• ফুটবল

রড্রিগো কি মাদ্রিদের ভবিষ্যতের মেইন প্ল্যেয়ার হতে পারবে ?

পোস্টটি ৬৭৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

২০১৩ সালে যখন রিয়াল মাদ্রিদ নেইমারকে কিনতে ব্যর্থ হয়েছিল  তখন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ব্রাজিলের মার্কেটকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পেরেজ দ্রুত তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে।তখন থেকে পেরেজ ব্রাজিলিয়ান ইয়ং ট্যালেন্ট এর উপর বিনিয়োগ করতে শুরু করে । মাদ্রিদ  ব্রাজিলিয়ান ট্যালেন্টেড প্ল্যেয়ার সাইন করাতে ১০০ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি খরচ করে।

 সেই ব্রাজিলিয়ান ট্যালেন্টেড প্ল্যেয়ারদের মধ্যে অন্যতম সেরা ছিল রড্রিগো। রড্রিগো গত গ্রীষ্মে সান্তোস থেকে রিয়াল মাদ্রিদে জয়েন করে এবং পেরেজকে নেইমারের কথা ভুলে যেতে সাহায্য করে । সান্তোসের সঙ্গে রদ্রিগোর জন্য রিয়াল ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর ডিল করে ।

সান্তোসের হয়ে অভিষেকের আগে রড্রিগো প্রফেশনালি ২০১১ সালে ফুটসাল দলে জয়েন করেছিল। ছয় বছর পর সে সান্তোসের প্রধান ডরিভাল জুনিয়র  স্পোর্টিং ক্রিস্টালের বিপক্ষে কোপা লিবার্তাদোরেস সংঘর্ষের আগে মেইন টিম এর সাথে ট্রেনিং এর জন্য ইনভাইট পায়।

 

 রড্রিগো তার ম্যানেজারকে ট্রেনিংয়ে মুগ্ধ করে এবং পরবর্তীতে প্রথম দলে খেলার সুযোগ পায় ।২০১৭ সালে ব্রাজিলিয়ান কোপা লিবার্তাদোরেস খেলায় সান্তোসের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হয়ে ওঠে এবং শীঘ্রই ক্লাবের অন্যতম হটেস্ট ইয়ং প্ল্যেয়ার হিসেবে নাম হয় তার ।

 

লা লিগায় যাওয়ার আগে আটটি গোল করে সেই বছরের শীর্ষ ফ্লাইটে উইঙ্গারের সেরা গোল স্কোরিং ক্যাম্পেইন ছিল সে ।ওসাসুনার বিপক্ষে সেপ্টেম্বরে জিনেদিন জিদান রড্রিগোকে লা লিগায় অভিষেক করায় 

রড্রিগো তার দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে গালাতাসারয়ের বিপক্ষে নিখুঁত হ্যাটট্রিক করে। 

 সেই সাফলের সত্ত্বেও রদ্রিগো ২০২০ সালে জিদানের মেইন  স্কোয়াডে জায়গা পেতো না । তার অবশ্য ভ্যালিড রিজন আছে ।

 

 

রিয়াল মাদ্রিদের ২০২০-২১ মৌসুমে অনেক ইনজুরি থাকা সত্ত্বেও রিয়াল একটি শক্তিশালী টিম ছিল এবং রিয়াল এর মিডফিল্ডকে ইউরোপীয় ফুটবলের সেরা মিডফিল্ড হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।এবং রিয়ালের অ্যাটাকে ছিল অন্যতম বেস্ট স্ট্রাইকার বেঞ্জেমা । যার গোল-স্কোরিং এবং এসিষষ্ট  উভয়ই শীর্ষস্থানীয়।

 তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল এত অযোগ্য কেন ?  কেন তারা লিগ শিরোপা নিশ্চিত করতে পারেনি ?  হ্যাজার্ডের ছিল আরেকটি ইনজুরিময় বছর । এবং দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে ঠিক ঐ সময়েই ভিনি এবং অ্যাসেনসিও সবচেয়ে খারাপ  সময়ে ছিল ।একেবারে হতাশাজনক । বলতে গেলে তাদের ফর্ম ছিল একেবারে জঘন্য । ইজি ইজি চান্স মিস করতেছিল । ১ভি ১ সিচুয়েসনএও গোল করতে পারতাছিল না তারা ।

 

 উইংগারদের কাছ থেকে হতাশা হলেও একজন মানুষও অন্তত বলতে পারে যে ২০২০-২১ মৌসুমে রড্রিগো ছিল রিয়ালের সেরা উইংগার । এবং রড্রিগো উৎসাহজনক ছিলেন এবং দেখিয়েছেন যে সে মাদ্রিদের ভবিষ্যতের মেইন প্ল্যেয়ার হতে পারেন।

 আসুন রড্রিগোর  স্টেটস দেখি। রড্রিগো খুব বেশি প্লে টাইম পায়নি । টোটাল সব মিলিয়ে ১০০০ মিনিটেরও কম খেলেছে সে । গ্রানাডার বিপক্ষে ডিসেম্বরে সে ইনজুরিতে পরে যায় যার  কারণে তাকে প্রায় এক মাস রেস্ট নিতে হয় । 

 

 সে মাত্র একটা গোল করে । কিন্তু সে ৬ টা অ্যাসিস্ট করে । প্রতি ৯০ মিনিটে প্ল্যেয়ারদের মধ্যে অ্যাসিস্টে   সেরা হার ছিল তার । যার মধ্যে দুই বার ৯০ মিনিট খেলে (৯০)  প্রতি ৯০ মিনিটে ০.৫৫ ছিল তার।  তাই যদি আমরা টার্গেটা এবং  অ্যাসিস্ট একত্রিত করে দেখি তবে শুধুমাত্র করিম ছিল রড্রিগোর চেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের হার ।

 তার মানে যদি রড্রিগো পুরো মৌসুমে ২৫০০ মিনিট খেলত তাহলে  আমরা আশা করতে পারি যে তার আর অনেক গোল এন্ড  অ্যাসিস্ট থাকত । 

 

  সে একজন বুদ্ধিমান প্ল্যেয়ার । রড্রিগো তার পছন্দের পজিশনে না থাকলেও রাইট উইঙ্গে খেলে । যেখানে অ্যাসেনসিও এবং ভিনিসিয়াস নিয়মিত তাদের পছন্দের পজিশনে শুরু করে এবং হ্যাজার্ডের ক্ষেত্রেও তাই । তবুও তার আত্মবিশ্বাস এবং মেইন টিমে একীভূত হওয়ার এই বাধা সত্ত্বেও সে তার জায়গা ধরে রেখেছে ।

 রড্রিগো ভক্তদের কাছ থেকে সম্মান অর্জন করেছে এবং অনেকর  ট্রলেরও শিকার হয়েছে সে  এবং আপনি দেখতে পারেন যে বেনজেমার মতো সতীর্থরাও তাকে সম্মান করে। তারা প্রশংসা করে যে সে সাধারণত পাস পাওয়ার জন্য আক্রমণাত্মকভাবে সঠিক পজিশনে থাকে । এবং রিয়াল মাদ্রিদে এটি করা সহজ নয় যখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় থাকে না এবং যখন সেই ফাইনাল পাসটি কার্যকর করার জন্য কম জায়গা থাকে।

 

 এই মুহুর্তে রিয়ালের কাছে হ্যাজার্ডের দীর্ঘমেয়াদী মূল্য খুবই কম এবং রিয়াল পিএসজি থেকে এমবাপ্পেকে সাইন করতে পারলে তাকে সেল দিয়ে দিতে পারে। কাগজে কলমে আপনি মনে করতে পারেন যে সে রিয়ালের সেরা উইঙ্গার  কিন্তু তার ইনজুরির কারণে আমি মনে করি না সে সেরা উইঙ্গার । কারন সে রিয়াল এর হয়ে অনেক কম ম্যাচ খেলেছে ইনজুরির কারনে ।

 

 

 

আপনি যেনে অবাক হবেন যে রড্রিগো সান্তসে লেফ্ট উইঙ্গার হয়ে খেলত ।রিয়াল মাদ্রিদ যখন নেইমারকে কিনতে ব্যর্থ হয় তার কিছু বছর পর তারা ভিনি কে সাইন করায় লেফ্ট উইঙ্গার পজিশনের জন্য । যখন রিয়াল রড্রিগো কে কিনতে আগ্রহি হয়েছিল তখন রড্রিগো সান্তসে লেফ্ট উইঙ্গার হয়ে খেলত রিয়াল অলরেডি ভিনি কে লেফ্ট উইঙ্গার পজিশনের জন্য কিনে রেখে ছিল তাই তারা রড্রিগো কে লেফ্ট উইঙ্গার পজিশনে কিনতে পারত না তাই পেরেজ সান্তসের কোচ কে বলে  রড্রিগো কে রাইট উইঙ্গার পজিশনে খেলাতে বল্ল ।  রড্রিগোর সান্তস টু রিয়াল ডিল প্রায় হয়ে গেছিল তাই সান্তসের কোচ পেরেজ এর কথা শুনে রড্রিগো কে রাইট উইঙ্গার পজিশনে খেলাতে শুরু করল । এভাবেই রড্রিগোকে রিয়াল রাইট উইঙ্গার পজিশনের জন্য কিনল এবং খেলাতে শুরু করল । এবং সে রাইট উইঙ্গে ভালোই করছে ।এভাবেই রড্রিগো লেফ্ট উইঙ্গার থেকে রাইট উইঙ্গার হয়ে গেল ।

 

এটা সত্য যে রড্রিগোর জন্য ২০২০-২১ মৌসুমটা খুব একটা ভালো যায় নি । তার একটা কারন হল ” হি ডোন্ট গেট এনাফ প্লে টাইম “ । তাকে আর কোয়াকটা ম্যাচ খেলালে হয়ত সে ভালো করত । এমন অনেক প্ল্যেয়ার আছে যারা নিউ ক্লাবে ঠিকমত ফিট হতে পারে না যার কারনে সে পারফরমেন্স ড্রপ করে । তাই বলে কি তারা আবার ফর্মে ব্যাক আসে না । শুরুতেই কাউকে জ্যাজ করা ঠিক না । তাকে অনেকই ট্রল করেছেন তার গত সিজনের পারফরমেন্সর জন্য । সে তাদের কে তার খেলা দিয়ে জবাব দেতেছে । ২১-২২ সিজনে সে মোটামুটি ভালোই প্লে টাইম পাইছে এবং সে প্রভও করেছে যে সে কেন রিয়াল এর মত এত বড় ক্লাবের যোগ্য ।মেসিও তো এই সিজন এ পিএসজির হয়ে লিগে একটাও গোল করতে পারে নাই তাই বইলা কি সে খারাপ প্ল্যেয়ার ? সে ওয়ান অব দি বেস্ট প্ল্যেয়ার । রড্রিগোর হয়ত স্টার্ট টা ভালো হয় নাই তার জন্য এইভাবে ট্রল করা ঠিক না ।হঠাং করে পজিশন বদলানোর জন্য সে হয়ত ভালো ভাবে খেলতে পারতাসে না তাকে কিছু সময় দিলে হয়ত সে এই পজিশনে ভালো ভাবে ফিট হতে পারবে এবং আরও ভালো খেলতে পারবে ।  জাস্ট ট্রাস্ট হিম এন্ড ডোন্ট লুস হোপ ইন হার ।

 

 

 

                                 শুরুতেই কোন প্ল্যেয়ার কে জ্যাজ করা ঠিক না ।