স্লেজিংশিল্পী মার্ভ হিউজ
পোস্টটি ৩৯৯৭ বার পঠিত হয়েছেওভারের শেষ বলে তুলে নিলেন কার্টলি অ্যামব্রোসকে। আবার যখন বল করতে আসলেন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪৪৯। ওভারের প্রথম বলে প্যাটারসনকে আউট কট অ্যান্ড বোওল্ড করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করে সেখানেই থামিয়ে দিলেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন পরের ইনিংসে ব্যাট করতে নামল তখন বোলিঙে এসে নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই আবার উইকেট তুলে নিলেন। এবারের শিকার গর্ডন গ্রিনিজ। অর্থাৎ ৩ ওভার মিলিয়ে হ্যাট্রিক করে ফেললেন। অথচ ম্যাচের পরে বলেছিলেন, হ্যাট্রিকের ব্যাপারটা নাকি তাঁর মাথাতেই ছিল না।
তাঁর নাম মার্ভ হিউজ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ফার্স্ট বোলার। নামের মতো শরীরটাও ছিল ‘হিউজ’। বোলার হিসেবে কেমন ছিলেন তা বোঝা যাবে ৫৩ টেস্টে ২১২ উইকেট এই পরিসংখ্যানে। ৩ ওভার মিলিয়ে হ্যাট্রিকের কথা তো বললামই। তবে তাঁর হাতের চাইতেও বেশী চলতো মুখ। স্লেজিং যদি হয় একটি শিল্প তবে নিঃসন্দেহে মার্ভ হিউজ সেই শিল্পের একজন ‘উঁচুদরের’ শিল্পী। তাঁর স্লেজিং নিয়ে এতো ঘটনা পেলাম যে সবগুলো উল্লেখ করা সম্ভব হলো না; তবে সেরা তিনটের কথা বলা যায়।
১। অ্যাশেজের কোন এক ম্যাচে ব্যাট করছিলেন ইংল্যান্ডের রবিন স্মিথ। বোলিং করছিলেন মার্ভ হিউজ।
হিউজের করা একটি বল রবিন খেলতে পারলেন না। তাঁকে উসকানোর জন্য মার্ভ বললেন, “রবিন, তুমি ব্যাটিং তো না, বা* পারো।
রবিন তখন কিছু বললেন না।
পরের বলে রবিন সপাটে ব্যাট চালালেন। বল সীমানার বাইরে।
এবার রবিন এগিয়ে এসে মার্ভ হিউজকে বললেন, “ হেই মার্ভ, আমার মনে হয় আমরা দুজন ভালো একটা জুটি হতে পারবো। আমি কোন বা*র ব্যাটিঙই পারি না, তুমিও কোন বা*র বোলিঙই পারো না।”
এই ঘটনার ৪ বছর পরে এই দুজন আবার মুখোমুখি হন। মার্ভ হিউজ আবারো রবিনকে উসকানোর জন্য বলেন, “তোমাকে আমি শেষ বল করেছিলাম ৪ বছর আগে। এই ৪ বছরে তোমার কোন উন্নতিই হয়নি।”
এই কথা বলার পরে মার্ভ যে বলটা করলেন, রবিন সেটাতে মারলেন ৪।
রবিনঃ “তোমারও হয়নি।”
২। মার্ভ হিউজের ধারালো জিভের কারণে কেউ তাঁর সাথে লাগতে চাইতো না। কিন্তু জাভেদ মিয়াঁদাদ একবার সেধে লাগতে গেলেন।
মিয়াঁদাদঃ “ মার্ভ, ইউ আর আ বিগ, ফ্যাট বাস কন্ডাক্টর।”
কয়েক বল পরেই মিয়াঁদাদ আউট হয়ে গেলেন। আউট হয়ে যখন মাঠ ছাড়ছেন তখন মার্ভ সামনে এসে বললেন, “টিকিট প্লিজ।”
৩। ক্যারিবিয়ানে খেলা হচ্ছিলো। মার্ভের ৪ বলে পরপর ৪টা বাউন্ডারি মারলেন ভিভ রিচার্ডস।
মার্ভের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। তিনি ভিভের দিকে এগিয়ে গেলেন।
তারপর বিকট শব্দে একটা পা* দিলেন।
ভিভকে বললেন, “ক্ষমতা থাকলে এটা মাঠ ছাড়া করে দেখাও।”
বেপরোয়া ভিভ পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে গেলেন মার্ভের কাজ দেখে।
পরের ৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকলো। কারণ আর কিছুই না, অট্টহাসি।
আজ এই ভদ্রলোকের জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন, মার্ভ।
আচ্ছা, অবসর নেয়ার পরে উনি কাকে স্লেজ করেন?
- 0 মন্তব্য