• ফুটবল

কাকা - স্বপ্ন, বাস্তবতা

পোস্টটি ১১৭৯৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

"জীবন এত ছোট যে কাকার খেলা দেখার সাধ মিটলনা"
- একটা ফেসবুক পোস্টের কমেন্টবক্সে আহমেদ শাহরিয়ার এর কমেন্ট এটা।  ছোট একটা লাইনে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।  কাকার ক্যারিয়ারের গ্রাফটা এত অনাকাঙ্খিত ভাবে নিচের দিকে নেমেছে যে আসলে কিছু বুঝে উঠার আগেই যেন সব ঘটে গেল।  অনেকটা ভোরের স্বপ্ন।  মায়ের চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভাঙ্গার পর চিন্তা করছি কোথায় আমি? ২০১০ বিশ্বকাপে কাকা বিশ্বের সেরা প্লেয়ার হিসেবে খেলতে গিয়েছিলেন,  অবশ্য সাথে মেসি এবং রোনালদোর নামও ছিল।  তিনজনই আগের তিন বছর ব্যালন ডি অর জিতেছেন। তবে কাকার সাথে বাকি দুজনের পার্থক্য ছিল (তখন পর্যন্ত) কাকা জাতীয় দলেও ক্লাবের সমান উজ্জ্বল। কিন্তু ওই বিশ্বকাপ শেষে যা ঘটেছে তা ফুটবল ভক্তকুলের একটা বিশাল অংশকে এখনো পর্যন্ত আক্ষেপের বৃত্তে ফেলে রেখেছে।

কাকা হচ্ছেন মিডফিল্ডার।  রিয়ালমাদ্রিদ এর নতুন গ্যাল্টিকোজের নাম্বার টেন। দুইবার ব্যার্থ হয়ে তৃতীয়বারের চেষ্টায় যাকে দলে ভিড়িয়েছে স্পেনিশ জায়ান্ট, যদিও ৮ নাম্বার জার্সি গ্রহণ করেছেন তারপরও গ্যালাক্টিকোস পার্ট-১ এর মধ্যমাঠের সেনাপতি জিদানের সাথে তুলনাটা চলে আসতই।  তুলনাটা আসলে খেলার স্টাইল এর জন্য না,  এটা অনেকটা নতুন কাউকে খোজে পাওয়া যার মাঝে আগের সম্রাটের ছায়া খোজা যায়।  ধরুন, একসময় আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে কোন নাম্বার টেন আসলেই সমর্থকরা চিন্তা করে এই বুঝি পেয়ে গেলাম নতুন ম্যারাডোনা।  খেলার স্টাইল যাই হোক - সবাই সেই প্লেয়ারের মাঝে খোজে নিতে চায়ত ম্যারাডনার সেই বল নিয়ে কারিকুরি কিংবা ড্রিবল করে একটার পর একটা নকাউট স্টেজ পার করানো গোল।  কাকাকে পেয়েও আশাটা সেরকম ছিল অনেকটা।  কারণ এসি মিলানকে ২০০৬-০৭ মৌসুমে যেভাবে নিজের কাঁধে নিয়ে এথেন্স থেকে জয়ের মেডেল নিয়ে ফিরেছেন সেভাবেতো রিয়ালমাদ্রিদকেও একসময় বহন করেছিলেন জিদান।  আর সাথে করেতো আরেক রাজপুত্র রোনালদোকেও আনা হয়েছে।  দুই ফুটবল জিনিয়াস মিলে তৈরি করবে ফুটবলের এক নতুন রুপকথা।  কত আশা!  কত স্বপ্ন!!  কিন্তু বিধাতা ফুটবলকে লিখেছিলেন অন্যভাবে।

মাঠের ফুটবলতো ফিফা গেম না যে ভাল ভাল প্লেয়ারকে জায়গামতো সেট করলাম আর প্রতিপক্ষ উড়ে গেল।  ২০০৯/১০ সময়কালীন বার্সেলোনা দল গঠনের সুচনা হয়েছিল আরো ১০ বছর আগে।  কিংবা ২০০৭ এর মিলান দল তৈরি হওয়া শুরু করেছিল ৪/৫ বছর আগে থেকে।  ঠিক তেমনি ২০০৯ এ পেরেজ কাকা রোনালদো কে নিয়ে যে স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন সেটার ফল পাচ্ছেন এখন।  দুঃখের কথা সেখানে নেই ফুটবলের নতুন প্রজন্মের প্রথম দূতের।  

