• অলিম্পিক

মানুষ পাখির গানঃ পর্ব ১

পোস্টটি ২৪৫৭ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

সুইজারল্যান্ডের লুজানে অবস্থিত অলিম্পিক মিউজিয়ামে সুসজ্জিত কাঁচের বাক্সে রাখা আছে একখানা মেডেল, যার ছোট্ট বর্ণনায় লেখা আছে, "It is one of the noblest honours that can be bestowed upon an Olympic athlete."

না, অলিম্পিক স্বর্ণ, রৌপ্য, ব্রোঞ্জ কোনটাই না। কি সেই পদক? কি এমন মাহাত্ন্য সেই পদকের, যে অলিম্পিকের সবচেয়ে সেরা সম্মান আপনাকে এনে দিবে?

পদকটার নাম - পিয়েরে দ্য কুবার্তা মেডেল। নামটা চেনা চেনা লাগছে তো? হুম, আধুনিক অলিম্পিকের জনক পিয়েরে দ্য কুবার্তিনের সম্মানেই চালু করা হয়েছে এই পদক। প্রথম দেওয়া হয় ১৯৬৪ অলিম্পিকে।

কারা পান এই সম্মান? - ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি প্রদত্ত এই পদক কেবলমাত্র সেই সকল ক্রীড়াবিদই পান যারা খেলাধুলার আদর্শ ধরে রেখে ক্রীড়াসুলভ মানসিকতার দারুণ প্রদর্শন করেন অলিম্পিকে। এ পর্যন্ত ১২ জন ক্রীড়াবিদসহ মোটে ১৭ জন পেয়েছেন এই বিশেষ পদক। এবারের গল্প সেই অসাধারণ ক্রীড়াবিদদের নিয়েই...

 

 

বন্ধু তোমায় এ গান শোনাব বিকেল বেলায়......

 

আগস্ট ৪, ১৯৩৬, জার্মানি। বার্লিন অলিম্পিকের অন্যতম বড় আকর্ষণ লং জাম্পে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দুই কিংবদন্তী। একদিকে ইউরোপিয়ান রেকর্ডধারী ২৩ বছরের জার্মান তরুণ লুজ লং, অন্যদিকে ২২ বছরের বিশ্ব রেকর্ডধারী আফ্রো-আমেরিকান জেসি ওয়েন্স। বর্ণবাদী শ্রেষ্ঠত্বের ঘোরে বন্দী নাৎসীরা এই লড়াইকে নাম দিয়েছে, ‘ব্যাটল অফ কালারস’। এই ডুয়েল দেখতে স্বয়ং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলারও চলে এসেছেন স্টেডিয়ামে! 

আগের দিনই কৃষ্ণাঙ্গ ওয়েন্স জিতেছেন ১০০ মিটার স্প্রিন্টের স্বর্ণ। সকালে ২০০ মিটার হিটেই ভেঙ্গেছেন অলিম্পিক রেকর্ড, এবার নিজের প্রিয় ইভেন্ট লংজাম্পের হিট।  

পিটে এসে প্রথমবারের মত দেখলেন জার্মান তারকা লুজ লংকে। লং প্রথম লাফেই পেরোলেন ফাইনালে যাবার ন্যূনতম দূরত্ব, আরেকটু হলে প্রায় ছুঁয়েই ফেলতেন অলিম্পিক রেকর্ড। ওয়েন্সের কাছে এ আর এমন কি? বিশ্বরেকর্ডের মালিক অংশ নিলেন হিটে, প্রথম লাফে টেক অফ বোর্ড ছুঁয়ে যাওয়ায় ফল্ট হল, দ্বিতীয় চেষ্টাতেও করলেন একই ভুল। ওয়েন্স পড়লেন মহাবিপদে। বিকেলের ফাইনালে উত্তীর্ণ হবার জন্য শেষ চেষ্টায় ফল্ট ছাড়াই অতিক্রম করতে হবে কমপক্ষে ৭.১৫ মিটার।

বিমর্ষ ওয়েন্সের কাছে এগিয়ে এলেন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র লুজ লং। ওয়েন্সকে অবাক করে বললেন, ‘‘চোখ বন্ধ করে লাফ দিলেও তুমি যাবে ফাইনালে। এক কাজ করো, টেক-অফ বোর্ডের থেকে ১ ফুট সমান দূরে একটা রেখা টেনে তার মাঝামাঝি জায়গা থেকে লাফ দাও। তুমি নিয়মিত ৭.১৫ মিটারের চেয়ে অনেক দীর্ঘ লাফ দাও, তাই দূর থেকে লাফ দিলে ফাউলও হবে না, সহজেই ফাইনালে উঠবে।’’

