• ফুটবল

তাঁদের দুঃখগাথা বিশ্বকাপ (শেষ পর্ব)

পোস্টটি ৬২৮১ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
দিনক্ষন পেরিয়ে আর মাত্র ৭২ ঘন্টা । তারপর ই শুরু হয়ে যাবে ফুটবল বিশ্বকাপের ২১ তম যুদ্ধ। আজ আমরা জানবো ফুটবল বিশ্বকাপ ইতিহাসের তৃতীয় এবং এই সিরিজের শেষ ট্রাজেডি টি... "ব্রাজিল ১৯৮২" সাদা চোখে দেখলে অবাক লাগতে পারে ,বিস্ময় জাগাতে পারে পরিসংখ্যান ও। যে দলটি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ও উঠতে পারে নি ,পারে নি কোন ট্রফি জিততে ; সে দলটি কিনা সর্বকালের অন্যতম সেরা!! অন্যতম সেরা নয় ; এই দল অনেকের কাছে ই সর্বকালের সেরা। এমনকি এগিয়ে থাকবে ১৯৭০ এর সেই বিখ্যাত ব্রাজিল দল থেকে ও। ব্রাজিলের ফুটবল বললে ই সবার আগে যে সৌন্দর্যটা মাথায় আসে, কিংবা ব্রাজিল ফুটবলে আর সেই সৌন্দর্য নেই বলে যে হাহাকার উঠে সব তো এই ৮২ বিশ্বকাপের দলটার জন্য ই। কী অসাধারন সব ফুটবলার ই না ছিলো দলটাতে- সাদা পেলে "জিকো", সে সময়ে ছিলেন আসল পেলের পর ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা। "রোমার" হয়ে দারুন সব সাফল্যের জন্য "কিং অব রোম" উপাধি পেয়ে যাওয়া ফ্যালকাও। ছিলেন সক্রেটিস, শুধু নামে নয় দেখতে ও ছিলেন গ্রিক দার্শনিকের মতো! বুদ্ধিমত্তা আর প্রতিভা দিয়ে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। ছিলেন টনিনহো সেরেজো, প্রচুর স্ট্যামিনা থাকার কারনে তাকে বলা হতো ওর বাড়তি একটা ফুসফুস আছে। আর ছিলেন কোচ টেলে সান্টানা, যার কাছে ফুটবলের শেষ কথা এর সৌন্দর্য। শেষ পর্যন্ত সান্টানার এই সৌন্দর্যের জন্য ই ব্রাজিলকে খেসারত দিতে হয়েছিলো। গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল খেলেছিলো তখনকার সেভিয়েত ইউনিয়ন , স্কটল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দিয়েছিলো গুনে গুনে ১০ গোল! দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিলো ৩-১ গোলে। শেষ চারে যাওয়ার জন্য ইতালির বিপক্ষে প্রয়োজন ছিলো স্রেফ একটি ড্র । অতি আক্রমনাত্নক হয়ে ওঠা আর সেই সাথে পাওলো রসির ও হঠাৎ করে অতিমানব হয়ে ওঠার কারনে ই সেটি আর সম্ভব হয়ে ওঠে নি। ৫ মিনিটে রসির করা গোল ১২ মিনিটে ই শোধ করে দিয়েছিলেন সক্রেটিস। বাজে ডিফেন্ডিংয়ের সুযোগ নিয়ে ২৫ মিনিটে ইতালিকে আবার ও এগিয়ে দেন রসি। অনেক চেষ্টার পর ৬৮ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান ফ্যালকাও। খেলার বাকি ছিলো আর মাত্র ২২ মিনিট। রক্ষনাত্নক খেলে ই বাকি সময়টুকু শেষ করে ফেলতে পারতো সেলেকাওরা । কিন্তু সান্টা কৌশল একটু ও পাল্টান নি, ফলে অতি আক্রমনাত্নক ই খেলতে থাকে দল। সেই সুযোগটি ই নেয় আজ্জুরিরা , ৭৪ মিনিটে রসি তাঁর হ্যাট্রিক পূর্ন করলে থেমে যায় ব্রাজিলিয়ানদের স্বপ্ন যাত্রা। হারের সব দায়ভার মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন সান্টা। মানুষ সব সময় ই সৌন্দর্যের পূজারি। তাইতো সাফল্য ই সব , সেই ধারনা থেকে বেরিয়ে এই সুন্দর ফুটবলে এখন ও বিমোহিত হয়ে আছে মানুষ। নাহলে জিকো ,ফ্যালকাও,সক্রেটিস,পুসকাস,ক্রুইফরা এখন ও মানুষের মনে আছেন কি করে!?