• ফুটবল

হারিয়ে গিয়েও যিনি হারিয়ে যান নি!

পোস্টটি ৩৩৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

 

 

 

ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন উনি Arthur Wharton. ফুটবলার হলেও ফুটবলের জন্য বিখ্যাত নয়। ক্যান্সারে মারা যাওয়ার আগে কিংবা একটি অচিহ্নিত দরিদ্রের করবে সমাহিত হওয়ার কিছু কাল পরেও খুব বেশি জনপ্রিয় ছিলেন না।  ১৯৯০ সালের দিকে  পিল বাসিলি-  "An Absence of Memory" বই লিখার পর তিনি খুব চর্চায় আসেন তিনি। মানুষ তাকে যতটুকুই চেনে তা ফুটবলের জন্য নয়, বরং একজন কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলারের জন্য। হ্যাঁ! তিনি ফুটবল ইতিহাসের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রোফেশনাল ফুটবলার।

 

আর্থার ১৮৬৫ সালে জন্মেছেন ঘানাতে, মজার বিষয় হলো তার বাবা একজন ধর্মপ্রচারক ও ঘানার মন্ত্রী ছিলেন আর মা ছিলেন ঘানার রাজ পরিবারের সদস্য!  ছোটবেলায় কোনকিছুরই অভাব ছিলো না অর্থারের। বাবার ইচ্ছেই ইংল্যান্ডে আসেন ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য। তবে পড়াশোনা খুব একটা টানেনি অর্থারকে, পড়াশোনার চাইতে ফুটবল মাঠটাকেই বেশি আপন করে নিয়েছেন তিনি।

with team

তিনি তার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন ইংল্যান্ডের বহু পুরোনো Darlington Football Club 'এর হয়ে।  তিনি মূলত একজন গোলকিপার ছিলেন। নর্দান ইকোর নামে এক সাংবাদিক তখন বলেছিলেন, " আর্থার তার সময়ের ইংল্যান্ডের সেরা গোলরক্ষক।" তিনি ১৮৮৫ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং শেষ করেন ১৯০২ সালে।

 

ফুটবল তখন ততটা উপার্জনের মাধ্যম ছিলো না বলে আর্থারের জীবনের শুরুটা যতটা রঙিন ছিলো শেষটা ঠিক ততটাই মলিন! শুরুতে বলেছিলাম অচিহ্নিত দরিদ্রদের কবরে সমাহিত হয়েছেন। হ্যাঁ, সত্যি!  জীবনের শেষটা কয়লা খনিতে কাজ আর ট্রাক চালিয়ে শেষ করছেন! ৬৫ বছর বয়সে ঠোঁটে ক্যান্সার নিয়ে মারা যান ১৯৩০ সালে। (কয়লার খনিতে কাজ করার ফলে)

 

১৯৯০ এর দশকে তাকে নিয়ে বই না লিখা হলে তিনি হয়ত হারিয়েই যেতেন! বই লিখার কিছু দিন করে Sheffield United F.C. ও রেসিজশ ডিভাইডস মিলে তার কবর সংস্করণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন! তার ৬ বছর পর আর্থারকে Manchester Hall of Fame 'এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 2014 সালে St. George's Park (SGP) এ অর্থারকে স্বরণীয় করে রাখার জন্য ১৬ ফুটের একটা মূর্তি বানানো হয়। ( St. George's park হলো English Football Association's national football centre 'এর মধ্যে অবস্থিত একটি পার্ক।)

statue

আর্থরের জীবনের সমীকরণ কিছুটা জটিল!  জীবনের শুরুটা রাজকীয়ভাবে হলেও শেষটা নরকীয়, আর প্রাপ্তির স্বীকারোক্তির কথায় ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরুটা বা পুরো ক্যারিয়ারটাকেই যদি মলিন বলি শেষটা  তথা বর্তমান ঠিক ততটাই রঙিন!