পরামর্শ মেনে ওয়েন্স টেক অফ বোর্ডের ৪ ইঞ্চি দূর থেকে লাফ দিয়েও (৭.৬৪ মিটার) ভাঙলেন অলিম্পিক রেকর্ড। স্বাগতিক দর্শকদের প্রশংসা বৃষ্টিতে ভাসতে থাকা ওয়েন্স হাত মিলিয়ে নিজের জানা একমাত্র জার্মান শব্দে "Danke" (ধন্যবাদ) ৬ ফুটের বিশালদেহী জার্মানকে জানালেন কৃতজ্ঞতা।

 

 

 

১

ফটোগ্রাফঃ লং জাম্পের ফাইনাল চলাকালীন গল্পরত লুজ লং ও জেসি ওয়েন্স, অলিম্পিকের আইকনিক ছবিগুলোর একটি।

 

চরম উত্তেজনায় ঠাসা বিকেলের ফাইনালে এক ঘণ্টায় অলিম্পিক রেকর্ড ভেঙ্গেছিল ৫ বার। প্রথম ২ লাফেই দুবার নতুন রেকর্ড গড়েছিলেন ওয়েন্স (৭.৭৪ এবং ৭.৮৭ মি.), তবে প্রথমে সামান্য পিছিয়ে থাকলেও পঞ্চমবার ক্যারিয়ার সেরা লাফে ওয়েন্সের অলিম্পিক রেকর্ড ছুঁলেন লং। স্বাগতিক দর্শকরা তখন দারুণ সমর্থন যোগাচ্ছেন দুজনকেই। 

ভিআইপি বক্সে তখন অবাক করা দৃশ্য – উত্তেজিত ফুয়েরার দাঁড়িয়ে তালি দিচ্ছেন স্বদেশীর সমর্থনে, দূর থেকে মৃদু হাসি আর চোখের ইশারায় জানালেন লংকে যে করেই হোক জিততে হবে। কিন্তু ওয়েন্স এবার বের করে আনলেন নিজের সেরাটা। পঞ্চম লাফে পেরোলেন ৭.৯৪ মি. আর শেষ লাফে ৮.০৬ মি; ফাইনালে ৪র্থ বারের মত গড়লেন অলিম্পিক রেকর্ড। আর জবাব দিতে পারেননি সোনালী চুলের জার্মান। 

তবে হারার পরও তিনিই প্রথম অভিনন্দন জানান ওয়েন্সকে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ক্যামেরাবন্দী হন দুজন। পুরো দৃশ্য দেখে রাগে ফুঁসতে থাকা হিটলার বর্জন করেন পদক বিতরণী অনুষ্ঠান। পরে হিটলারের ডেপুটি রুদলফ হেসের তীব্র তিরস্কারের শিকার হন লুজ।

পরবর্তীতে সেই দিনকে স্মরণ করে ওয়েন্সের মন্তব্যটা স্থান পেয়ে গেছে বন্ধুত্বের চিরস্থায়ী দেয়ালে,

“It took a lot of courage for him to befriend me in front of Hitler... You can melt down all the medals and cups I have and they wouldn't be a plating on the twenty-four karat friendship that I felt for Lutz Long at that moment."

বার্লিন অলিম্পিকে কৃষ্ণাঙ্গ ওয়েন্স মোট জিতেছিলেন ৪ স্বর্ণ – দুটো অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে, বাকি দুটোয় বিশ্বরেকর্ড। একাই ধ্বংস করেছিলেন নাৎসীদের আর্যশ্রেষ্ঠ তত্ত্বকে।

অলিম্পিক চলাকালীন আরও গাঢ় হয়েছিল দুই বিপরীত মেরুর মানুষের বন্ধুত্বটা, বার্লিন ঘুরে বেড়িয়েছেন একসাথে। তবে এরপরে আর কখনো দেখা হয়নি তাদের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায় লুজের ডাক পড়ে জার্মানি থেকে, যুদ্ধের শেষ দিকে ইতালির সিসিলিতে মিত্রশক্তির আক্রমণে মারাত্নক আহত লং মারা যান ১৯৪৩ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে।

চিঠিতে যোগাযোগ রাখা ওয়েন্সকে পাঠানো শেষ চিঠিতেও ছিল অপূর্ব বন্ধুত্বের স্বাক্ষর। বন্ধুকে অনুরোধ করেছিলেন, যুদ্ধের পর লুজের একমাত্র সন্তান কার্লের সাথে দেখা করে তাদের গল্পটা বলতে,

