• ফুটবল

আইভরিকোস্টকে নতুন অক্সিজেন দেয়া ফুটবলার দ্রগবা।

পোস্টটি ১৮৬৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

 গত কয়েকবছর ধরে দেশটিতে চলছিলো হত্যা, খুন, রক্ত, গৃহযুদ্ধ, বসন্তের বাতাসে ও যেনো ছিলো না শান্তির কোমল শীতল বাতাস। ঠিক তখনই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সুদানকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলো আফ্রিকার এই দেশটি। যেন আনন্দে দিশেহারা গোটা দেশ, সব কিছু ভুলে গিয়ে যেনো ফুটবলের আনন্দে মেতে উঠলো  গোটা আইভরিকোস্ট।

সময় এসেছে এবার দেশের জন্য কিছু করার, জাতির জন্য কিছু করার ঠিক সে সময়ে ফুটবলার দ্রগবা যেনো অনেকটাই রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায় বলেছিলেন, " এই দিনটায় ভিক্ষা চাচ্ছি আপনাদের কাছে। মুক্তি দিন আমাদেরকে,আমরা মুক্তি চাই।আমাদেরকে আনন্দে বাচতে দিন। নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে। এবার অস্ত্রটা নামিয়ে ফেলুন। "বিশ্বের বড় বড় ক্ষমতাবান রাষ্ট্র,জাতিসংঘের আহ্বান, অনুরোধ যেখানে ব্যর্থ ঠিক তখনই এক ফুটবলই দেশকে করেছে একত্র, দেশে ফিরিয়ে এনেছিলো শান্তি।

দিদিয়ের দ্রগবা ১১ মার্চ ১৯৭৮ সালে জন্ম নেন আইভরিকোস্টের আবিদজানে। তবে, মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তার মা -বাবাকে ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিলো ফ্রান্সে। যদি ও সমস্যার জন্য আবার ৩ বছর পর নিজ দেশেই আসতে হয়েছিলো এই ফুটবলারের এবং পরবর্তীতে আবার ও ফ্রান্সে আসেন দ্রগবা। শুরুর দিকে অনুশীলনে ও নিয়মিত হতে পারেননি। যুব দলে তার অভিষেক ঘটে ২১ বছর বয়সে, এরপর ৩৪ ম্যাচে ১৭ গোল করে শেষ সারির দল গুইনগাম্পকে ৭ম স্থানে এনে দেন দ্রগবা৷ তার পারফরম্যান্স এর উপর নজর দিলো ফ্রেঞ্চ জায়ান্ট মার্সেই, যোগ দিলেন মার্সেই এ। এরপর সে মৌসুমে ২৪ গোল করে ডাক পান ইংলিশ জায়ান্ট চেলসিতে। চেলসিতে যোগ দিয়েই ৫০ বছর পর চেলসিকে লীগ শিরোপার স্বাদ দেন, এরপরের বছর ও প্রিমিয়ার লীগের স্বাদ এনে দেন দ্রগবা এবং তিনিই সর্বপ্রথম আফ্রিকান যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে ১০০ গোল করেছিলো। ২০১২ সালে এফ এ কাপের ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে জয়সূচক গোল এবং চ্যাম্পিয়নস লীগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ও জয়সূচক পেনাল্টিতে গোল করেন দ্রগবা। ক্লাব ফুটবলে ৪৯৭ ম্যাচে ২২০ গোল করেন এই ফুটবলার।

শুধুই কি ক্লাব সাফল্য? না, ক্লাবের পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়ে ও সাফল্য পেয়েছেন এই আফ্রিকান ফুটবলার। নিজ দেশ আইভরিকোস্টকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপের মঞ্চে যেখানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলো দ্রগবা। আইভরিকোস্টকে আফ্রিকান কাপের ফাইনালে ও নিয়ে গিয়েছিলো এই ফুটবলার। হয়েছেন বর্ষসেরা আফ্রিকান ফুটবলার ও। জাতীয় দলের হয়ে ১০৫ ম্যাচে ৬৫ গোল করা এই স্ট্রাইকার শুধু একজন ফুটবলার নন, আইভরিকোষ্ট এর প্রতিটি মানুষের কাছে ভালোবাসার চাইতে ও যেনো অনেক বেশী। ভালোবাসার চাইতে বড় কিছু বলেই তো রাস্তার পোস্টার, কফি শপে, শপিং মলে, জুতা, ব্যাগে এই মানুষটির ছবি শোভা পেতো। শুধু গোটা জাতিকে এক করেছিলো ফুটবলীয় শক্তি দিয়ে, জাতিকে দেখিয়েছিলো নতুন পথ, জাতিকে দিয়েছিলো অক্সিজেন।