তাহলে কি এবার...?
পোস্টটি ৫৯২৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
ব্লগের নীতিমালা
ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
শ্রীলংকার সাথে বাংলাদেশের দূরত্বটা দু'হাজার কিলোমিটারেরও বেশী। উড়াল পথে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে, দ্বীপ দেশটিতে পৌঁছাতে। বেঙ্গালুরু থেকে অবশ্য দূরত্বটা কম, মাত্র সাতশ কিলোমিটার মতো । বেঙ্গালুরু ম্যাচের কোনো প্রভাব গলে পড়বে কি না, কে জানে!
শ্রীলংকা আর বাংলাদেশের মধ্যে পরিবেশগত তেমন পার্থক্য নেই বললেই চলে। পিচ-পরিবেশ তাই অনেকটাই চেনা, বাংলাদেশের জন্য। যদিও প্রতিপক্ষ সেই চেনা জানা শ্রীলংকা নয়, কিছুটা আনকোরা, কিছুটা অনভিজ্ঞ এবং কিছুটা তরুণ তো বটেই!
তাই এবার বাংলাদেশ দলে যোগ হয়েছে 'অভিজ্ঞ' ও 'ফেভারিট' হওয়ার আত্নবিশ্বাস। স্বাগতিক হওয়ার সুবিধাটুকু বাদ দিলে, শ্রীলংকার বদলে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকে শক্তিমত্তা বিবেচনায়।
সময়টা আবার ঠিক স্বাগতিক-অনুকূল নয়।
ঘরোয়া আসর পিএসএলের কারণে পাকিস্তান আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনুপস্থিত। তাই পাকিস্তান ছাড়া, অন্য দলগুলো এ সময় ঠিকই মাঠে ছিল।
দলগুলোর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের লড়াইগুলোতে দেখা যায়, স্বাগতিকদের বদলে ছড়ি ঘুরিয়েছেন সফরকারী দলই।
ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের জল গড়ানোর মতো, জিম্বাবুয়াইনদের চোখেও জল গড়িয়ে দিয়ে শেষ হাসি হেসেছে আফগানিস্তান। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে জিম্বাবুয়েকে চূড়ান্ত লজ্জা উপহার দিয়ে।
তাসমান সাগর পাড়ে ডি ভিলিয়ার্সরা করেছেন জয়োৎসব। সেখানেও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড হাসতে পারেনি শেষ হাসি। ক্যারিবীয়ান সাগর পাড়েও, স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে সফররত ইংলিশ ক্রিকেট দল।
আর বিরাট কোহলির মহাভারতকে স্মরণকালের ভয়াবহ ধাক্কায় বিপর্যস্ত করে দিয়েছে স্টিভ স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। রাহানে-পূজারার সিরিজ সর্বোচ্চ জুটিতে যদিও আপাতত ভারত এই টেস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, তবে এখনই নিশ্চিন্তে শ্বাস ফেলার জো নেই কুম্বলের শিষ্যদের। গত তিন ইনিংসের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের ইনিংসে মড়ক লাগতে পারে যে কোন সময়েই।
ক্রিকেট দুনিয়ার চারটি স্থানে যখন, স্বাগতিকদের বদলে সফরকারীরাই ছড়ি ঘুরিয়েছেন, জিতেছেন, রাজত্ব করেছেন, হেসেছেন শেষ হাসি। তবে ভারত মহাসাগরের উপকূলে কেন সফরকারীরা শেষ হাসি হাসবেন না?
মাহেলা নেই, দিলশান নেই, উইকেটে আঠার মতো লেগে থাকা সাঙ্গাকারা নেই। নেই অনেকেই, তবে আছেন একজন রঙ্গনা হেরাথ। তিনিই শ্রীলংকার তরুণ দলটির দলপতি, এবং বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকীও।
পূর্ণ শক্তির বাংলাদেশ দল। স্পিন-পেস মিলিয়ে দারুণ বোলিং আক্রমণ। ব্যাটিংয়ে আছে গভীরতা, আছে ভারসাম্য। শ্রীলংকা ক্রিকেট পালাবদলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, মাথা তুলে দাঁড়ানোর সংগ্রাম করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে দারুণ স্থিতি, প্রতিভা আর অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে টেস্টেও নিজেদের উঠতি শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংকল্পে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
গলেই আছে '৬৩৮' এর সুখস্মৃতি। প্রথমবারের মতো দ্বিশতক আর ১৯০ এর সেই মহাকাব্য।
ওদের নেই অনেক কিছু, আমাদের আছে। সময়টাও নেই স্বাগতিকদের অনুকূলে। তাহলে কি এবার...।
এবার কি?
সব কথা সরাসরি বলতে নেই। আপনিও আশা করুন, আমিও আশা করি। আমরা আশা করি, প্রার্থনা করি।
হয়তো হয়ে যাবে এবারই... ।
- 0 মন্তব্য