"Someday find my son ... tell him about what times were like when we not separated by war. I am saying—tell him how things can be between men on this earth"

ওয়েন্স যুদ্ধের পর জার্মানিতে গিয়ে দেখা করেছিলেন বন্ধুর ছেলের সাথে, বলেছিলেন তাঁদের গল্পটা, পরে কার্লের বিয়ের সময় বেস্ট ম্যানও ছিলেন এই আমেরিকান কিংবদন্তী।

ওয়েন্সের কাছে হেরে পাওয়া পদকটা রূপার হলেও, বন্ধুত্ব যে নিখাদ সোনায় মোড়ানো, লুজ লং দেখিয়ে গিয়েছিলেন আশি বছর আগে ১৯৩৬ এর সেই সোনালি বিকেলটায়!

বার্লিন অলিম্পিকে স্বার্থহীন চরিত্র, ক্রীড়াসুলভ মানসিকতার চূড়ান্ত দেখানো লুজ লং-কে আইওসি ১৯৬৪ সালে প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে পিয়েরে দ্য কুবার্তা মেডেল (মরণোত্তর) দিয়ে সম্মানিত করে।

 

 

হাল ছেড়ো না বন্ধু......

 

পরের ঘটনাটা ১৯৮৮ সালে, দ্বিতীয়বারের মত এশিয়াতে বসেছে অলিম্পিক মহাযজ্ঞ, কোরিয়ার সিউলে। অলিম্পিক সেইলিং আয়োজিত হচ্ছে সিউল থেকে ৪৫০ কিমি দূরে অবস্থিত বুসানের পাশের খোলা সাগরে।

তারকা সেইলর লরেন্স লেমিউ আগের অলিম্পিকে স্টার ক্লাসে দারুণ পারফর্ম করেও পদক পাননি, এবার ফিন ক্লাসে পদক না পাওয়াটাই হবে অঘটন, গত দুই বছরের ফর্মটাও কথা বলছে তাঁর হয়ে।

৩২ বছরের কানাডিয়ান নিজের ইভেন্টে শুরুটাও করলেন দুর্দান্ত। মোট ৭ রেসের ৪টা শেষে আছেন এক নম্বরে, অধরা স্বর্ণ পদকটা উঁকি দিচ্ছে মনে। ২৪ সেপ্টেম্বরের সকালে ৫ম রাউন্ডে যখন নামছেন লেমিউ, পাশের কোর্সে তখন চলছে পুরুষদের ৪৭০ ক্লাসের প্রতিযোগিতা। আবহাওয়াটা সেইলিং এর জন্য চমৎকার।

অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ বদলে গেলো আবহাওয়া, বাতাস বইতে শুরু করেছে ঘন্টায় প্রায় ৩৫ নট বেগে, সাথে বাড়তে থাকা স্রোতের কারণে সৃষ্টি হওয়া ঢেউগুলো প্রায় দেড় তলা উঁচু বিল্ডিং এর সমান! হিমশিম খাচ্ছিলেন ডিঙ্গি সোজা রাখতেই। তবুও অভিজ্ঞতা আর নৈপুণ্যের মিশেলে লেমিউ ছিলেন সবার আগেই। কিন্তু বিশাল ঢেউয়ের কারণে প্রায় ৮ ফুট উঁচু কমলা রঙের দিক নির্দেশক বয়াকে দেখতে পাননি, ফলে একটি চক্র ঘুরতে ব্যর্থ হওয়ায় এক পয়েন্ট কাটা গেলো, নেমে গেলেন দু নম্বরে।

কিন্তু, কিছুক্ষণ পরেই ঘটলো দুর্ঘটনা। না, লেমিউ নন, অন্য ইভেন্টে সিঙ্গাপুর দলের ডিঙ্গি উল্টে গেছে স্রোত, ঢেউ আর বাতাসের তীব্র চাপে, কিছু বুঝতে পারার আগেই পড়ে একজন ছিটকে পড়লেন পানিতে, মাথায় আঘাতও পেয়েছেন বেশ। আর অপরজন উল্টে যাওয়া ডিঙ্গি ধরে কোনমতে পানির উপরে ভেসে আছেন।

