খেলাচিত্র -২: দি কাপ
পোস্টটি ১৯৬৩ বার পঠিত হয়েছেমূল নামঃ ফোরপা
ইংরেজি নামঃ দি কাপ
চিত্রনাট্য ও পরিচালনাঃ খিয়েন্তসে নরবু
দেশঃ ভুটান
ভাষাঃ তিব্বতি, হিন্দি
মুক্তিসালঃ ১৯৯৯
অভিনয়েঃ লামা চোনযোর (আশ্রম প্রধান খেম্পো) ওরগিয়েন টবগিয়াল (গেকো), নেতেন চকলিং (লোদো), জামিয়াং লদ্রো (ওরগিয়েন)।
ফ্রান্সে চলছে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ। রঙিনতম বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছে পুরো বিশ্ব। রোনাল্ডো, জিনেদিন জিদান, রবার্তো ব্যাজ্জিও, গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা, লিলিয়ে থুরাম, ফ্যাবিয়ান বার্থেজ, রবার্তো কার্লোস, ডেভর সুকার, ডেনিস বার্গক্যাম্প, এডগার ডেভিডস, অ্যারিয়েল ওর্তেগা, ডেভিড বেকহ্যাম - কে নেই সেখানে? তারকাদের ভিড়ে অন্য কোন দিকে চোখ ফেরানো মুশকিল।
গল্পটা ’৯৮ বিশ্বকাপ নিয়ে নয়, তিব্বত থেকে নির্বাসিত একদল সন্ন্যাসী নিয়ে; যারা ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আশ্রম নির্মাণ করে বসবাস করছেন। কিন্তু নিরামিষভোজী সন্ন্যাসীদের আপাত নিস্তরঙ্গ জীবনে হঠাৎ করেই আসে ফুটবল। মাঠের দুর্দান্ত সব শটগুলো নাইলনের জাল ছিড়ে দুর্গম হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই আশ্রমের ধর্মীয় শৃঙ্খলার শক্ত দরজাতেও আঘাত হানতে শুরু করে।
‘‘Buddhism is their philosophy. Soccer is their religion” – ইতিহাসের প্রথম ভুটানি চলচ্চিত্র ‘দি কাপ’ এর ট্যাগলাইন এটি। কিন্তু আদৌ কি মানুষের জীবনে এরকম কিছু সম্ভব?
'দুই সভ্য জাতি যখন একটি বলকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ করে ওটাই ফুটবল’ – এই সংজ্ঞায় বিশ্বাসী প্রবীণ লামারা মুখোমুখি হয় সৌহার্দ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের আশ্রমের চারপাশের দ্রুত পরিবর্তনশীল জগতে বুদ্ধের বাণী পৌঁছে দেওয়ার বেশ কঠিন এক চ্যালেঞ্জের।
কে জিতবে? ধর্মীয় ঐতিহ্য নাকি ফুটবল? নাকি ড্র হবে ম্যাচ?
