• ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ
  • " />

     

    রাঁচিতে সেই পুরনো গল্পই লিখলেন রোহিত-রাহানে

    রাঁচিতে সেই পুরনো গল্পই লিখলেন রোহিত-রাহানে    

    ১ম দিন শেষে ভারত ৫৮ ওভারে ২২৪/৩


     

    টস ভাগ্যটা একদমই সুপ্রসন্ন হচ্ছে না ফাফ ডু প্লেসির। এমনই মন্দা যাচ্ছে, আজ শেষ পর্যন্ত ডেপুটি বাভুমাকে পাঠিয়ে দিলেম টস করতে। তাতেও কাজ হলো না, হেরে গেলে বাভুমাও। রাঁচিতে দুর্দান্ত শুরু করেও দিন শেষে ডু প্লেসির মুখে সেই রাজ্যের আঁধারই। রোহিত শর্মা আর আজিংকা রাহানে মিলে যে শেষ পর্যন্ত মঞ্চটা নিজেদের করে নিয়েছেন!

    অথচ শুরুটা কী স্বপ্নের মতোই না হয়েছিল আফ্রিকার! কাগিসো রাবাদা নতুন বলে মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, কেন তাকে এই সময়ের সেরা বোলার মনে করা হয়। শুরু থেকেই সুইং পাচ্ছিলেন। মায়াংক আগরওয়াল কয়েকবার সেই ফাঁদ এড়িয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ধরা দিতে বাধ্য হলেন। বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা খোঁচা দিলেন্ম, তৃতীয় স্লিপে নিচু হয়ে আসা বলটা লুফে নিলেন ডিন এলগার। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে প্রহম উইকেট হারাল ভারত, আগরওয়াল ফিরলেন ১০ রান। চেতেশ্বর পূজারাও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। চার ওভার পর রাবাদার বলটা এবারে ঢুকেছিল ভিতরের দিকে। এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদন, শুরুতে তাতে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার ইলিংওয়ার্থ। কিন্তু রিভিউ নিলেন ডু প্লেসি, তিনটি লাল সংকেতে শেষ ঘণ্টা বেজে গেল পূজারার। কোনো রান না করেই ফিরলেন। দুই ওভার পর ইলিংওয়ার্থ এলবিডব্লু দিয়েছিলেন রোহিতকে, তবে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিয়েছিলেন ভারত ব্যাটসম্যান। ইনসাইড এজ হওয়ায় পার পেয়ে যান রোহিত।

    তবে ভারত বড় ধাক্কাটা খায় আরেকটু পর। আইনরিখ নরশের বলটা ঢুকেছিল ভেতরের দিকে, কোহলি শাফল করতে খেলতে গিয়ে লেগেছিল প্যাডে। নাইজেল লং আঙুল তুলতে সময় নেননি। কোহলি একটু আলোচনার পর রিভিউ নিলেন, রিপ্লেতে দেখা গেল বল লেগ স্টাম্পে চুমু খেয়ে চলে গেছে। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম উইকেট পেলেন নরশে, সেটাও আবার ভারত অধিনায়ককে আউট করে। কোহলি ফিরলেন ১২ রানে, ৩৯ রানে ৩ উইকেট নেই ভারতের।

    ওটুকুই। এরপর একটু একটু করে সময় গড়িয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনাররা এসেছেন, আর তাদের ওপর চড়ে বসেছেন রোহিত আর রাহানে। দ্বিতীয় সেশনে দুজন মিলে যোগ করেছেন ১৩৪ রান। সেটাও আবার কোনো উইকেট না হারিয়েই। এর মধ্যে রোহিত ৮৬ বলে ফিফটি পেয়েছেন, রাহানে পেয়েছেন ৭০ বলে। ড্যান পিয়েটকে পেয়ে আরও মারমুখী হয়েছেন রোহিত, গুণে গুণে মেরেছেন চারটি ছয়। এই সিরিজেই ১৭টি ছয় হয়ে গেছে রোহিতের, এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি ছয়ের বিশ্বরেকর্ডও হয়ে গেছে। সেঞ্চুরি ঘনিয়ে আসার সঙ্গে রাঁচির আকাশও কালো আসছিল। রোহিত প্রার্থনা করছিলেন যেন খেলা বন্ধ না হয়, সেটা বিফলে যায়নি। সিরিজে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন, গাভাস্কারের প্রথম ভারত ওপেনার হিসেবে এক সিরিজে পেয়েছেন তিনটি সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এক সিরিজে কোনো ভারত ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরিও হয়ে গেছে। চা বিরতির পর রাঁচিতে নেমেছে বৃষ্টি, শেষ পর্যন্ত ঘন্টা দেড়েক বাকি থাকতেই পন্ড হয়ে গেছে দিনের খেলা। দিন শেষে ১১৭ রানে অপরাজিত রোহিত, রাহানে ব্যাট করছিলেন ৮৩ রানে।