• ক্রিকেট

মুত্তিয়া মুরালিধরন- শত বাধা পেরিয়ে

পোস্টটি ৫৫৬৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

যুগে যুগে ক্রিকেট ইতিহাস সাক্ষী হয়েছে অসংখ্য কিংবদন্তী স্পিনারের। আপনাকে যদি একজনের নাম বলতে বলা হয়, কাকে বাদ দিয়ে কার নাম বলবেন। এই চিন্তায় আপনি নির্ঘাত ধাঁধায় পড়ে যাবেন। কিন্তু আপনাকে যদি বলা হয় শত-বাধা আর শত-বিতর্ক পেছনে ফেলে তিনি একগাদা রেকর্ড বগলদাবা করেছেন।

ব্যতিক্রমী বোলিং অ্যাকশনের জন্য যিনি ছিলেন সবসময় সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। যিনি কব্জির ওই ছোট্ট মোচড়ে প্রতি মুহূর্তে বিস্ময় উপহার দিয়ে গেছেন ক্রিকেট দুনিয়াকে। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ভাবছেন। তিনি আর কেউ নন, কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাওয়া ওই দুটি চোখের মুত্তিয়া মুরালিধরন।

আপনি যদি ক্রিকেটের শত-লক্ষ-কোটি পরিসংখ্যান আর ইতিহাসে চোখ বুলান। তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানেন ক্রিকেটের এসব জায়গায় ঠিক কতটা জুড়ে বিরাজ করছেন - মুত্তিয়া মুরালিধরন নামের স্পিন জাদুকর।

একটা দৃশ্যের কল্পনা করা যাক। আপনি সবকিছু ঠিকঠাক সম্পূর্ণ করে একটা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করেছেন। ভালোই এগুচ্ছে সবকিছু - আপনিও ধীরে ধীরে এত পরিশ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্বাদ নিচ্ছেন। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন জানতে পারলেন প্রশ্ন উঠেছে এতটুকু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসা পথ আপনি ভুল কিছুর আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই মুহূর্তে আপনার মনে হবে পুরো পৃথিবী আপনার বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে।

যে পথটা এতক্ষণ খুবই মসৃণ মনে হচ্ছিল, খনিকে সেই পথে -ই দেখছেন বিস্তর কাঁটা বিছানো। হ্যাঁ, সেদিন মেলবোর্নে প্রায় ৬০,০০০ হাজার দর্শকের সামনে ঠিক এরকম -ই ঘটেছিল মুরালিধরনের সাথে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে বেড়ে উঠা ছেলেটার ক্যারিয়ার সবে শীর্ষে পৌঁছুনোর পথে। কিন্তু বিধি-বাম। সেদিন এক-দুবার নয় ছেলেটার সাতটা বলে নো-বল কল করে প্রশ্ন তুলেন আম্পায়ার।

ছেলেটা সামনে থেকে দেখছেন তার অধিনায়ক কিভাবে আম্পায়ারের সাথে কথার লড়াই করছেন ওই নো-বল গুলোর বিরুদ্ধে। দেখছেন তার জন্য অধিনায়ক - সতীর্থদের নিয়ে মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন। একটা গন্ডগোল পরিস্থিতি। যেখানে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব তাকিয়ে - সাথে তাকিয়ে টিভি ক্যামেরার তাক করে রাখা অসংখ্য তীক্ষ্ণ চোখ।

সেসব ক্যামেরার চোখগুলো বারবার দেখাচ্ছিল বাউন্ডারি লাইনে কতটা র্নিলিপ্ত ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ছেলেটা। ভেতরে ঝড় বয়ে গেলেও, দেখে বুঝা যাচ্ছিলো না ঝড়ের প্রভাব ঠিক কতটা মুষড়ে দিয়েছে। তবে সে ঝড় কাবু করতে পারে-না। ক্যারিয়ার -জুড়েই ম্যারাথন স্পেল করে যাওয়া ছেলেটা সেই ঘটনার পর বল করে যাওয়া আপনাকে সেটা -ই বুঝিয়ে দিবে।

Muttiah-Muralitharan

এতকিছুর পর এক পসলা চিন্তায় আপনি ভাবছেন ঝড় থেমে তরতর করে মসৃণ রাস্তায় ছেলেটার ক্যারিয়ার এগিয়ে যাচ্ছে। আপনার ভাবনা ভুল প্রমাণ করে - কিছু দিনের মধ্যে আবার পড়লেন একই বাধার মুখে।