চলুন, জেনে আসি ১৯৯৯ কান চলচ্চিত্র উৎসবের ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট বিভাগে প্রিমিয়ার হওয়া চলচ্চিত্রটির এদিক-সেদিক।
কাহিনী সংক্ষেপ
সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই চলচ্চিত্রের কাহিনী জুড়ে আছে ভারতে নির্বাসিত একদল তিব্বতি ভিক্ষু। তিব্বত থেকে নির্বাসিত হয়ে ঐ ভিক্ষুরা উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের গ্রাম বীরে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং আশ্রম স্থাপন করেন। শান্তিপ্রিয় লামা খেম্পো এবং নিষ্ঠাবান শিক্ষক গেকোর তত্ত্বাবধানে নবীন শিক্ষানবিশ ভিক্ষুরা বৌদ্ধ ধর্মের নানা দিক এবং সন্ন্যাসব্রত সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করে। কিন্তু নবীন ছাত্ররা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের চেয়ে ফুটবল নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। শিক্ষা গ্রহণের সময় গোপনে বিভিন্ন ছেলেমানুষি কাণ্ডকারখানা, প্রার্থনার সময় চিরকুট চালাচালি তো আছেই, কিশোররা কিছুটা আলাভোলা গোছের লামা যোগী-কেও উত্যক্ত করতে পিছপা হয় না। অবসরে ফুটবল খেলে এমনকি বাজিও ধরে নবীন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষানবিশদের মধ্যে লোদো আর ওরগিয়েন হল সবচেয়ে মারাত্নক ফুটবল ফ্যান। অস্থির, নাছোড়বান্দা এবং কিছুটা বিদ্রোহী প্রকৃতির চৌদ্দ বছরের বালক ওরগিয়েন ফুটবল নিয়ে সারাক্ষণ মাতোয়ারা থাকে। খেলা দেখার জন্য শত কষ্ট স্বীকার করে সে, বাজার করার মত বিরক্তিকর দায়িত্ব সানন্দে গ্রহণ করে। ওরগিয়েনের ক্ষুদ্র ঘর ফুটবল ম্যাগাজিন থেকে পাওয়া ক্লিপ, ফটোগ্রাফ, পোস্টার দিয়ে রীতিমত প্লাস্টার করা! ও আড়াই হাজার বছরের ঐতিহ্যমাখা লাল এবং কমলা সন্ন্যাসী গাউনের ভেতরে পরিধান করে একটি আধুনিক টিশার্ট যাতে প্রিয় তারকা রোনাল্ডোর নাম লেখা।
ওইদিকে ফুটবলের প্রতি এই টান দেখে প্রবীণ ভিক্ষুরা বেশ নাখোশ। ঐতিহ্যবাহী সন্ন্যাস জীবনধারায় যখন আধুনিক পশ্চিমা সংস্কৃতির সূচনা হয়, কিভাবে তাকে গ্রহণ করা উচিৎ তা নিয়ে হিমশিম খেতে থাকে অভিজ্ঞরা। সেই হিমশিম খাওয়া সময়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং ফুটবলের প্রতি অদম্য ভালোবাসার মধ্যবর্তী টানাপোড়েনের শিকার হয় আশ্রমের সবাই।
ঐসময় ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই গ্রামে তিব্বত থেকে পালিয়ে আসে পালদেন, নিইমা নামের দুই কিশোর; সন্ন্যাসব্রত গ্রহণের অভিলাষে। কিন্তু ওরগিয়েনদের পাল্লায় পড়ে কুনসাং, পালদেন, নিইমা এই ফুটবল পাগল কিশোরদের দল ভারী করতে থাকে। গোপনে চলা এই ফুটবলম্যানিয়া আরও বাড়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সময়।
এমনকি রাতের বেলা আশ্রমের নিয়মকে কাঁচকলা দেখিয়ে পাশের গ্রামের দোকানে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখাও বাদ যায় না। ফ্রান্স-ইতালির ম্যাচ একইভাবে দেখতে গিয়ে তারা ধরা পড়ে গেকোর কাছে। এজন্য এক সপ্তাহ সবার জন্য রান্না করার শাস্তি পেয়েও তাদের বিকার হয় না।
এরপরই ঘটে চমক!
