বছরের অন্যতম আখাংকিত ম্যাচ ট্যাকটিস
পোস্টটি ৩৭৩৮ বার পঠিত হয়েছেআর দুইদিন পরেই বছরের সবচেয়ে আলোচিত ম্যাচ রিয়াল মাদ্রিদ বনাম পিএসজি ম্যাচ।কেমন হতে পারে সেই ম্যাচ এর স্কোয়াড,ট্যাক্টিস।যদিও কিছু কনফিউশন আছে তবুও দেখা যাক কেমন হতে পারে সেদিনকার খেলা।শুরু করা যাক
প্যারিস এর স্কোয়াড এর আটজন পুরোপুরি সিউর।কনফিউশন এর জায়গায় আছে লেফট ব্যাক,সিডিএম পজিশন আর আমার মতে উনাই এমেরি মারিয়া আর এমবাপ্পের মধ্যে কনফিউজড হয়ে পড়বে।২০১৮ সালে লাস্ট ১১ ম্যাচে ১০ গোল সেরা সময় কাটাচ্ছে মারিয়া,প্লাস এমবাপ্পের মৌশুম শুরুর আগুন পার্ফরমেন্স এর ঘাটতি চোখে পড়ার মতো।পারসোনালি চাই এমবাপ্পে স্টার্ট করুক
যদিও মারিয়া এ পজিশন এর জন্য ভালো ভাবে লড়াই এ টিকে আছে।
ফ্রন্ট এর আর দুইটা পজিশন এ মেইনম্যান কাভানি আর নেইমি।
এখন আসি মিডফিল্ড এ।ভেরাত্তি আর রাবিউট মোটামুটি খেলবে প্রথম একাদশ এ।মোত্তা সেপ্টেম্বর এর পরে ৯০ মিনিট খেলেনি প্লাস বয়স হয়েছে এবং ইনজুরি থেকে ফিরেছে বেশিদিন হয়নি।তাহলে এ পজিশন এ কি লে সোলসো কে খেলাবে।আমরা যারা খেলা দেখি তারা জানি কি মাখন খেলে লে সোলসো। কি নাই তার খেলায়,পাসিং,কন্টোলিং,ভিসন সব আছে।ইভেন ভেরাত্তির থেকেও মিড এ মৌশুম এ ইমপেক্ট ফেলেছে।কিন্তু প্রশ্ন একটা থেকেই যায়।উচল এর মতো এত বড় আবার বাচা মরার ম্যাচে কি উনাই এমেরি তার ওপর ভরসা রাখতে পারবে।কারন স্ট্রেন্থ এ সে ক্যাসা,কান্তের মতো না।লাস্ট ম্যাচে দিয়ারা কে কোচ খেলিয়েছে ঠিক এই কারনেই, সাবেক ক্লাব এর বিপক্ষ এ তাকে শুরু থেকে স্ট্রাট করালে অবাক হবোনা।প্লাস উচল এ খেলার মতো অভিঙ্গতা ও আছে।বড় বড় ক্লাবের হয়ে মিড সামলানোর মতো অভিঙ্গতা তার আছে।সত্যি কথা বলতে লড়াই হবে এই মিড এই।ক্রুস মদ্রিস এর মতো কন্ট্রোলার এর পাশাপাশি ক্যাসার মতো ওয়াল্ড ক্লাস ডিসট্রয়ার।ওদের সাথে মিড এ সমান এ সমান লড়তে চাইলে ফিজিক্যাল এবিলিটি সম্পন্ন একজন লাগবেই।ঠিক এই জায়গাই পিএসজি পিছিয়ে।আধুনিক ফুটবল এ হাই প্রেসিং সামাল দেওয়া মতো ডিএম না থাকলে আপনি মিডফিল্ড এ পিছিয়ে পড়বেন।মাদ্রিদ, চেলসি,বার্সা সবার ওয়াল্ড ক্লাস ডিএম আছে।
যাক এবার আসা যাক ব্যাকফোর।তিনজন তো সিউর রাইটে দানিবয়,দুই সিবি মার্কু আর সিলভা।এখন আমার মনে হচ্ছে মাদ্রিদ এর সাথে ইউরি বাসিস স্ট্রাট করতে পারে।কুরজয়ার ফর্ম পছন্ড আপ ডাউন করে প্লাস ও ইনজুরি র কারনে গত ম্যাচও মিস করেছে।