কাকা হয়ত রিয়াল মাদ্রিদে জিদানের এক বিন্দুও প্রতিস্থাপন করতে পারেনি কিন্তু সত্যিকার রিয়াল্মাদ্রিদ ফ্যানর যেভাবে জিদানকে চিনে এসি মিলানের কাছে কাকা ঠিক তেমন বা তার চায়তে বেশি কিছু।  অর্থাৎ যে কাজটা জিদান রিয়াল্মাদ্রিদে করেছে সেটা কাকা মিলানে শেষ করেই মাদ্রিদে এসেছে। আক্ষেপ ওইটাই,  এসি মিলানের কাকাকে কখনো রিয়াল্মাদ্রিদ ভক্তরা খোজে পায়নাই। কিন্তু তাতে কি!  আজকের দিনে তাকে আলাদা ভাবে মনে করার জন্য মিলানে কাটানো ছয়টা বছরই কি যথেষ্ট না?  কি ছিলনা কাকার খেলায়?  পাসিং, মুভমেন্ট, গতি, লং রেঞ্জে গোল, সলো গোল - একটা পারফেক্ট ফুটবল প্যাকেজ,  সাথে ছিল ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আর মনোবল। আরেকজন আছেন, কোচ কার্লো আঞ্চেলত্তি। কাকাকে সাইন করানোর পর জানতেনইনা কাকা কেমন খেলেন।  সাংবাদিক সম্মেলনে গড়পড়তা কম্পলিমেন্ট দিয়ে দিলেন।  কিন্তু ট্রেনিং গ্রাউন্ডে যখন প্রথম দেখলেন তখন ডন কার্লোর মাথায় আর ২য় কোন চিন্তা কাজ করেনাই - খুব দ্রুতই তাকে প্রথম একাদশে সুযোগ দিয়ে দিলেন।  তারকা হওয়ার জন্য কাকা বেশি সময় অপেক্ষা করেন নাই।  এমপলির বিপক্ষে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে গোল করে চমক তৈরি করেছিলেন,  এরপর মিলান ডার্বিতে গোল করে একেবারে রসোনেরি ফেইথফুলের মধ্যমণি হয়ে গেলেন সিজনের প্রথম অর্ধেই।  প্রথম সিজনের স্বপ্নযাত্রায় মিলান ডার্বির ২য় লেগেও কাকা গোল করেন।  কুয়াশাচ্ছন্ন সেই ম্যাচে ইন্টার দুই গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল প্রথমার্ধেই।  কিন্তু ২য়ার্ধে কামব্যাক করে মিলান।  কাকার সমতাসুচক গোলটা ছিল সম্পুর্ণ একক প্রচেষ্টায় করা, মাঝমাঠে বল পেয়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে ২০ গজ দূর থেকেই শট নেন কাকা।  বাংলা ধারাভাষ্যকারের ভাষায়ঃ মাটি কামড়ে বলটি চলে গেল জালের ভিতরে।  সেই শুরু মিলান রাজপুত্রের রুপকথার।  এরপর একে একে আরো পাচটি মৌসুম পার করেন মিলানে।