হঠাৎ সবাইকে হতভম্ব করে সাহসী এক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে ওরগিয়েন এবং লোদো। ব্রাজিল বনাম ফ্রান্সের মধ্যকার অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফাইনাল আশ্রমে বসে দেখার অনুমতি চায় আশ্রম প্রধানদের কাছে। সেজন্য প্রথমবারের মত আশ্রমের ভেতরে টেলিভিশন এবং স্যাটেলাইট ডিশ ভাড়া করে আনার প্রস্তাব দেয়। বিনিময়ে ওরা কথা দেয়, ভালো করে পড়াশোনা করবে, নিয়ম মেনে চলবে। কিছুটা দ্বিধায় পড়েন খেম্পো-গেকোরা। তবে শেষপর্যন্ত তারা সায় দেন এই প্রস্তাবে।
যখন গেকো জিজ্ঞেস করেন, কি করে ভাড়া করার অর্থ যোগাড় করবে, কিছু না ভেবেই ওরগিয়েন উত্তর দেয়, চাঁদা তুলবে সবার কাছ থেকে।
কিন্তু নিরামিষ জীবনে অভ্যস্ত প্রায় অর্থহীন আশ্রমবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে, এমনকি নিজের সঞ্চিত সব দিয়েও ওরগিয়েন পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থের সংকুলান করতে পারে না। এখন উপায়? ফুটবলের প্রতি অদম্য ভালোবাসায় কখনো হার না মানা ওরগিয়েন, লোদোদের স্বপ্ন স্বপ্ন-ই থেকে যাবে?
জানতে চাইলে এক বসাতে দেখে ফেলতে পারেন ১৯৯৯ সালের সাড়া জাগানো এই চলচ্চিত্রটি।
রিভিউ
চলচ্চিত্রের একদম শুরুর দৃশ্যেই ক্যামেরার প্যান স্থির হয় বেশ কিছু পাথরের উপর, যাতে খোদাই করা আছে প্রাচীন তিব্বতি শাস্ত্রীয় নীতিকথা। আর তার কয়েক মুহূর্ত পরেই ক্যামেরায় চোখ রেখে আমরা দেখতে পাই - নির্বাসিত তিব্বতি আশ্রমের ধুলোমাখা উঠোনে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মীয় এক উপাদান – কোকাকোলা ক্যান।
ওহ, ধর্মের নামটা কি ভাবছেন তো? – আধুনিকতাবাদ!
আশ্রমের কিশোররা টিনের এই কোকাকোলা ক্যানটিকে ফুটবল হিসেবে ব্যবহার করে যা কিছুক্ষণ পরে বাজেয়াপ্ত হয় শিক্ষক গেকো কর্তৃক। চলচ্চিত্রটি দেখে বারবার মনে হয়েছে, এটা হলিউডের কোন হাইস্কুল কমেডি হত, অভিজ্ঞ মধ্যবয়সী এই ভদ্রলোক হতেন সহকারী অধ্যক্ষ!
তো যাই হোক, আলোচনায় ফিরে আসি আবার। গেকো আশ্রম প্রধান খেম্পোর নজরে আনে ক্যানটিকে। শেষে এর ঠিকানা হয় ভবিষ্যৎপ্রবক্তা এক লামার ঘরে, যিনি আবার এটাকে রূপান্তর করেন মোমবাতিদানিতে। অর্থাৎ তখন সেই ক্যান পবিত্র বস্তু!
‘দি কাপ’ চলচ্চিত্রের মূল দৃষ্টিভঙ্গির মেটাফোর (রূপক) হিসেবে তুলে ধরা যায় এই শূন্য কোকাকোলার ক্যানটির মাধ্যমে– দুর্গম প্রান্তরেও বিশ্বায়নের পালাবদল আর পবিত্র এবং অপবিত্রের মধ্যকার সম্পর্ককে তুলে ধরে।
এটা গেল, একটা দিক। চলচ্চিত্রে দেখা যায়, ছাত্রদের অধিকাংশই উচ্ছ্বসিত এবং প্রাণবন্ত মানসিকতার অধিকারী, যারা দেয়ালে হিজিবিজি গ্রাফিতি আঁকে, প্রার্থনা করার সময় একে অপরের সাথে মজাদার সব দুষ্টুমি করে এবং প্রতিনিয়ত তাদের লক্ষ্য সদাসতর্ক গেকোকে নাস্তানাবুদ করা। তবে তাদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য – ফুটবলকে তারা প্রত্যেকেই ভালোবাসে। এদের নাটের গুরু হল ওরগিয়েন নামের বালক যে, আড়াই হাজার বছরের ঐতিহ্যমাখা লাল এবং কমলা সন্ন্যাসী গাউনের ভেতরে পরিধান করে একটি আধুনিক টিশার্ট যার উপর তার প্রিয় খেলোয়াড় ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনালদোর নাম লেখা।