একটু চিন্তা করুন তো - তেইশ বছরের একটা ছেলে এত বাধার মুখে পড়ে কতক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারে নিজেকে? ক্রিকেটের এই বিশাল জগৎ সাথে পরীক্ষা-ঘারে নিজেকে বারবার এতগুলো সূক্ষ্ম যন্ত্রের সামনে সর্পে দেওয়া! আপনার পৃথিবী কোথায় গিয়ে ঠেকছে বুঝতে পারছেন? এর সাথে যুক্ত হবে মিডিয়ার প্রশ্নবাণে জর্জরিত হওয়া। তবে ছেড়ে চলে যাবেন বলে এই জগতে আসেন -নি তিনি। তাইতো - সবকিছু পেছনে ফেলে বারেবারে ফিরেছেন চিরচেনা ঠিকানায়।

এতক্ষণ বলা সেই ছেলেটা ১৯৭২ সালের আজকের দিনে ক্যান্ডিতে একটি তামিল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি -ই সেই - যিনি স্পিন ভেলকিতে বিশ্বকে মাত করে যাওয়া মুত্তিয়া মুরালিধরন নামক 'স্পিন গ্রন্থ'। বাবা ক্যান্ডিতে একটি বিস্কুট তৈরির ব্যবসা পরিচালনা করতেন। এই ছেলেটা -ই স্পিন বোলিংয়ের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়ে আপন মহিমায় ব্যাটসম্যানের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন।

তবে তার শুরুটা হয়েছিল 'মিডিয়াম পেসার' হিসেবে। কিন্তু যে ছেলে বাইশ গজে বলের 'নাগিন নাচন' করিয়ে 'ফার্স্ট' হবেন তিনি কি আর 'মিডিয়ামে' থাকতে পারেন? তাই -তো স্কুল কোচ সুনীল ফার্নান্দোর পরামর্শে অফ-স্পিন বোলিং শুরু করেন মুরালিধরন - বয়স তখন সবে চৌদ্দ। পিচে বলকে 'হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা' বানিয়ে ফেলার সেই শুরু। যে 'পিছুটান' চলেছে দেড় যুগের বেশী সময় ধরে।

১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার শ্রীলঙ্কা সফরের প্রস্তুতি ম্যাচে যাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তী অ্যালান বোর্ডারের মুগ্ধতা। সেই সফরের দ্বিতীয় টেস্টে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুরালির প্রথম পদচিহ্ন অঁঙ্কন। তারও একবছর পরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ওই দুটি চোখের পলক পড়ে।

সাদা-চোখে পুরোপুরি লেগ-স্পিনার বনে যাওয়া মুুরালি বিশ্বের একমাত্র লেগ স্পিনিং- অফ স্পিনার। এখানেই আপনি খুঁজে পাবেন মুরালির বিশেষত্ব। এখানেই তিনি সবার চেয়ে ব্যতিক্রম-ধর্মী হয়ে যান। এখানেই লুকিয়ে রয়েছে দিনের পর দিন ব্যাটসম্যানকে ঘায়েল করে যাওয়া- একেকটা বিষাক্ত ছোবলের কাহিনী।

কি ছিল না মুরালির হাতে? অফ-স্পিনে দ্রুত টপস্পিনার, রহস্যময় দুসরা কিংবা বিষাক্ত কোন বিগ টার্ন ডেলিভারি - এই সবকিছুর মিশেলে তিনি ব্যাটসম্যানের সাক্ষাত আতঙ্কের মুত্তিয়া মুরালিধরন। এমনি এমনি তো আর অ্যালান বোর্ডারের মতো একজনের চোখে মন্ত্রমুগ্ধের পাত্র হয়ে যান নাই।

যে আপনি - এই মুহূর্তে চিন্তা করছেন এতসব বির্তক, এতসব প্রশ্ন, চারদিক থেকে ধেয়ে আসা দুয়োধ্বনি আপনি হলে এতক্ষণে এখানে পাট চুকিয়ে পিছু হটতেন! কিন্তু যাকে নিয়ে কথা হচ্ছে তিনি এই জায়গায় গিয়ে আপনার আমার চেয়ে আলাদা হয়ে যান। একেকটা - ম্যারাথন স্পেল -য়ের মতো - তিনি কব্জির মোচড় নিয়ে জেগে উঠা অমানিশাগুলো পাড়ি দিয়েছেন। যার পেছনে সৌন্দর্যের লীলাভূমি লঙ্কা দ্বীপ, সামনে ক্রিকেট আভিজাত্য - তাকে আপনি এসব বির্তক আর বাধার মাঝে আটকিয়ে রাখতে পারবেন না।