তবে কাকাকে নিয়ে আপনি যত যাই লিখেন "২০০৭ এর কাকা" কে নিয়ে একটু বাড়তি কিছু না লিখলে সেটা কখনো সম্পুর্ণ লেখা হবেনা।  কারণ ২০০৭ এর কাকার উচ্চতা ছিল এমন যেটার সাথে শুধু তুলনা হতে পারে ৮৬ এর ম্যারাডোনার।  একটু বেশি বাড়িয়ে বলে ফেললাম।  আচ্ছা নিজেই ২০০৬/০৭ এ মিলানের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ম্যাচ গুলো দেখেন আর ১৯৮৬ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনার ম্যাচগুলো দেখেন আর দুইজনের ম্যাচ বাই ম্যাচ ইম্প্যাক্ট কম্পেয়ার করেন। গ্রুপ পর্বে আন্দারলেচ এর সাথে কাকার একটা হ্যাট্রিক ছিল। একটা গোল মে বি পেনাল্টি ছিল।  আর বাকি দুটা গোলের প্লেমেকার ছিলেন কাকা নিজে। অর্থাৎ নিজেই নিজের গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন কাকা।  শেষ ষোলর ম্যাচ যখন ১৮০ মিনিট পরও গোলশুন্য ড্রয়ের দিকে এগুচ্ছে তখন ইঞ্জুরি সময়ের দুই মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে সেল্টিকের স্বপনভঙ্গ করেন কাকা।  আমার মতে কাকার করা সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন গোল এটা।  বাদ্যযন্ত্রের ছন্দ যেরকরকম, কাকার ওই গোলের সময় বল নিয়ে এগিয়ে চলাটা ছিল তেমন।  সেল্টিকের কর্ণার থেকে কোনভাবে বল ফাকায় থাকা কাকাকে খোজে পায়।  দারুনভাবে রিসিভ করে কেমন একটা ছন্দে বলটা নিয়ে ড্রিবল করা শুরু করলেন।  সেল্টিক ডিফেন্ডার অপেক্ষায় ছিলেন ট্যাকেল করার সঠিক সময়ের জন্য,  কিন্তু তাকে মোহিত করে কাকা ভয়ঙ্করভাবে ড্রিবলের গতি বাড়ান যেটা ভ্রমে থাকা ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলে, তারপর একজন পারফেক্ট স্ট্রাইকারের মতো ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ করেন গোলকিপার পায়ের নিচ দিয়ে বলকে জালে জড়িয়ে।  এভাবে কাকার অনেকগুলা গোল আছে।  কোয়ার্টারে বায়ার্নের বিপক্ষে অবশ্য কাকার চেয়ে সিডর্ফ ছিলেন বেশি উজ্জ্বল কিন্তু কাকা অপেক্ষা করেছিলেন আরো বড় উপলক্ষের জন্য।  ওল্ড ট্রেফোর্ড সেদিন মঞ্চস্ত হয়েছিল নতুন যুগের দুই রাজপুত্রের লড়াই দেখার যেটায় শুরুতেই গোল করে এগিয়ে গিয়েছিলেন রোনালদো।  কিন্তু রসোনেরি রয়্যালটির ধারক রিকার্দো কাকা চেয়ে চেয়ে দেখার পাত্র ছিলেন না।  খুব দ্রুত দুইটা গোল করে লীড এনে দেন।  এভাবে বললে একটু কম বলা হবে।  সবাই জানে কাকার করা ২য় গোলটা তার ক্যারিয়ার সেরা দুতিনটা গোলের একটা, অথবা তর্কযোগ্যভাবে এটাই কাকার সেরা গোল।  কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় ওইদিন কাকার করা প্রথম গোলটা ছিল বেটার গোল।  দয়া করে দুইটা গোল আবার দেখেন।  প্রথম গোলটার আগে মিলান ১-০ তে পিছিয়ে।  সিডর্ফ বাম পাশ থেকে কাকাকে উদ্দেশ্য করে সামনের দিকে বাড়ানোর জন্য বলটা পা থেকে যখন ছাড়েন কাকা তখনো ডিবক্স থেকে প্রায় দশগজ দূরে ছিলেন।  কেউ চিন্তাও করে নাই এর পরের কয়েক মিলিসেকেন্ডে কি হবে।  itv ধারাভাষ্যকারের কমেন্ট্রি ছিল এরকম, "Kaka! accelerating! away from Heinze! and equilizing" এই সাতটা শব্দ বল দ্রুত বলতে যে সময় লাগে এই সময়ে কাকা দশ গজ পথ ক্যারিককে পিছনে ফেলে বল রিসিভ করেন বাঁ পায়ে এবং প্রথম টাচেই বলকে সামনের দিকে ধাক্কা দেন। হেইঞ্জে কিছু বুঝে উঠার আগেই কাকা ওকে গতিতে পরাস্ত করে।  এর মধ্যে ভ্যান ডার সার গোলের বাম দিকে কাকার সামনে এগিয়ে আসে এবং কাকা acceleration করা অবস্থাতেই ভ্যান ডার সার সেটেল হওয়ার আগেই বাম পায়ে হালকা টাচে গোলকিপারের সামনে দিয়ে রাইট কর্ণারে মাটি কামড়ে জালে জড়ান।  ম্যানইউ গোলরক্ষক এর তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলনা।  এওয়ে ম্যাচে দুই গোল, খেলাতো ওখানেই শেষ।  ওই ম্যাচে অবশ্য ম্যানিউর হয়ে রুনির করা ৩য় গোলটা ছিল দেখার মত।  ফিরতি লেগে বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় কাকার ভলিতে গোল এবং বৃষ্টিতে ভিজে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হাত উঁচু করে উদযাপন এর ছবি ছিল ফুটবল রোমান্টিকদের জন্য বেঁধে রাখার মতো।  ব্যাস!  গ্রেট হওয়ার জন্য যতটুকু করার কাকা করে ফেলেছেন।  কেউ কখনো ৮৬ বিশ্বকপে ম্যারাডনার ফাইনালের ম্যাচ নিয়ে কথা বলেনা,  বলে ইংল্যান্ডের সাথে ম্যাচটা নিয়ে।  কাকার ব্যাপারেও তাই, সবাই ম্যানইউ ম্যাচ নিয়েই কথা বলে।  কিন্তু কি অদ্ভুত মিল,  ফাইনালে দুজনেই দলের স্ট্রাইকারকে ডিফেন্সচেরা পাস দিয়ে জয়সুচক গোল করতে অবদান রাখেন।  ইউটিউবে দুইটা গোলই দেখে নিয়েন, পরেরটা রিমেক ভার্সান মনে হতে পারে।  এই প্যারায় ম্যারাডোনাকে নিয়ে আসাতে অনেকে ধরে নিতে পারে আমি হয়ত কাকাকে গ্রেট ম্যারাডোনার সাথে তুলনা করছি।  ভুল বুঝবেন না, আমি শুধু ২০০৭ এর কাকার হাইট বুঝাতে ৮৬ এর ম্যারাডনাকে এনেছি।