আর কঠোর আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলা এবং প্রাচীন ধর্মীয় ঐতিহ্য মেনে চলার উদাহরণ হয়ে থাকা ভিক্ষু খেম্পো ও গেকো প্রায় পুরোটা সময় জুড়ে বাইরের প্রভাব থেকে কিশোরদের রক্ষা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
ওরগিয়েন ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ফাইনালের সময় একটি স্যাটেলাইট ডিশ এবং একটি টেলিভিশন প্রথমবারের মত আশ্রমের প্রাঙ্গনে আনার বিশদ পরিকল্পনার রিং মাস্টার। যদিও প্রথমে গেকো ছেলেদের এই পরিকল্পনায় ভেটো দেন কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে খেম্পোকে ফুটবল বোঝাতে গিয়ে নিজস্ব সংজ্ঞা খুঁজে বের করেন। 'দুই সভ্য জাতি যখন একটি বলকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ করে ওটাই ফুটবল’। এই সংজ্ঞা শুনে আশ্রম প্রধান মত দেন, যেহেতু ফুটবল শুনতে বেশ নিরীহ এবং এটার সাথে যৌনকর্ম জড়িত নয়, সেক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে!
এই চলচ্চিত্রে বিশ্বের প্রত্যন্ত কোণে পশ্চিমা ভোক্তা সংস্কৃতির অনুপ্রবেশকে দেখা হয়েছে সরলভাবে, একইসাথে উদযাপনীয় বস্ত হিসেবে আবার এমন একটি আশংকাজনক শক্তি হিসেবে, যা সেকেলে ঐতিহ্য, প্রথা ও প্রাচীন বিশ্বাস নিয়ে গড়া সিস্টেমকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
বৌদ্ধ লামা খিয়েন্তসে নরবুর পরিচালিত ‘দি কাপ’ তিব্বতি ভাষায় বানানো প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। ভালো লাগতে বাধ্য খুবই জীবনধর্মী এই চলচ্চিত্রে বাস্তব কাঠখোট্টা জীবনের রসবোধ, বিশ্বায়নের যুগে সার্বজনীন বিষয় - প্রাচীন প্রথা-রীতি-নীতির সাথে আধুনিকতার দ্বন্দ্ব, যে কোন মানুষের অধ্যবসায়, পরিশ্রমের মূল্য – প্রত্যেকটি দিকই কাহিনীর ভেতর থেকে আপনাআপনি উঠে আসে একেবারেই বাস্তব হয়ে।
সেমি-ডকুমেন্টারি স্টাইলে চিত্রায়িত ‘দি কাপ’ তিব্বতি সন্ন্যাসীদের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকেও অগ্রাহ্য করেনি। লামা খেম্পো চীনাদের দ্বারা দখলকৃত মাতৃভূমি তিব্বতে ফেরার জন্য আকুলতা প্রদর্শন করেন আর কিশোররা হতাশা প্রকট হয় তিব্বত জাতীয় ফুটবল দল না থাকায় যাদের তাঁরা অকুণ্ঠচিত্তে সমর্থন দেওয়ার স্বপ্ন দেখে।তিব্বতের মানুষ চীনা আধিপত্যের বিরুদ্ধে তাদের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের জন্য বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। দি কাপও একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক তৎপরতা দেখানোর পাশাপাশি ধর্মীয় বিশ্বাসে ভাস্বর।
নরবু বৌদ্ধধর্মের সিনেমাটিক চিত্রায়নে যেমন শ্রদ্ধা দিকে দেখিয়েছেন প্রাচীন বিশ্বাসের প্রতি, তেমনি প্রধান দুই চরিত্র – গেকো এবং ওরগিয়েনের মাঝে মানবিক ছোঁয়া, সরল, হাস্যরস এবং নির্দোষ দুষ্টুমি রেখে প্রমাণ করেছেন আশ্রমবাসী ভিক্ষুদের মধ্যেও জীবনের রসবোধ বিদ্যমান।
