• ফুটবল

হ্যাপি বার্থডে, ফেরেঙ্ক পুসকাস।

পোস্টটি ২০১৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

তাঁকে ডাকা হত “গ্যালোপিং মেজর” নামে।

আর্মিতে থাকার সময় আর্মির ফুটবল দলে খেলতেন। গ্যালোপিং মেজর নাম পান সেখান থেকেই। ইংরেজিতে গ্যালোপ(gallop) শব্দের অর্থ দ্রত ছোটা। বল পায়ে খুব দ্রুত ছুটতে পারতেন তাঁর সতীর্থরা তাঁকে এই নাম দেন।

১৯৫৩ সালে হাঙ্গেরি জাতীয় দল ইংল্যান্ডে গেলো একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। সেই ম্যাচ শুরুর আগে ইংল্যান্ড দলের একজন খেলোয়াড় হাঙ্গেরি জাতীয় দলের ক্যাপ্টেনকে দেখিয়ে মন্তব্য করলেনঃ

“আমরা ওদেরকে খুন করবো। বুঝেছো? আমরা ওদেরকে খুন করে ফেলবো মাঠে।”

ইংলিশদের দুর্ভাগ্য যে হাঙ্গেরির ক্যাপ্টেন ছিলেন গ্যালোপিং মেজর ওরফে ফেরেঙ্ক পুসকাস নিজেই। এর পরের ৯০ মিনিটে যা হল তার জন্য হয়তো সেই ইংলিশ খেলোয়াড় বহুবার আফসোস করেছেন, বহুবার দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠেছেন। নাকউঁচু ব্রিটিশদের অহংকার চূর্ণ করে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে ৬-৩ গোলে হারালো “ম্যাজিকাল ম্যাগিয়ার্স” নামক এক অর্কেস্ট্রা যার কন্ডাক্টর ছিলেন ফেরেঙ্ক পুসকাস।

আহ! কি একটা দল ছিল তাঁদের। গ্রসিকস, জোসেফ বজসিক, জোসেফ জাকারিয়াস, ন্যান্দর হিদেকুটি, জোলটান জিবর, স্যান্ডর ককসিস আর ফেরেঙ্ক পুসকাস। indexhbhjbkj

১৯৫৪ সাল। বিশ্বকাপের বছর। সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ঐ বিশ্বকাপ যে হাঙ্গেরি জিতবে এতে সন্দেহ প্রকাশ করার লোক ছিল না বললেই চলে। টানা ৩২ টা ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে খেলতে যায় হাঙ্গেরি। সকল প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে ফাইনালে উঠে যায় তাঁরা। ফাইনালে তাঁদের প্রতিপক্ষ তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি। যাদেরকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৮-৩ ব্যবধানে হারিয়েছিল হাঙ্গেরি।

‘বার্ন’এর ফাইনালে পুসকাস পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না। তারপরেও ম্যাচের ৬ মিনিটে গোল করে হাঙ্গেরিকে এগিয়ে দেন তিনি। ৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জোলটান জিবর। বিশ্বকাপ ট্রফি তখন পুসকাসের হাতে ওঠার অপেক্ষায়। কিন্তু জার্মানরা যে অন্য ‘মাল’ দিয়ে তৈরী জিনিস সেটা প্রমাণ করার শুরু সেবারই। ১০ মিনিটে ব্যবধান ২-১ করেন ম্যাক্স মরলক। ১৮ মিনিটে সমতা আনেন হেলমুট রান। এই হেলমুট রানই ৮৪ মিনিটে ‘মিরাকল’ ঘটিয়ে ফেললেন। তাঁর গোলেই হাঙ্গেরিকে ৩-২ এ হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতে জার্মানি। ম্যাচের এই ফলাফল সবার কাছে এতটাই অপ্রত্যাশিত ছিল যে পরবর্তীতে এই ম্যাচের নাম হয়ে যায় ‘মিরাকল অব বার্ন।’

indexiohugyf

indexbjhbhjklj

১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরিতে বিপ্লব শুরু হলে তিনি স্পেনে চলে আসেন। বিংশ শতাব্দীর সেরা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো’র সাথে জুটি গড়ে তোলেন। ৫ বার জেতেন লা লিগা, ৩ বার জেতেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ যেটা বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ নামে পরিচিত। এর মধ্যেই স্পেনের নাগরিকত্ব পেয়ে যান। তাই ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপে মাঠে নামেন স্পেনের হয়ে। তবে দুঃখজনক হল, হাঙ্গেরির সেই বিধ্বংসী মেজরকে স্পেনের হয়ে খুঁজেই পাওয়া যায়নি মাঠে।

indexhgfxfj

লিখতে বসেছিলাম ফেরেঙ্ক পুসকাসকে নিয়ে। কিন্তু দেখুন কত কথা বলে ফেললাম। আসলে পুসকাসকে নিয়ে লিখতে বসে ম্যাজিকাল ম্যাগিয়ার্স এবং রিয়াল মাদ্রিদ নিয়ে কিছু না বলা আর নীল আর্মস্ট্রংকে নিয়ে লিখতে বসে তাঁর চন্দ্র অভিযান সম্পর্কে কিছু না বলার মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই।  

১৯২৭ সালের ২রা এপ্রিল হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে জন্মেছিলেন এই গ্রেট ফুটবলার।


হ্যাপি বার্থডে, ফেরেঙ্ক ‘গ্যালোপিং মেজর’ পুসকাস।