• ফুটবল

ফ্রান্স বনাম ক্রোয়েশিয়া, প্রী ম্যাচ এনালাইসিস

পোস্টটি ৪৩৭০ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

এই বিশ্বকাপে ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়া দুই দলই ভালো পারফর্ম করে ফাইনালে এসেছে, ক্রোয়েশিয়া গ্রুপ পর্ব থেকেই ভালো খেলে এসেছে, ফ্রান্স প্রথম ম্যাচ গুলোতে কেমিস্ট্রির অভাবে ভুগলেও এখন তাদের আর সেই সমস্যা দেখা যাচ্ছে না, ক্রোয়েশিয়া আর ফ্রান্স এ পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে, একবারও ক্রোয়েশিয়া জেতেনি, লাস্ট ২০১১ সালে মুখোমুখি হয়েছে, ফলালফল ছিলো ড্র, ফ্রান্স আর ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল ম্যাচের স্ট্র্যাটেজি কেমন হতে পারে আজকে সেটা নিয়েই আলোচনা করবো।

ফ্রান্স এর ট্যাকটিকস - 

ফ্রান্স এর ফরমেশন খাতা কলমে ৪-২-৩-১ হলেও মাঠে তারা ৪-৩-৩/৪-৪-২ ফ্লোটিং ডায়মন্ড ব্যবহার করে, ৪-৩-৩ ব্যবহারের সময় গ্রিজম্যান উইং অথবা নাম্বার নাইন হিসেবে এটাক করে, আর ৪-৪-২ ফ্লোটিং ডায়মন্ড ব্যবহারের সময় গ্রিজম্যান এটাকিং মিড হিসেবে খেলে। গ্রিজম্যান মোটামুটি ফ্রি রোলে খেলে এবং ডিফেন্সে ভালো সহায়তা করে, ফ্রান্সের এই ম্যাচে ম্যাতুইদিকে খেলানো উচিৎ হবে কারণ তার প্লে মেকিং এর সাথে ডিফেন্সিভ ওয়ার্করেট ভালো, তলিসো ক্রিয়েটিভ হলেও ডিফেন্সিভ ওয়ার্কের জন্যে ম্যাতুইডিকে খেলানো বেস্ট হবে। ফ্রান্সের ভালো মিড থাকার পরেও তাদের এটাক এর প্রিয় স্টাইল কাউন্টার এটাক কারণ তাদের ফরোয়ার্ডদের পেস। এই ম্যাচেও তারা কাউন্টার এটাক দিয়ে ম্যাচ বের করার চেষ্টা করবে সেটা বলাই যায়। এছাড়াও তারা তাদের ফুলব্যাকদের দিয়ে অপোজিশন বক্সে ওভারলোড করারও চেষ্টা করে, তাছাড়া তারা সেট পিস থেকেও গোল আদায় করতে পারে।

ক্রোয়েশিয়ার ট্যাকটিকস -

ক্রোয়েশিয়া এই বিশ্বকাপে ৪-২-৩-১ এবং ৪-৩-৩ ব্যবহার করেছে, লাস্ট ইংল্যান্ডের সাথে যে ম্যাচ খেললো সেটাতেও তারা ৪-২-৩-১ ব্যবহার করেছে।যেহেতু ইংল্যান্ড পেছন থেকে খেলা বিল্ড করে তাই ওই  ম্যাচে তারা ইংল্যান্ডকে হাই প্রেস করে গোল করার চেষ্টা করেছে , প্রেসের সময় ক্রোয়েশিয়ার ফরমেশন ছিলো ৪-১-৫ , যদি তারা এই সেম ট্যাকটিকস নিয়ে ফ্রান্সের সাথে খেলতে নামে তবে তাদের হারার সম্ভাবনা বেশি থাকবে, তার কারণ ডিফেন্সের ৪ জনের সামনের ওই ১ জন মিডের আশপাশের স্পেস ইংল্যান্ড কাজে লাগাতে পারে নি কারণ তাদের বল হোল্ড বা লিংক আপ করার মত স্ট্রাইকার ছিল না, কেইন গোল করতে ওস্তাদ হলেও সে বল হোল্ডিং এ অত ভালো না, কিন্তু ফ্রান্স এর জিরুড এই দিক থেকে আবার ভালো, সে এখন পর্যন্ত গোল না পেলেও সে ফ্রান্স টিমের গুরুত্বপূর্ণ পার্ট কারণ তার লিংক আপ প্লে এবং বল হোল্ডিং এবিলিটি, ক্রোয়েশিয়া ৫ জন নিয়ে হাইপ্রেস করতে গেলে কাউন্টারে জীরুড এর সাথে লিংক আপ প্লে থেকে এম্বাপে বা গ্রিজম্যান গোল করতে পারে। সুতরাং এই ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার উচিৎ হবে তারা আর্জেন্টিনার সাথে যেভাবে খেলেছে ঠিক ঐভাবে ডিফেন্সিভ খেলা, ৪-৩-৩ ফরমেশন নিয়ে খেললে আর ঠিক ওই রকম ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজিতে খেললে ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে টিকে থাকার চান্স থাকবে, ফ্রান্স বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ফ্রান্স এই জন্যেই সাফার করেছিল কারণ দুই দলই ডিফেন্সিভ গেম খেলেছিল, বাকি রইলো এম্বাপেকে আটকানো, এম্বাপে ফ্রান্স টিমের প্লেইং সিস্টেমের জন্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, বেশিরভাগ কাউন্টার এটাক তার মাধ্যমেই তৈরি/শেষ হয়, এম্বাপে কে আটকানোর দুই তিনটার মত উপায় আছে, যেগুলো হল ম্যান মার্কিং, ফ্রি ছেড়ে দেয়া আর জোনাল মার্কিং, ম্যান মার্কিং ট্যাকটিকস বেলজিয়াম আর উরুগুয়ে ব্যবহার করেছে এবং ফলাফল তাদের এই ট্যাকটিক এর জন্যেই ফ্রান্স গোল দেয়ার চান্স পেয়েছে, ম্যান মার্কিং স্ট্র্যাটেজির ফলে যে এম্বাপেকে মার্ক করে সে এম্বাপের সাথে বেশ কিছুটা উপরে উঠে আসে যার ফলে তৈরি হয় স্পেস এর, আর এই স্পেস দিয়েই ফ্রান্স এটাক করার ট্রাই করে, ক্রোয়েশিয়ার উচিৎ হবে তারা মেসিকে যেভাবে জোনাল মার্কিং করেছে সেইভাবে এম্বাপেকে মার্ক করা, এতে ডিফেন্ডারদের নিজেদের লাইন ছেড়ে আসতে হবে না, ডিপে গেলে মিডফিল্ডাররা তাকে মার্ক করবে, 

ম্যাচটি সন্দেহাতীতভাবে একটি উপভোগ্য ম্যাচ হতে চলেছে, যোগ্য দলই বিশ্বকাপ হাতে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস