• অন্যান্য

শেখ কামাল, আকাশী নীল " আবাহনী"

পোস্টটি ২১০৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

শেখ কামাল, আকাশী নীল " আবাহনী" 

কালো রং এর চশমার ফ্রেম!  সাথে দাঁত দেখানো হাসি আর সাথে বড় এক গোঁফ।   মাত্র ২৩ বছর বয়সে তার হাত ধরে দেশে আধুনিক ক্লাব  এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো। যার হাতে গড়া সেই ক্লাব সুনাম অর্জন করেছে দেশ এবং দেশের বাহিরে। যার হাতে গড়া ক্লাবটির জন্য সমর্থকদের রয়েছে অগাধ ভালোবাসা, আবেগ, অনূভুতি যাকে বলে অন্ধভক্ত। যার হাতে গড়া ক্লাবটির সেই আকাশী নীল পতাকা উড়েছিলো মানুষের বাসার ছাদে ছাদে। জ্বি, বলছিলাম " শেখ কামাল" এর কথা। যাদের বুনা বীজে আজকের আবাহনী তাদের মাঝে তিনি অন্যতম একজন। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে শেখ কামাল দ্বিতীয়।

 

শাহীন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

 

এখনকার আবাহনী ক্লাব একটা সময় এমন ছিলো না, ছিলো একদমই অব্যবহৃত একটা জায়গা হিসেবেই। ছেলেদের আন্দোলন, একসাথে হওয়া, তখনকার সময় খুব সম্ভবত ছিলো ১৯৬৪ সাল, এরপর ইত্তেফাক পত্রিকার ফটোগ্রাফার দিয়ে এগুলা কভার করানো, রিপোর্ট করানোর এবং সব যাবতীয় হিসাব শেষ করেই ১৯৬৬ সালের দিকে আবাহনী ক্লাবের সাংগঠনিক কাঠামো হয়। শেখ কামাল তখন বর্তমান শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব যা তখনকার সময়ে ধানমন্ডি ক্লাব নামেই পরিচিত ছিলো তার সাথে জড়িত ছিলো। কিন্তু শেখ মুজিবই শেখ কামালকে বলেন আবাহনী ক্লাবে যেতে এটা ১৯৬৮ সালের ঘটনা। সে সময় ধানমন্ডি এলাকাবাসীকে চিঠির মাধ্যমে ক্লাবের নাম নির্ধারণ এর কথা জানানো হয়। এলাকার মুরুব্বিরা ও নাম দেন। তবে, সর্বশেষে ৮-১০ টি নাম একটু বেশী পছন্দ হয়।তার মধ্যে একটি ছিলো ভিন্ন ধরনের নাম " আবাহনী" , নামটা দিয়েছিলো বাংলা অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। পরবর্তীতে বাংলা অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, আবাহনী অর্থ হচ্ছে আগমনী বার্তা, আগমনী সংগীত, আগমনী ধ্বনি। আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালক হারুনুর রশিদ কালের কন্ঠকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেই জানা গিয়েছে এইসব তথ্য।

দেশ স্বাধীনের পর ’৭২-এ ‘আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থার নামে সংগঠিত করেন ফুটবল দল ‘ইকবাল স্পোর্টিং’, আর ক্রিকেট, হকির দল ‘ইস্পাহানী স্পোর্টিং’। পরে এসব দলের সমবায়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে ‘আবাহনী ক্রীড়া চক্র’। এমনকি সে সময় ফুটবলের উন্নতির জন্য ১৯৭৩ সালে আবাহনীতে বিদেশি কোচ বিল হার্টকে নিযুক্ত করে সবাইকে যেন চমকে দিয়েছিলো আবাহনী ক্লাব ম্যানেজমেন্ট।

 

যদি ও ধানমন্ডির সেই ৩২ নাম্বার বাড়িতে  ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই কালরাত্রিতে নির্মমভাবে গুলির আঘাতে নিহত হন শেখ কামাল। যেখানে প্রতিপক্ষের প্রথম শিকার ও ছিলেন শেখ কামাল। হয়তো তিনি আজ বেঁচে থাকলে আবাহনী ক্লাবের অবস্থান আর ও শক্ত হতো, দক্ষিণ এশিয়া ছাপিয়ে এশিয়ার মধ্যে একটা অবস্থান করতো আবাহনী ক্লাব, হয়তো হাজার ব্যস্ততার মাঝে ও সন্ধ্যা নামার আগে বিকালে সেই ধানমন্ডি এলাকার ভাই- ব্রাদার্স নিয়ে আবাহনী ক্লাবেই আড্ডায় মেতে উঠতেন আমাদের কামাল ভাই।