মাদ্রিদ এর স্কোয়াড এর দিকে দেখলে দেখতে পারি মিড এ নিয়মিত ক্রুস,মদ্রিস,ক্যাসা জুটি।সামনে রোনালদো, বেল সিউর।ইভেন এই ম্যাচ এর জন্য লাস্ট সোসিয়াদ এর সাথে ম্যাচ ও খেলায়নি জিদান বেল কে।এখন বেন্জুকে ছাড়া কি মাদ্রিদ নামবে।গত ম্যাচে ওপেন চান্স মিস করার পর জিদান এর রিএকশন দেখার মতো ছিল।ও স্ট্রাট না করলে ইস্কো অনেকটা নিশ্চিত।
কার্ভা কার্ড এর কারনে ম্যাচ টা মিস করবে সেটা আগেই নিশ্চিত। সেই পজিশন এ নাচো খেলবে।সিবি হিসেবে ভারানে রামোস জুটি।আর লেফট এ মার্সেলো।ইস্কো খেললে মাদ্রিদ এর ফর্মেশন অনেকটা ৪-৩-১-২ ডায়মন্ড হয়ে যায়।মানে ইস্কো কে ফ্রি রোল দেওয়া হয়।
ট্যাক্টিস:
আগেই বলে দি গেইম টা দারুন উপভোগ্য হবে।কোন দল বাস পার্ক করবেনা এরা নিশ্চিত,দারুন ওপেন প্লে হবে।এখন বিগত খেলা গুলো দেখলে আমরা দেখতে পারি পিএসজি র খেলা শুরু হয় একদম ডিপ থেকে।বল প্লেয়িং সিবি হওয়াতে সিলভার পাসিং,লংবল অনেকটা একুরেট।আর দুই ফুলব্যাক ওপরে আসলে দুই সিবি এর মাঝখানে ভেরাত্তি বা রাবিউট চলে আসে।কিছু পাসিং খেলে মূল আক্রমণ টা শুরু হয় নেইমি থেকে।নেইমি অনেকটা নিচে নেমে আসে, বল নিয়ে কিছুক্ষণ পাসিং খেলে আর তাকে মার্ক করা প্লেয়ার ড্রপ ব্যাক করলে এমবাপ্পে রাইটে একটা রান মেইক করে।সাথে সাথে রাইট এ প্রচুর স্পেস ক্রিয়েট হয়।বায়ার্ন এর সাথে ম্যাচে প্রথম গোলটাও এভাবেই হয়ছিল।প্রথম ম্যাচটা যেহেতু এওয়ে ম্যাচ তাই বলাই যায় মাদ্রিদ পজেশন ডমিনেট করবে।মার্সেলো আর ওপরে উঠে যাওয়ার সবটুকু সুযোগ কাজে লাগানোর কাজ হলো বাপ্পীর।প্লাস কার্ভা না থাকায় নেইমির জন্যও ভালো সুযোগ আছে
যদিও নাচো সুযোগ পেলে ভালো খেলা উপহার দেই।কাউন্টার এটাকে এগিয়ে থাকবে পিএসজি।কাউন্টার এটাক শুরুই হয় ভেরাত্তির থ্রু বল থেকে। তারপর নেইমির লাইন ধরে রান।নেইমিকে মার্ক করে থাকা ডিফেন্ডার ট্যাকেল এর সুযোগ ও পায়না বা পাবেনা বা করবেনা।কারন ইউরোপ এর সর্বোচ্চ টেকঅন কমপ্লিট করা প্লেয়ার নেইমার( টেকঅন হলো সামনে থাকা প্লেয়ার কে ফাকি দিয়ে বল নিয়ে বের হয়ে যাওয়া)ওদিকে কাভানি পুরোপুরি আনমার্ক হয়ে পড়ে।ফলাফল গোলের ভালো সুযোগ তৈরি।
এবার আসা যাক মাদ্রিদ এর গেমপ্লে র দিকে।
