• ফুটবল

কেমন আছে কার্লোর ক্রিসমাস ট্রি

পোস্টটি ১৬৭৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

কার্লো আনচেলত্তির নতুন করে পরিচয় দেওয়ার কিছুই নেই। বর্তমান ইউরোপে যেকজন সফল ম্যানেজার আছেন তাদের নামের মধ্যে কার্লোর নাম অবশ্যই উঠে আসবে। তার ম্যানেজারিয়াল ক্যারিয়ারে ইয়ুভেন্টাস, রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি এর মত ক্লাবে কাজ করেছেন। নাপোলিকে তিনি কেমন ফুটবল খেলাচ্ছেন আগামী কিছু মিনিট তা ব্যাখ্যা করার একটা চেষ্টা করবো।

ফরমেশন এবং স্ট্র্যাটেজি : 

প্রথমেই কার্লোর ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে একটা ধারণা দেবার চেষ্টা করবো। কার্লো নিজেই বলেছেন তিনি ডিফেন্স করার জন্যে ৪-৪-২ ফরমেশন ব্যবহার করেন কারণ এর ফলে একই সময়ে ওয়াইড ও সেন্ট্রাল এরিয়া কভার দেওয়া সম্ভব হয়। সাররি যখন নাপোলির ম্যানেজার ছিলেন তখন নাপোলি স্ট্রিকটলি পজিশনাল ডিফেন্ডিং করাতেন, কিন্তু কার্লো পজিশনাল এর সাথে ম্যান ওরিয়েন্টেড ডিফেন্সও করাচ্ছেন। মিডফিল্ডে ডিফেন্স/অফ দ্যা বল প্রেস করানোর সময় হ্যামশিক কে ডিফেন্সের সামনে দাঁড় করিয়েছেন। হ্যামশিক এখন ডিপ লায়িং প্লে মেকারের কাজ করছে নাপোলিতে। এলান কায়েহন প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে প্রেস করতে গেলে হ্যামশিক তাদের পেছনে ডিফেন্সের উপরে অবস্থান করে যাতে করে সহজেই কাউন্টার এটাক আটকাতে পারে। এছাড়াও কিছু ম্যাচে যেমন পি এস জি এর সাথে তার দলকে দিয়ে ম্যান ওরিয়েন্টেড নয় বরং জোনাল মার্কিং  করিয়েছেন। তবে এর পরেও বেশ কিছু দল ডিফেন্সে গ্যাপ খুঁজে বের করেছে এবং নাপোলিকে হারাতে সক্ষম হয়। বিশেষ করে ইয়ুভেন্টাসের সামনে ম্যান ওরিয়েন্টেড মার্কিং তাদের হারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, ম্যান ওরিয়েন্টেড মার্কিং এর জন্যে ইয়ুভেন্টাস সহজেই নাপোলির মিডফিল্ড ক্রস করতে পারছিল যার ফলাফল ১-০ ব্যবধানে ইয়ুভের জয়।

কার্লো তার দলকে এটাক করানোর জন্যে মোটামুটি তিন/চার রকমের ফরমেশন ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ক্লাসিক ৪-৩-১-২ (মিলান ও ইয়ুভের ম্যানেজার থাকাকালীন ব্যবহার করেছেন) , ৪-৩-২-১ (দ্যা ক্রিসমাস ট্রি যা মিলান, পি এস জি, বায়ার্ন ও মাদ্রিদে ব্যবহার করেছেন), ৩-৫-২ (কিছুদিন আগেও পি এস জির সাথে ব্যবহার করেছেন), ৪-৪-২/৪-৩-৩ (লীগে তিনি বর্তমানে এই ফরমেশন ব্যবহার করেছেন)। নাপোলির ফরমেশন যাই হোক না কেনো ট্যাকটিকস মোটামুটি একই থাকে, কার্লো দলের বড় যে দুটি পরিবর্তন এনেছেন তার একটি হলো লোরেঞ্জো ইন্সিনিয়া এর পজিশন চেঞ্জ করা। সারির অধীনে ইন্সিনিয়া ক্লাসিক নাম্বার ১০ কিংবা লেফট উইং দিয়ে খেলেছে, কিন্তু কার্লো তাকে সেকেন্ড স্ট্রাইকার হিসেবে আরও বেশি সেন্ট্রাল ওরিয়েন্টেড ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলাচ্ছেন, সিজনের শুরুতে ভালো একটা স্টার্ট পেয়েছেন ইন্সিনিয়া। ৪-৪-২ ফরমেশন এর জন্যে কায়েহনকে রাইট মিড আর জিলেনস্কি/ ফ্যাবিয়ান রুইজ কে লেফট মিড হিসেবে খেলাচ্ছেন, এটাকের সময় তার উইঙ্গাররা ন্যারো হয়ে সেকেন্ড স্ট্রাইকার পজিশনে চলে আসে ফুলব্যাকেরা পিচে ওয়াইড প্রোভাইড করে। এছাড়াও তার রোটেশন স্ট্র্যাটেজি, জিলেন্সকি রুইজদের পজিশন ইন্টারচেঞ্জ এর কারণে প্রতিপক্ষ মাঝে মাঝেই তার ফুল সিস্টেম রিড করতে ব্যার্থ হয়। মার্টিনস ও ইন্সিনিয়াও নিজেদের মধ্যে পজিশন চেঞ্জ করে থাকে, একজন সম্পূর্ণ পোচার আরেকজন রোমিং ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলে যার ফলে প্রতিপক্ষ ডিফেন্স এর মার্কিং এ ঝামেলার সৃষ্টি হয় এতে করে স্পেস বের হয় এবং গোল করার সুযোগ তৈরি হয়। এই রোটেশন গুলোর জন্যে নাপোলির সিস্টেম মোটামুটি আনপ্রেডিক্টেবল হয়ে দাড়ায়।

কার্লো আসার পর নাপোলির ফুটবল আরও বেশি ইন্টারেস্টিং হয়ে দাড়িয়েছে, সিজনের শুরুতে ভালো স্টার্ট পেলেও বেশ কিছু হোচট খেতে হয়ছে তাদের। সবথেকে বড় ব্যাপার এটাই নাপোলি স্ট্রিক্ট ফুটবল ছেড়ে ফ্লেক্সিবেল ফুটবল খেলছে এখন।