে প্রথম বিভাগে ফিরে যাওয়ার।
আর আম্পায়ারিং নিয়ে ইনামের ব্যাখ্যা, “আম্পায়ারিং নিয়ে যেটা বলতে চাই, গত বছর আমাদের কাছে আম্পায়ারিং তেমন অভিযোগ আসেনি প্রিমিয়ার লিগ থেকে। আসলে আমরা সিসিডিএম থেকে সবার সঙ্গে বসেছি, আম্পায়ারস কমিটিকে সেখানে ডেকেছি। আমরা অনুরোধ করেছি, আম্পায়ারিংয়ের মানটা যাতে ভাল মানের হয়। এখন প্রতি মাঠে ক্যামেরাও বসানো হয়েছে সেটা নিশ্চিত করার জন্য। সম্প্রতি বোর্ড প্রেসিডেন্টও বলেছেন, তিনি লিগটা ভালমতন চলাতে চান, তিনিও আম্পায়ারিংয়ের দিকে ফোকাস করতে বলেছেন সব লিগেই। আপনারা মিডিয়াও সবসময় মাঠে যান, কোনও প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই সেটা তুলে ধরবেন। কোনও প্রশ্ন থাকলে আম্পায়ারস কমিটি অবশ্যই থাকবে (সমাধানের ক্ষেত্রে)।”