মুত্তিয়া মুরালিধরন -কেও পারা যায় নাই। দর্শকের দুয়োধ্বনি - এমনকি অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রীর টিটকারি কোন কিছুই তার সামনে বাধা হয়ে আসতে পারে -নাই।

540142115-1444152277-800

আরেকটা দৃশ্যের অবলোকন করা যাক। চাকরি জীবনের একটা লম্বা অধ্যায় পেরিয়ে আপনি ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে। তখন -ই একদিন আপনার চাকরি নিয়ে সর্বোচ্চ মহল থেকে প্রশ্নের সম্মুখীন হলেন। পৃথিবী, সমাজ বাস্তবতা, পরিবার এই চিন্তায় ততক্ষণে আপনার তথৈবচ অবস্থা।

আপনার মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে আপনি বড্ড নিঃসঙ্গ। ক্যারিয়ার যখন চূড়ায় উঠছে আবারো শতশত প্রশ্ন, শতশত ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হবে মুরালিধরনকে। সমস্যা সেই পুরনো। এবার বোলিং শুদ্ধতা প্রমাণ করতে হবে মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়িয়ে থাকা মার্ক নিকোলাসকে। ক্যামেরা নিয়ে ফুটেজের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে।

তাদেরকে যারা এই বেষ্টনীর বাহির থেকে প্রতিনিয়ত  প্রশ্ন তুলছে। তাদেরকে যারা ফুটেজের পূঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করবে। প্রমাণ করতে অর্জিত - ৫২৭ টেস্ট উইকেটের যর্থাতথা। এখানে মাথায় রাখুন আপনাকে শুধুমাত্র প্রমাণ করতে হবে আপনার সর্বোচ্চ মহলে। একজন মানুষ -কে নিয়ে যখন বারেবারে প্রশ্ন উঠে। তখন আসলে ছেড়ে দিয়ে লুকিয়ে বাঁচা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না! কিন্তু মুরালিধরন আপনার স্বপ্নের সেই নায়ক যিনি প্রতিরাতে স্বপ্নে এসে আপনার বাস্তবের অধরা স্বপ্নগুলোর সাথে আপনাকে সাক্ষাৎ করান। তবে মুরালির এই কন্টকাকীর্ণ স্বপ্নযাত্রার স্বপ্নদেখা স্বপ্নে নয় বরং বাস্তবতার গায়ে মাখানো জটিলতায়।

আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন - আকাশে যে তারায় আলো বেশী তার বদনাম বেশী। মুরালি ক্রিকেট আকাশে আলোকিত সেই উজ্জ্বল তারা। তাকে নিয়ে মিথ রটবে, সমালোচনা হবে সেটা -ই বোধহয় স্বাভাবিক। সেই ছাত্রের মতো - যে সবসময় ভালো করেও শিক্ষকের বকুনি খায়। কিন্তু তার পক্ষে কথা বলে পরীক্ষার রেজাল্ট শীট। মুরালিধরন -য়ের জন্য পরিসংখ্যান নামক একটা রেজাল্ট শীট রয়েছে। সে পরিসংখ্যান বড্ড বেরসিক জিনিস - চোখ না বুলালে আপনি হয়তো বুঝতে -ই পারবেন কতকিছু অজানা রয়েছে। আর কত মিথ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ছেন।

যে সময় -এ খেলেছেন - এক সুরে সুর তুলে আগানোর মতো কাউকে পাশে পাননি। মধ্য-সাগরে ডুবন্ত জাহাজকে একার কাঁধে ছড়িয়ে তীরে নিয়ে এসেছেন বহুবার। ক্যারিয়ারে ১৩৩ টেস্টের ৫৪ ম্যাচে ছিলেন জয়ী দলের সদস্য। এই ৫৪ ম্যাচে শিকার করেছেন ৪৩৮ উইকেট। ম্যাচপ্রতি উইকেট নিয়েছেন ৮.১ টি করে - প্রতি উইকেটের জন্য বোলিং গড় ১৬.১৮। চোখ কপালে উঠার মতো পরিসংখ্যান বটে!