এই হচ্ছে কাকা, আসল কাকা।  যাকে রিয়াল্মাদ্রিদ দেখে নাই।  কিন্তু যাকে দেখে ল্যাম্পার্ডের মতো প্লেয়ার বলে বসেন,  শুধু কাকার খেলা দেখতেই তিনি টাকা খরচ করতে রাজি। কাকার খেলার স্টাইল দেখে ফুটবল বিশ্ব কখনো তার মাঝে জিকোকে কল্পনা করে, কখনো ক্রুইফ কিংবা কখনো প্লাতিনি।  কিন্তু তিনি ছিলেন এসি মিলানের কাকা।  আর মাদ্রিদ এর জন্য রোনালদোকেই ঠিক করে ফেলেছে বিধাতা। তারপরও গত অর্ধযুগে মাদ্রিদ দলের একমাত্র লা লীগা জয়ী দলে উপস্থিতি কিছুটা হলেও কাকার জন্য তৃপ্তিদায়ক হতে পারে।  কিন্তু তার অযুত ভক্তকূলের আক্ষেপ গোছানোর জন্য তা কখনোই যথেষ্ট না।  মানুষ শুধু কাকাকে ট্রফি জয়ের অংশ হিসেবে চায়নাই, তাকে মাঠে দেখতে চেয়েছিল নব্বই মিনিট।  ম্যাচের পর ম্যাচ কাকাকে বেঞ্চে দেখতে দেখতে তারা ত্যাক্তবিরক্ত হয়ে পড়েছিল। ২০১০ বিশ্বকাপ পরবর্তী ছয়মাসের ইঞ্জুরি তাকে সদ্য নিযুক্ত কোচ হোসে মোরিনহোর সাথে যুক্ত হবার প্রক্রিয়া বিলম্ব করিয়ে দেয়।  যখন আসেন তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল কারণ এরি মধ্যে মোরিনহোর মধ্যমাঠে জায়গা শক্ত করে ফেলেন ওজিল আর দি মারিয়া। এরপর মাঝে একটা সিজন একটু সুযোগ পেলেও মোরিনহোর ৩য় এবং শেষ সিজনে কাকাকে নামমাত্র ব্যাবহার করে মোরিনহো। অবশ্য দুজনকেই ওই সিজন শেষে মাদ্রিদ ছাড়তে হয়।  

বেশ কয়েকবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েও কাকার মিলানে ফেরাটা হচ্ছিলনা।  শেষ পর্যন্ত দলবদল মৌসুমের শেষদিনে নিশ্চিত হয় কাকা ফিরছেন তার নিজ রাজ্যে,  সেখানে ভক্তকূল অপেক্ষা করছে ব্যানার পোস্টার নিয়ে। কতকিছুইতো বদলে গেছে এই চার বছরে,  কিন্তু কাকার প্রতি মিলানবাসীর ভালবাসা একচুলও কমেনি।  সানাসিরোতে আবার শুরু হয়েছে কাকাকে নিয়ে গান, "আমরা এসেছি কাকার গোল দেখতে"।  দেখিয়েছেনও কাকা।  ওই সিজনে কাকার ফিটনেস আর খেলায় ইম্প্যাক্ট বলে দেয় কাকা মোরিনহোর দলের ফার্স্টচয়েস হয়ে খেলতে পারলে অন্যরকম কিছুও হতে পারত!  আফসোস।  এই আফসোসটা আরো বেড়ে যায় যখন কাকার অভিজ্ঞতা এবং ফর্ম সেলেসাও কোচ স্কলারির চোখও এড়িয়ে যায়।  আফসোস!  নেইমার কাকা অস্কার এর ত্রিফলা দেখা গেলনা মারকানায়।

আরেকটি আফসোস এর ঘটনাও এর মধ্যে ঘটে গেছে কাকার জীবনে  ।  যাকে জীবনসঙ্গিনী করে এতদুর পথ হেঁটে এসেছিলেন কাকা, সেই ক্যারোলিন সেলিকোর সাথেও গতবছড় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় কাকার।  

৩৫তম জন্মদিনে কাকার জন্য রইল অনেক শুভকামনা, কাকার ব্যাক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি।  ব্রাজিলের জার্সি গায়ে আরেকবার দেখতে পারলে হয়তো আফসোস কিছুটা কমবে।  কিন্তু আফসোস, "জীবন এত ছোট যে কাকার খেলা দেখার সাধ মিটেনা"।