এলগার-ডি ককের সেঞ্চুরির দিনে ভারতকে এগিয়ে রাখল আশ্বিনের পাঁচ
৩য় দিনশেষে
ভারত ১ম ইনিংস ৫০২/৭ ডিক্লে. ও দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস ৩৮৫/৮*
দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ১১৭ রানে পিছিয়ে
ডিন এলগারের সঙ্গে কুইন্টন ডি ককের সেঞ্চুরি, শেষে এসে রবিচন্দ্রন আশ্বিনের পাঁচ উইকেট- বিশাখাপত্তমে টেস্ট ক্রিকেটের এক রোমাঞ্চকর দিন ছিল আজ। ফাফ ডু প্লেসির পর ডি ককের সঙ্গে এলগারের দুটি সেঞ্চুরি জুটিতে ম্যাচ থেকে এখনও ছিটকে যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে আশ্বিনের পাঁচ উইকেট ভারতকে এগিয়ে রেখেছে ঠিকই।
আগেরদিন ৩৯ রানেই ৩ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা এদিন টেমবা বাভুমাকেও হারিয়ে ফেলেছিল শুরুতেই, ইশান্ত শর্মার বলে তিনি এলবিডব্লিউ হওয়ার সময় দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ৬৩। ডু প্লেসিকে সঙ্গে নিয়ে এলগারের ঘুরে দাঁড়ানো এরপরই। লাঞ্চের আগে শুধু বাভুমার উইকেটই হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগেই ফিফটি হয়ে গেছে এলগারের, ডু প্লেসি অপরাজিত ছিলেন ৪৮ রানে।
লাঞ্চের পর ৮ম ওভারে গিয়ে ব্রেকথ্রু পেয়েছে ভারত, আশ্বিনের বলে আলগা শটে লেগস্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক ডু প্লেসি, এর আগে করেছেন ৫৫ রান। তবে এলগার দমেননি তাতে, আশ্বিনকে ছয় মেরে পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি। কেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম ভরসার নাম, কেন সময়ের অন্যতম নির্ভরশীল ওপেনার তিনি-- এলগার আরেকবার বুঝিয়েছেন সেটি বিশাখাপত্তমে আজ।
২৭তম বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন আশ্বিন/বিসিসিআই
ওপাশে ডি কক শুরুতে একটু চুপচাপই ছিলেন, ভিহারির বলে শুরুতে একটা কঠিন সুযোগ দিয়েও বেঁচেছিলেন রোহিত শর্মার কাছে। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন দ্রুতই, আশ্বিনকে দুই চারের পর জাদেজাকে চার-ছয়ে শুরু করেছেন প্রতি-আক্রমণ। দ্বিতীয় সেশনের পুরোটাই তাই দক্ষিণ আফ্রিকার। ৩৭ ওভারে এ সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছে ১৩৯ রান। এলগার লেগসাইডে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন, চা-বিরতির পরও চালিয়ে গেছেন আক্রমণ। রবিন্দ্র জাদেজার বলে টপ-এজড হয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়ার আগে করেছেন ১৬০ রান, ২৮৭ বল খেলে মেরেছেন ১৮টি চার ও ৪টি ছয়। এলগার এদিন দেখিয়েছেন এক মাস্টারক্লাস।
অবশ্য তার উইকেট বাঁধটা খুলে দিয়েছিল ভারতের জন্য। তবে শীঘ্রই সফলতা পাননি তারা। সেনুরান মুথুসামিকে নিয়ে ডি কক টিকে ছিলেন আরও কিছুক্ষণ। টার্ন-অসম বাউন্স সামলে খেলেছেন দারুণভাবে, আশ্বিনের অফস্টাম্পের বাইরে করা বলে টেনে ছয় মেরে পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের ৫ম সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের পর শ্রীলঙ্কা সিরিজেও পাওয়া ফর্মটা ভারতেও টেনে আনলেন তাই এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
আশ্বিন-জাদুতে অবশ্য হার মানতে হয়েছে তাকে, তাকে গেট দিয়ে ঢুকে পড়া বলে বোল্ড করেছেন আশ্বিন। ডি কক ১১১ নেলসনে থেমেছেন ১৬ চার ও ২ ছয় মারার পর। ডি ককের পর ফিল্যান্ডারও শিকার আশ্বিনের, আবারও দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে স্টাম্প ভেঙেছেন এই অফস্পিনার। এ উইকেট দিয়ে ক্যারিয়ারে ২৭তম বার ৫ উইকেট পূর্ণ হলো তার। দিনশেষে মুথুসামির সঙ্গে অপরাজিত আছেন কেশভ মহারাজ, তবে প্রথম ইনিংসে এখনও ১১৭ রানে পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগেরদিনের গল্পটা এদিনও পুনরাবৃত্তি হলে অবশ্য এই পিছিয়ে থাকার অঙ্কটা হতে পারতো আরও অনেক বেশি, দক্ষিণ আফ্রিকার গল্পটাও শেষ হয়ে যেতে পারতো এরই মাঝে। এলগার-ডু প্লেসি-ডি কক সেটা হতে দেননি আপাতত।