রেসের প্রায় মাঝপথে চলে আসা লেমিউ দূর থেকে দেখতে পেলেন পাশের কোর্সে অংশ নেওয়া একটা ডিঙ্গি উল্টে গেছে, দুজন প্রতিযোগী জোসেফ চ্যান আর শ হার সিউ রীতিমত অকূল পাথারে। জরুরী সাহায্যের প্রয়োজনে থাকা দুজনের আশেপাশে নেই আর কেউ। তাই নিজের রেস বাদ দিয়ে দ্রুত ডিঙ্গি বাইতে শুরু করলেন ঐ দুজনকে সাহায্য করার জন্য। আরাধ্য পদকের সম্ভাবনায় কুড়াল মারলেন নিজের হাতেই।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও বিপদে পড়া সেইলরদের উদ্ধার করার কাজটা মোটেও সহজ ছিল না। বিশাল উঁচু ঢেউগুলো টলিয়ে দিচ্ছিল লেমিউর ছোট্ট ডিঙ্গিটাকে, স্রোতের গতিও ছিল বাতাসের বিপরীতে। অভিজ্ঞতার সবটুকু কাজে লাগিয়ে লেমিউ নিজের ডিঙ্গিকে উল্টে যাওয়া থেকে আটকালেন, তারপর খাবি খেতে থাকা চ্যানকেও উদ্ধার করলেন পানি থেকে। 

চ্যানকে নিয়ে এরপর গেলেন উল্টে যাওয়া ডিঙ্গির দিকে। ততক্ষণে ঝুলন্ত সিউর শরীরের কয়েক জায়গা কেটে গিয়ে রক্ত ঝরছে। নিজের ছোট্ট ডিঙিতে জায়গা না থাকায় তাতে সিউকে কোনমতে বসিয়ে নিজেই নেমে গেলেন পানিতে, ডিঙ্গি ধরে রেখে অপেক্ষায় থাকলেন কোরিয়ান নেভির পেট্রোল বোট আসার।

প্রায় মিনিট সাতেক পর নেভি বোট এসে দুজনকে উদ্ধার করলে, আবার ফিরে যান নিজের প্রতিযোগিতায়, তবে পিছিয়ে পড়েছিলেন অনেকখানি, ৩২ প্রতিযোগীর মধ্যে ২২তম হয়েই শেষ করেন রেস।

ইন্টারন্যাশনাল ইয়ট রেসিং ইউনিয়ন সম্মানস্বরূপ দুর্ঘটনার পূর্বে থাকা অবস্থান পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২য় স্থান ফিরে পেলেও পয়েন্ট পাননি। তাই শেষ পর্যন্ত ৭ রেসের পর ১১ তম হয়েই অলিম্পিক শেষ করেন লেমিউ।

 

 

২

ফটোগ্রাফঃ সিউল অলিম্পিকের সেই রেস শেষে ক্যামেরায় বন্দী লরেন্স লেমিউ 

 

এমন স্বার্থহীন সিদ্ধান্তটা কেন নিয়েছিলেন? উত্তরে বলেছিলেন -

 “The first rule of sailing is, you see someone in trouble, you help him. I just had to go. If I didn't go, it would be something you would regret for the rest of your life. But I wasn't thinking that at the time. It's only now, in retrospect, you think that way. At the time, you just go.”

তবে খালি হাতে ফেরেননি, অর্জন করেছিলেন এমন পদক, যা ইতিহাসে পেয়েছেন হাতেগোনা কজন। সিউল অলিম্পিকের সমাপনী অনুষ্ঠানে আইওসি প্রেসিডেন্ট হুয়ান অ্যান্তনিও সামারাঞ্চ লরেন্স লেমিউকে পিয়েরে দ্য কুবার্তা মেডেল গলায় পরিয়ে দেন। ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছিলেন, "By your sportsmanship, self-sacrifice and courage, you embody all that is right with the Olympic ideal."

এরপর অলিম্পিকে আর অংশ নিতে না পারা লেমিউ ’৯০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পেয়েছিলেন রৌপ্য, জিতেছিলেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, প্যান আমেরিকান গেমসেও স্বর্ণটা ছিল তারই। অবসরের পর বর্তমানে সেইলিং কোচের দায়িত্ব পালন করা কানাডিয়ানকে এখনো আন্তর্জাতিক আসরে দেখা যায়, জোসেফ চ্যান আর শ হার সিউয়ের সাথে। বন্ধুত্বটা অলিম্পিকেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিস্তৃত হয়েছিল পরবর্তী সময়েও।

কি অদ্ভুত পৃথিবী! নিষিদ্ধ মাদকের সাহায্য নিয়ে স্বদেশী বেন জনসন ৯.৭৯ সেকেন্ডে বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিতেছিলেন স্বর্ণ (পরে ডোপপাপে কেড়ে নেওয়া হয় পদক), আর সেই একই অলিম্পিকে লেমিউ পদকের মায়া ত্যাগ করে বাঁচিয়েছিলেন জীবন। অলিম্পিকের সৌন্দর্য বোধহয় এখানেই।