• ক্রিকেট

বিশ্বকাপ বিতর্ক(পর্ব-২)

পোস্টটি ১৮০৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

১৯৯২ বিশ্বকাপ। প্রথম রঙ্গিন জার্সির বিশ্বকাপ বলে সবার আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। সেই বিশ্বকাপেই প্রথম বৃষ্টি আইনের সাথে পরিচয় ঘটানো হয়। যে অমানবিক আইনের শিকার হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। 

সেমিফাইনাল। ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। ২২ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে খেলা বিশ্বকাপে ফাইনালের উঠার স্বপ্ন দেখছিল আফ্রিকা। ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৪৫ ওভারে ২৫২ রান তুলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা ওভার পূর্ণ করতে বেশি সময় নিচ্ছিল বলে, ৪৫ ওভারেই ইনিংস ঘোষণা করে দেন আম্পায়াররা। টার্গেট দাঁড়ায় ৪৫ ওভারে ২৫৩। 

দক্ষিণ আফ্রিকাও সমানে সমানে জবাব দিচ্ছিল। একসময় তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ বলে ২৩ রান। দুই ব্যাটসম্যান ব্রায়ান ম্যাকমিলিয়ান আর ডেভ রিচার্ডসন(বর্তমান আইসিসি সিইও) এর কাছে ফাইনালে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঠিক তখনই হানা দিল বেরসিক বৃষ্টি। যার জন্য খেলা বন্ধ রইল ১২ মিনিট।  

বৃষ্টি বন্ধের পর দুই ব্যাটসম্যান মাঠে নামলেন। জায়ান্ট স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই তাদের চক্ষুচড়কগাছ! কারণ স্ক্রিনে লক্ষ্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ বলে ২২ রান!! শুধু প্রোটয়াদের কাছে নয়, ইংলিশদের কাছেও বিস্ময়ের অন্ত ছিল না। 

world-cup-1992-england-v-south-africa-1423512016 টার্গেট ১ বলে ২২! 

আসল ঘটনার নেপথ্যে ছিল তৎকালীন বৃষ্টি আইন। আইন অনুসারে তখন প্রতিপক্ষ দলের সবচেয়ে কম রান নেয়া দুই ওভারের রান আর বল কমিয়ে দেয়া হলো দক্ষিণ আফ্রিকা জন্য। ওই ম্যাচে দক্ষিন আফ্রিকান বোলার ম্যারিক প্রিঙেলের করা দুই ওভারে যথাক্রমে ০ ও ১ রান নিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই রান ও ওভার কমানোর ফলে দক্ষিন আফ্রিকার বল কমল ১২টি, কিন্তু রান কমল মাত্র ১! ১৩ বলে ২৩ হয়ে গেল ১ বলে ২২! সেই বলটি ব্যাটসম্যানরা খেলতে আগ্রহী ছিলেন না। পরে আম্পায়ারদের করাকড়িতে অই এক বল খেলে ফিরে আসেন রাগে ফুসতে থাকা আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা। প্রোটিয়াদের ফাইনাল স্বপ্ন সেখানেই শেষ! 

১ম পর্ব -  এক ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণের অন্তিম বিদায়

ওই ম্যাচের পর এই বিতর্কিত আইন নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালচনা শুরু হয়। প্রয়াত ধারাভাষ্যকার রিনি বেনো এই আইনটিকে ‘সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মস্তিষ্ক থেকে বের হওয়া আইন’ বলে অভিহিত করেন। আইসিসি পড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে। যার ফলে এই আইনটকে বাদ দিয়ে নতুন ‘ডাকওয়ার্থ-লুইস আইন’ প্রবর্তন করে এবং যেটি এখনও বলবৎ আছে। যদিও সেটি নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। তবে সকলেই স্বীকার করেন, আগের আইনটির চেয়ে এই আইন হাজারগুণে ভালো। 

বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই আইনটি এখনও বড় বিতর্ক হিসেবে রয়ে গিয়েছে এবং অনেকের কাছেই যা প্রোটিয়াদের ‘চোকার্স’ পদপ্রাপ্তির প্রথম ধাপ। 

পরের পর্ব- ২০১১ ট্রফি, আসল না নকল? সাথেই থাকুন!