দক্ষিণ আফ্রিকার দিনে বাংলাদেশের স্বস্তি শেষ বিকেলের দুই উইকেট
২য় টেস্ট, কায়বেরহা (টস- দ. আফ্রিকা/ ব্যাটিং)
দক্ষিণ আফ্রিকা- ২৭৮/৫, ৯০ ওভার (এলগার ৭০, বাভুমা ৬৭,রিকলটন ৪২, তাইজুল ৩/৭৭, খালেদ ২/৫৯)
১ম দিন, স্টাম্পস
সেইন্ট জর্জেস পার্কে ব্যাটিং পাওয়ার আনন্দে দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো দিনই খেলে গেল ওয়ানডে মেজাজে। তবে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটারকেই দিন শেষ হওয়ার আগে ফেরাতে পেরে বাংলাদেশও হয়ত একেবারে নাখোশ থাকবে না। হতাশাজনক প্রথম সেশনের পর ডিন এলগার, কিগান পিটারসেন বা টেম্বা বাভুমার কাউকেই ইনিংস লম্বা করতে না দেওয়াতে কিছুটা হলেও তৃপ্তি পেতে পারে বাংলাদেশ। তবে দ্রুতগতিতে রান তুলতে পারায় সেটা নিয়ে হয়ত খুব একটা বিচলিত হবে না প্রোটিয়ারা।
প্রোটিয়াদের এই অবিচল থাকার ভিত গড়ে দিয়েছিলেন তাদের অধিনায়কই। ওপেনিং সঙ্গী সারেল আরউই ফিরে যেতে পারতেন শুরুতেই খালেদ আহমেদের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে। তবে আম্পায়ার বাংলাদেশের ডাকে সাড়া না দিলে রিভিউ নিতেও ইতস্তত বোধ করেন মুমিনুল হক; পরে যেটা পরিষ্কার আউটই দেখা যায়। অবশ্য সেই আক্ষেপের সুযোগ না রেখে কিছুক্ষণ পরে খালেদই উইকেটের পিছে তালুবন্দি করিয়ে ফেরান আরউইকে। কিগান পিটারসেনকে নিয়ে এরপর নিশ্চিন্তে প্রথম সেশন পার করে দেন এলগার। বাংলাদেশের বোলারদের লাইন এলোমেলো করে প্রথম সেশনেই ১০৭ রান তুলে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বোলারদের অস্বস্তির এক দিনে স্বস্তির এক পশলা হাওয়া নিয়ে এসেছিলেন খালেদ আর তাইজুল ইসলাম। টানা এক জায়গায় বল করে যাওয়ার ফলও তাইজুল ঠিকই পান দ্বিতীয় সেশনে। অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে দ্রুতগতিতে তাইজুলের ফেলা বল কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৭০ রানে ফেরেন এলগার। পরের ওভারেই এবাদত হোসেনকে টানা তিন চার মেরে পিটারসেন অবশ্য সাথে সাথেই বার্তা দেন, তারা একই গতিতে খেলে যাবেন। বাংলাদেশের বোলারদের অবিন্যস্ত লাইন-লেংথও তাদের সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে বেশ সাহায্য করেছে। বৃষ্টিতে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর তাইজুলের ওপরও পিটারসেন চড়াও হতে চাইলেই ঘটে বিপদ। বেরিয়ে এসে তাইজুলকে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। আম্পায়ার সেবারও আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে ফল পায় বাংলাদেশ; যদিও সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে পিটারসেন ছিলেন যারপরনাই বিরক্ত। অন্য প্রান্তে বাভুমা ততক্ষণে যদিও থিতু হয়ে গিয়েছেন। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাই পৌঁছায় ১৯৯ রানে।
রায়ান রিকলটনকে নিয়ে এরপর দারুণ খেলছিলেন বাভুমা। ফিফটি পূর্ণ করে আরও একবার ইনিংস লম্বা করারই সংকেত দিচ্ছিলেন। ২০১০ সালের পর এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম চার উইকেটেই তাদের ব্যাটাররা পূর্ণ করে ৫০+ রানের জুটি। তবে নতুন বল নেওয়ার সময় এলেও জুটি ভাঙার জন্যই স্পিনারদের বল করিয়ে যান মুমিনুল। দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বোলার তাইজুল ফলও দিলেন ঠিকই। এবারও আম্পায়ার বাংলাদেশের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নিয়েই পেতে হয় উইকেট। রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে তাইজুলের বল রিকলটনের গ্লাভস ছুঁয়ে ইয়াসির আলীর হাতে চলে ৪২ রানে থামেন তিনি। নতুন বল নেওয়ার পরেই অবশ্য বাংলাদেশ পায় বাভুমার উইকেট। পুরো দিনেই বেশ কিছু জায়গায় ভাগ্য সহায় হয়নি খালেদের। তবে নতুন বল হাতে নিয়ে তা কিছুটা হলেও ফিরে পেলেন তিনি। স্লিপে নেওয়া নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ক্যাচে বাভুমাকে ৬৭ রানে ফেরান খালেদ। খালেদ-তাইজুলে তাই শেষ বিকেলে কিছুটা হলেও হাফ ছেড়ে বেঁচেছে বাংলাদেশ। তবে প্রায় তিনশো পূর্ণ করা দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় দিনে হয়ত সেটা নিয়ে খুব বেশি ভাববে না।