নবীন পরিচালক একেবারেই অপেশাদার অভিনয় কুশলীদের কাছ থেকে সত্যিকার অর্থেই বেশ কিছু প্রশংসনীয় অভিনয়শৈলী তুলে আনতে পেরেছেন। বিশিষ্ট তিব্বতি ধর্মতত্ত্ববিদ টবগিয়াল এবং সন্ন্যাসী লোদ্রোর নিশ্ছিদ্র রসবোধ এবং অভিনয় দক্ষতা চলচিত্রটিকে অনন্য মহিমা দান করেছে। যদি আধ্যাত্মিক দায়িত্বে অঙ্গীকারবদ্ধ না থাকলে, রোনাল্ডো হবার স্বপ্ন দেখা ওরগিয়েন চরিত্রে রূপদানকারী লোদ্রো আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র তারকা হত নিঃসন্দেহে।আর সমাপ্তিটাও বেশ পরিচালকের বুদ্ধিদীপ্ত দক্ষতায় ভালোই হয়েছে।
বৌদ্ধ দর্শনে প্রশিক্ষিত পরিচালক খিয়েন্তসে নরবুর ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা এবং চলচ্চিত্রের প্রতি প্রেমের সামঞ্জস্য বজায় রাখার নিজস্ব অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে কাজে লেগেছে। নরবু ভারত, ভুটান ও সিকিমের বিভিন্ন বৌদ্ধ কলেজ ও ধ্যানকেন্দ্রের আধ্যাত্মিক পরিচালক এবং উনবিংশ শতাব্দিতে নেতৃস্থানীয় লামার তৃতীয় অবতার হিসেবে স্বীকৃত। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘দি কাপ’ নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে, তাঁর রক্তে পরিচালনার মুন্সিয়ানা মিশে আছে।
সাউন্ডট্র্যাক
একদম শুরুতে আর শেষে তিব্বতি একটা গান মূল সাউন্ডট্র্যাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। মনে গেঁথে যাওয়ার মত একটা ট্র্যাক। দুর্দান্ত! অন্তত এই ট্র্যাকটা শুনে দেখবেন সময় করে। এছাড়া দি অ্যাঞ্জেলস ব্যান্ডের ‘কট ইন দি নাইট’ ট্র্যাকটির ইন্সট্রুমেন্টাল ভার্সনও আছে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে।
পুরষ্কার
- ফিপ্রেসকি অ্যাওয়ার্ড - পুসান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
- ওয়ান ফিউচার অ্যাওয়ার্ড - মিউনিখ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল,
- সেরা আন্তর্জাতিক ফিল্ম (নমিনেশন) - ইউরোপিয়ান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস
টীকা
- লোদো চরিত্রে অভিনয় করা নেতেন চকলিং বাস্তব জীবনে গেকো চরিত্রে রূপদানকারী ওরগিয়েন টবগিয়ালের পিতা এবং বিখ্যাত লামা ৩য় নেতেন চকলিং রিনোপকের তরুণ অবতার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০০৪ সালে ওরগিয়েন টবগিয়াল নেতেন চকলিং এর কাছে এই আশ্রমের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
- তাঁর পরিচালিত দ্বিতীয় ফিল্ম – ট্র্যাভেলার্স এন্ড ম্যাজিশিয়ানস (২০০৩) ভুটানে পুরোপুরি চিত্রায়ন হওয়া প্রথম ফিচার ফিল্ম।
- ২০১৩ সালে বাঙালি লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘রক্ত আর কান্না’ উপন্যাস অবলম্বনে ‘ভারাঃ আ ব্লেসিং’ নামের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন নরবু। উৎসর্গ করেন নিজের প্রিয় পরিচালক সত্যজিৎ রায়কে।
- 0 মন্তব্য