মাদ্রিদ এর খেলা স্টাইল ই থাকে কাউন্টার বেসড এবং দুই উইংব্যাক দিয়ে ক্রসিং নির্ভর।রন,বেল,রামোস এর মতো এয়ারে এতো শক্তিশালী দৈত্য থাকার জন্য একদিকে এটা যেমন বেশ কার্যকরি তেমন মার্সেলোর এই মৌশুমের বাজে ফর্ম আর কার্ভার না থাকা বেশ ভুগাবে।আর সিলভা মার্কুরা এরিয়াল এ বেশ কার্যকর।মিড এ ক্রুস এর মতো স্নাইপার থাকার জন্য বেশ কিছু সুযোগ তৈরি হবে বলায় যায়।এ ক্ষেত্রে ক্রুস টু মার্সেলো এবং মদ্রিস টু বেল পাসিং লেন টা ব্লক করা লাগবে।ভেরাত্তির ওপর দায়িত্ব টা পড়বে হয়তো তার স্লাইডিং ট্যাকেল বেশ কার্যকরী প্লাস ফাউল এর বিষয় টাও খেয়াল রাখতে হবে।এবার আসবো মাদ্রিদ এর সবচাইতে ভাইটাল এবং একই সাথে মাথা ব্যাথার কারন। হ্যা ঠিকি ধরেছেন ইস্কো।তার ফ্রি রোল মাদ্রিদ কে বেশ ভুগিয়েছে।কারন
১.কাউন্টার এর সময় অহেতুক ড্রিবল
২.বল ছাড়তে দেরি করাই বিপক্ষ ডিফেন্ডার জায়গা নিয়ে নিতে পারে
৩.ডিবক্সে ড্রিবল করে বল হারায়
ইস্কো অবশ্যই অসাধারন একটা প্লেয়ার বাট মাদ্রিদ এর প্লেয়িং স্টাইল এর সাথে যায়না ও।এই কারনেই হয়তো জিদান বেন্জুকে স্ট্রাট করাতে পারে।কারন রন টিপিকাল লেফট উইং এর প্লেয়ার না প্রচুর কাটইন করে বক্সে ঢুকে এবং স্পেস দেওয়ার জন্য বেনজেমা প্রায় লেফট এ চলে আসে।আর উচলে রন সবসময় ভয়ংকর সো সিলভা, আলভেজ দের কড়া মার্কিং এরর দিকে নজর দিতে হবে।আবার বেল ও নিজের দিনে বেশ ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে
উনায় এমেরিকে আগের মাদ্রিদ এর ম্যাচ গুলোর দিকে তাকিয়ে মাদ্রিদ এর উইক পয়েন্ট গুলো বের করতে হবে।
এখানে আমি কিছু পয়েন্ট দিলাম
পিএসজি এর স্ট্রং পয়েন্ট
১.নেইমার,কাভানি,এমবাপ্পে আর মারিয়ার ফর্ম
২.নেইমির ডিপ এ থেকে খেলাটার ফ্লো ধরে রাখা লাইক মেসি
৩.ভেরাত্তির স্লাইড ট্যাকেল প্লাস থ্রু বল
৪.কাউন্টার এটাকে নেইমি,এমবাপ্পের স্কিল,গতি
৫.নেইমার,এমবাপ্পের আনসেলফিসনেস
৬.কাভানির আগুন ঝরানো ফিনিসিং
পিএসজির দুর্বল সাইড
১.ডিস্ট্রয়ার না থাকে লাইক ক্যাসা,কান্তে
বুসির মতো ফুটবলীয় মস্তিষ্ক এর খেলোয়াড়
২.আরিওলয়ার পজিশনিং, যদিও ভালো খেলছে
৩.আলভেজ এর বয়সের ছাপ।
মাদ্রিদ এর স্ট্ং সাইড
১.টুর্নামেন্ট টা উচল
২.রনের উচলে অতিমানবীয় পারফর্মেন্স
৩.ওয়াল্ড ক্লাস মিড
৪.বেন্জু মামা????
মাদ্রিদ এর উইক সাইড
১.কার্ভার মিসিং
২.মার্সেলোর ট্রাক ব্যাকিং কমে যাওয়া
৩.এটাকে বেশি মনোযোগী থাকার কারনে ডিফেন্সিভ ডিউটি ভুলে যাওয়া
৪.গোল কন্সিডার ঠু মাচ হাই
৫.লীগের অফ ফর্ম (যদিও আলাদা টুর্নামেন্ট তবুও একটা বিষয় থেকেই যায়)
বলাই যায় সেরা একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে। সমানে সমানে একটা লড়াই হবে।প্রচুর ওপেন গেমপ্লে এর কারনে বোরিং লাগবেনা।নেইমি,রনের উচলের ফর্ম বাড়তি পারদ যোগ দিবে।
- 0 মন্তব্য