• ক্রিকেট

অরবিন্দ ডি সিলভার অলরাউন্ড নৈপুণ্য ও ইডেন তান্ডব।

পোস্টটি ২২৫৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

1996 world cup semifinal crowd trouble

দুটি ম্যাচে ওয়াকওভারে জয়ের সুবাদে শ্রীলঙ্কা দল বেশ সহজেই লীগ পর্যায় পেরিয়ে চলে আসে। প্রথম সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ আরেক স্বাগতিক ভারত। কলকাতার বিখ্যাত ইডেন গার্ডেনে ম্যাচ। ইডেন একলক্ষ দশ হাজার ধারন ক্ষমতার মাঠ। টান টান উত্তেজনা সেই ম্যাচ ঘিরে।

দিল্লীতে শ্রীলঙ্কা সহজেই ২৭২ রান চেজ করেছিলো এটা মাথায় রেখে ভারত অধিনায়ক আজহার উদ্দিন টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠান। ভারতীয় পেসার শ্রীনাথ শুরুতেই জোড়া আঘাত হানেন, স্কোর ১রানে ২উইকেট এমন অবস্থায় ক্রিজে আসেন অরবিন্দ ডি সিলভা। তিনি এসেই খেলার ধারা পাল্টে দেন  মাত্র ৩২ বলে ফিফটি করে ভারতীয় দর্শকদের হতাশ করেন তিনি। এরমধ্যে ৩৫রানের মাথায় ৩য় উইকেতের পতন হয় যখন অশাঙ্কা গুরুসিনহা ১৬বলে মাত্র ১ রানে আউট হয়ে যান। এই অবস্থায় রোশান মহানামা ডি সিলভার সাথে জুটি বাঁধেন। এই জুটি শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে একটা ভালো অবস্থায় নিয়ে যায়।

অসম্ভব সুন্দর ড্রাইভের সাহায্যে ডি সিলভা একের পর এক বাউন্ডারি মারতে থাকেন কাভার ও এক্সট্রা কাভার দিয়ে। ১৪টি বাউন্ডারিতে মাত্র ৪৭ বলে ৬৬ রান করে কুম্বলের বলে আউট হয়ে যান ডি সিলভা। কিন্তু তার প্রতিরোধের ধারায় উজ্জ্বীবিত মহানামার ৫৮, অর্জুনা রানাতুঙ্গার ৩৫, হাশান তিলকেরত্নার ৩২ ও চামিন্দা ভাসের ১৬ বলে ২৩ রানের কার্যকরী ইনিংস দলীয় স্কোরকে ৩৫/৩ থেকে ২৫১/৮ এ নিয়ে যায়।

fire600_1489381713

জবাব দিতে নেমে ভারত ৮রানের মাথায় ওপেনার সিধুকে হারালেও টেন্ডুলকার ও মাঞ্জেরেকার ৯০রানের জুটি গড়ে আশার আলো দেখাতে থাকেন। কিন্ত তখনই শ্রীলঙ্কার বোলাররা একের পর এক আঘাত হানলে  ভারত ৯৮রানে ২উইকেট থেকে ১২০রানে ৮ উইকেটে পরিণত হয়।

দলের এই চরম ভেঙ্গে পড়াটা দর্শকরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি, তারা গ্যালারি থেকে মাঠে পানির বোতল ও খাবার উচ্ছিষ্ট মাঠে ছুঁড়ে মারতে থাকে। পানির বোতল বাউন্ডারি লাইনে  ফিল্ডিং করা খেলোয়াড়দের জন্যে বিপদ্বজনক হয়ে উঠে এবং উপুলচন্দনার গায়ে পানির বোতল এসে পড়ে। কিছু দর্শক কাগজ জড়ো করে আগুন লাগিয়ে দেয় আর এই আগুন গ্যালারির অনেক জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়ে। ক্রিকেট ইতিহাসের এক ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকে ইডেনের এই ম্যাচ।

কয়েকশ পুলিশ নেমেও ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে খেলোয়াড়দের মাঠ থেকে তুলে আনা হয়, খেলার বাকি অংশ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। শ্রীলঙ্কাকে জয়ী ঘোষনা করা হয়। অরবিন্দ ডি সিলভা ৬৬রান ও এক উইকেট নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ম্যান অব ম্যাচ নির্বাচিত হন।

দর্শকদের এই হাঙ্গামা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। শ্রীলঙ্কা ও ভারতীয় দলের জন্যে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। অনেক উগ্র দর্শক অধিনায়ককে এর জন্যে দায়ী মনে করতে থাকে ফলে আজহারউদ্দিনের বাড়িতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়।  বিশ্বকাপের ইতিহাসে তাই ম্যাচটি একটি কলংকের নাম হয়ে আছে।