বলের উপর ব্যাটের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের সে সময়গুলোয় তিনি ছিলেন সামনের বেঞ্চের ছাত্র। সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পাওয়া শেন ওয়ার্নও ছিলেন তার পরের অবস্থানে।

সাদা পোশাকের এমন ঈর্ষণীয় সাফল্য রঙ্গিন পোশাকে কতটা ছোঁয়াতে পেরেছেন মুরালি? তাহলে একটু রঙিন পোশাকের পরিসংখ্যানের কাছে যাওয়া যাক। রঙিন পোশাকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট -  ১০ বার নিয়েছেন মুরালিধরন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে চামিন্দা ভাস ছাড়া বিশ্বমানের কোনো বোলিং সঙ্গী তিনি পান -নাই। শ্রীলঙ্কাকে টেনে নিয়ে গেছেন একার কাঁধে - গড়েছেন সব অবিশ্বাস্য কীর্তি। রেটিং -য়ের চূড়া - বোলিং র‍্যাঙ্কিং সমানতালে বিচরণ করেছেন  মুরালি।

আপনার চিন্তার পরিসীমা কতটুকু বিস্তৃত হতে পারে? কতটুকু প্রসারিত হলে বুঝতে পারেন ক্রিকেট বিধাতা বিদায়বেলায় নাটকীয় মাহেন্দ্রক্ষণ মুহূর্তের একটা চিত্রনাট্য লিখে রেখেছেন? আপনার ভাবনার জগৎ যত -ই বিশালতা ছড়াক হলফ করে বলা যায় মুত্তিয়া মুরালিধরন -য়ের বিদায়ের সীমা অতিক্রম করে নাই!

ক্রিকেট বিধাতা এমন -ই চিরজাগরুপ মুহূর্তের কল্পনা করে রেখেছিলেন মুত্তিয়া মুরালিধরনের জন্য। ক্রিকেট বিধাতা শেষ-লগ্নে আক্ষেপ রেখে তার অনেক মহীরুহকে বিদায় দিয়েছেন। যেমন শেষ ইনিংসে মাত্র ৪টি রানের জন্য স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড় ১০০ হয়নি - ৪ রানের জন্যই শেষ টেস্ট ইনিংসে সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ডনের সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙা সুনীল গাভাস্কারের। তবে মুরালিধরনের জন্য ক্রিকেট কোন আক্ষেপের গল্প রাখে নাই। সব পূর্ণতা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন।

unnamed

আবার আপনার চিন্তার সীমা-পরিসীমায় আসা যাক। ষোলকলা পূর্ণ করে বিদায় দেবেন বলে কত রহস্য জমিয়ে রেখেছিলেন। আর ক্রিকেট বিধাতার গল্পে সায় দিয়েছেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। ভারতের নবম উইকেট পতনের পর দুই ব্যাটসম্যানের চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে গেছেন। আপনি হয়তো কল্পনা করে নিয়েছেন আর হচ্ছে না ৮০০ উইকেটের  মাইলফলক ছোঁঁয়া।  

ওই মুহূর্তে এটা তো কল্পনা করেন নাই লেগ স্লিপে মাহেলা জয়াবর্ধনে যখন প্রজ্ঞান ওঝার ক্যাচ   নিবেন - বোলারের নাম হবে মুত্তিয়া মুরালিধরন?  যদি শুধুই কল্পনা করে থাকেন - সেটাকে বাস্তবে নামিয়ে আনলেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। হ্যাঁ, বহু চেষ্টার পর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ! ৮০০ টেস্ট উইকেটের মাহেন্দ্রক্ষণ। গলের বিশাল জায়ান্ট স্কিনে ভাসছে যে সংখ্যা - অন্য সাধারণ দিনে সেই সংখ্যা নিশ্চিত এতটা ঔজ্জ্বল্য ছড়াতো না। যতটা ঔজ্জ্বল্য সেদিন ছড়িয়েছে।

এ বিদায় পাঠকের মনে ঢেউ তুলে রুপকথার কোন গল্পের পরিসমাপ্তির মতো। যেখানে বিদায় শেষ হয়ে যায় কিন্তু সেটার স্বাদ চিরকাল মনে রয়ে যাওয়ার মতো খোদাই হয়ে যায়। এসব কিছুই দর্শকদের মনে চির-জাগ্রত হয়ে থাকবে। সঙ্গে থাকবে মুরালিধরনের মুখে চির-অমলিন ওই হাসিটাও। এই রূপকথার মতো সমাপ্তিতে যেটি আরও বেশি ঔজ্জ্বল্য ছড়াল।

শুভ জন্মদিন স্পিন জাদুকর মুত্তিয়া মুরালিধরন।