• ক্রিকেট

যত রেকর্ড গরলেন আফগানিস্থানের গেইল।

পোস্টটি ২৮৮১ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
উচ্চতা ও শরীরী চাহনিতে অমিল থাকলেও দুজনেই বামহাতি। ব্যাটিংয়ের ধরনও বিস্ফোরক। বোলারদের পিটিয়ে ছাতু বানাতে ভালোবাসেন। তাই বলে তুলনার সময় এখনো আসেনি। কিন্তু রশিদ খানের তর সয়নি। কাল দেরাদুনে জাজাই-ঝড় ওঠার পর আফগান লেগির টুইট, ‘ভবিষ্যতের ক্রিস গেইল।’ টি-টোয়েন্টিতে প্রায় সব ধরনের রেকর্ডই গেইলের দখলে। ক্যারিবিয়ান বামহাতি গোধূলিলগ্নে চলে এলেও এই সংস্করণে তিনি-ই এখনো শেষ কথা। কাল যেমন হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের অপরাজিত ১৬২ রানের ইনিংসেও উঠেছে গেইলের প্রসঙ্গ। এই আফগান ওপেনারের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর (২৭৮/৩) তুলেছে আফগানিস্তান। জাজাইয়ের ইনিংসে ছিল ১৬টি ছক্কা আর ১১টি চারের মার। অর্থাৎ শুধু বাউন্ডারি থেকেই এসেছে ১৪০! ক্রিকেটের পরিসংখ্যান-পোকাদের চোখ কপালে ওঠাই স্বাভাবিক। এক ইনিংসে চার-ছক্কা থেকে সর্বোচ্চ রান নেওয়ার রেকর্ড কি তাহলে ভাঙল! পরিসংখ্যানে আগ্রহ নেই, এমন ক্রিকেট রসিকেরা হয়তো চোখ বুজে ভেবে নিয়েছিলেন এই রেকর্ড তো অবশ্যই গেইলের। মজার ব্যাপার, তাঁরা একদিক বিচারে ভুল আবার ঠিকও। জাজাই যেমন গেইলকে ধরতে পারেননি তেমনি গেইল তো গেইল, ছাপিয়ে গেছেন ফিঞ্চ, ম্যাক্সওয়েল আর রোহিত শর্মাদের রেকর্ডকেও। প্রথমেই বলে রাখা ভালো, টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড এখন জাজাইয়ের। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যারন ফিঞ্চের (১৫৬) সর্বোচ্চ ১৪ ছক্কার সেই রেকর্ড কাল দুইয়ে ঠেলে দিয়েছেন জাজাই। গেইল এক ইনিংসে মেরেছেন সর্বোচ্চ ১১ ছক্কা। কিন্তু জাজাইয়ের ইনিংসের সঙ্গে গেইল-প্রসঙ্গ ওঠার কারণ শুধু ছক্কাবাজি নয়। এক ইনিংসে চার-ছক্কা থেকে সর্বোচ্চ কত রান এসেছে—এ ব্যাপারে উঠেছে গেইলের প্রসঙ্গ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে চার-ছক্কা থেকে সর্বোচ্চ রান তোলার তালিকায় শীর্ষ পাঁচেও নেই গেইল। তবে শীর্ষ দশে আছেন। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১১৭ রানের ইনিংসে ৮৮ রানই (১০ ছক্কা ও ৭ চার) বাউন্ডারি থেকে তুলেছিলেন গেইল। অর্থাৎ, গেইলকে শীর্ষে ভেবে নেওয়ার ব্যাপারটি ভুল। শুধু কি তা-ই? রেকর্ডটি এত দিন যাঁর ছিল সেই ফিঞ্চকেও দুইয়ে ঠেলে রেকর্ডটি নতুন করে লিখিয়েছেন জাজাই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ১৪ ছক্কা মারার ম্যাচে শুধু বাউন্ডারি (১১ চার) থেকেই ১২৮ রান তুলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। আর জাজাই কাল ১৬ ছক্কা আর ১১ চারে তুলেছেন ১৪০ রান। তবে এই সংস্করণের আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া মিলিয়ে জাজাই অবশ্য গেইলকে পেছনে ফেলতে পারেননি। ২০১৩ আইপিএলে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন গেইল। সেই ইনিংসে ১৭ ছক্কা আর ১৩ চারে শুধু বাউন্ডারি থেকেই তিনি তুলেছিলেন ১৫৪ রান। অর্থাৎ, জাজাই কালকের ইনিংসটি দিয়ে গেইলকে ছাপিয়ে গেছেন কিন্তু আরেক হিসাবে এখনো পিছিয়েও আছেন। তবে খুব বেশি পিছিয়ে নেই, টি-টোয়েন্টিতে শুধু বাউন্ডারি থেকে সর্বোচ্চ রান নেওয়ার তালিকায় জাজাই আছেন শীর্ষস্থানীয় গেইলের পরেই। অর্থাৎ এই আফগান ওপেনার যেন গেইলের পিছু পিছুই হাঁটছেন। রশিদ খান কি তা বুঝে নিয়েই সতীর্থকে ‘ভবিষ্যৎ গেইল’ বললেন? তা জানে কে! কিংবা সময় হলেই জানা যাবে জাজাই গেইলের উত্তরসূরি হতে পেরেছেন কি না। কাল বিস্ফোরক ইনিংসটি খেলার পরই জাজাইয়ের কথা শুনলে মনে হবে না এসব ভাবনা তাঁর মাথায় আছে। তাঁর সরল স্বীকারোক্তি, ‘ওঁরা খুব ভালো বল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দিনটা আমার ছিল।’