• ক্রিকেট

দ্য টেস্ট অ্যা নিউ অ্যারা ফর অস্ট্রেলিয়া'স টিম - পর্ব ১

পোস্টটি ১৫৬২ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
"দ্যায়ার ইজ নাথিং বিগার দ্যান দ্য অ্যাশেজ"।
 
এ লাইন থেকে দুদান্ত কিছু দিয়ে ডকুমেন্টারি -টা শুরু হতে পারতো বলে মনে হয় না!
 
মার্চ ২০১৮ - দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ঐতিহ্যে, আভিজাত্য, সাম্রাজ্য আর মর্যাদায় যে আঘাত হেনেছিল সে আঘাত ধীরে ধীরে কিভাবে কাটিয়ে উঠেছে সেটা ফুটে উঠেছে এই ডকুমেন্টারি -তে। জাস্টিন ল্যাঙ্গারের কান্না-জড়িত বিবরণীতে ফুটে ওঠে কেপটাউন ঘটনা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের জন্য কতটা ভয়াবহ, কতটা বিধ্বস্তপূর্ণ ছিল।
 
 
সে বিধ্বস্ততা কাটিয়ে উঠতে দায়িত্ব অর্পন করা হয় জাস্টিন ল্যাঙ্গার- কেই। মাঠে সে দায়িত্ব পালনের সারথি হিসেবে ল্যাঙ্গার পান একেবারে আন-কোরা টিম পেইনকে। দায়িত্ব পেয়ে -ই স্মিথ, ওয়ার্নার, হেড কোচ ড্যারেন লেহম্যান বিহীন দলটাকে অনুপ্রাণিত করা আর হারানো আত্নবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার কাজে মনোযোগী হন ল্যাঙ্গার।
 
 
"এ্যাভরি অস্ট্রেলিয়ান লেজেন্ড স্ট্রিক্ট টু দ্য প্রসেস"। "দে কনসেনট্রেট এ্যাভরি সিংগেল বল"। এভাবে -ই খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজ শুরু করেন ল্যাঙ্গার। নিজের প্রথম অ্যাসাইমেন্টে সামনে পান চিরশত্রু ইংল্যান্ড -কে। 
 
 
জুন ১৩, ২০১৮ - কেনিংটন ওভাল, লন্ডন।
 
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের কাছে তিন উইকেটে হার দিয়ে শুরু। বল টেম্পারিং কান্ডে বিধ্বস্ত দলটাকে আরো বেশী বিধ্বস্ত মনে হচ্ছে যখন একেকটা ম্যাচ হারতে লাগলো। খেলোয়াড়দের চাঙা করতে ল্যাঙ্গার স্মরণ করলেন নিজের সাবেক সতীর্থ মাষ্টার মাইন্ড - অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের দীর্ঘ সময়ের ধারকবাহক রিকি পন্টিং এবং আরেক অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তী অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে। কিন্তু এ যাত্রায় কোন কিছুই কাজে আসলো না।
 
 
সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখা যায় জুন ১৯, ট্রেন্টব্রিজ, নটিংহ্যামে।
 
তৃতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের হাতে বেধড়ক পিটুনি খেয়ে ২৩২ রানে ম্যাচ হারে অজিরা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ হোয়াইটওয়াশ হয়ে শেষ করে অজিরা। খুব কাছ থেকে দেখার মতো দেখলাম ব্যর্থতা গুলো কাটিয়ে উঠতে মাঠের বাইরে কতটা সংগ্রাম চলে। দূর থেকে কি আমরা এসব দেখতে পাই? মাঠের পারফরম্যান্স সবসময় মাঠের বাহিরের পরিশ্রম আর একাগ্রতার পক্ষে কথা বলে না সেটা সচক্ষে দেখার সৌভাগ্য হবে আপনার!
 
 
aus2
 
 
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে অভিষেক হতে যাওয়া ট্রাভিস হেডকে টেস্ট ক্যাপ পরিয়ে দিচ্ছেন  সময় নাথান লায়ন। তখন এক দেড় মিনিটের ওই কথাগুলো প্রমাণ করে একটা ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ এবং 
টেস্ট ক্রিকেটের মর্যাদা অজিদের কাছে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ। টিম মিটিং, প্র্যাকটিস প্রতিটা মুহূর্তে দলকে অনুপ্রাণিত করতে ল্যাঙ্গার নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন। সবসময় একটা কথা বলেছেন "হারানো রেসপেক্ট আদায় করতে হলে সংগ্রাম করতে হবে"। 
 
 
অক্টোবর ৭, ২০১৮ দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, দুবাই।
 
দলের আস্থা, নিজের উপর বিশ্বাস দলের পরিস্থিতি আর ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় উসমান খাওজার  মহাকাব্যিক ৩০২ বলে ১৪১ রান সঙ্গে স্পিনিং ট্র্যাকে মাটি কামড়ে অধিনায়ক টিম পেইনের ১৯৪ বলে ৬১ রানে ভর করে প্রথম টেস্ট পঞ্চম দিনের শেষ সেশনের শেষ বলে জয়ের সমান ড্র করে অজিরা। এরপর ড্রেসিংরুমের পরিবেশ আর অজিদের স্বস্তির নিঃশ্বাস প্রমাণ করে কেপটাউন দুঃস্মৃতি সময়ের পরিক্রমায় অল্প দিনের হলেও কতকাল পর তারা খোলা আকাশের নিচে নিঃশ্বাস নিয়েছে। টিম মিটিং, প্র্যাকটিস প্রতিটা মুহূর্তে নিজেকে তাদের একজন মনে করে আবিস্কার করেছি নতুনভাবে। একজন সাধারণ দর্শকের যে এসব প্রতিদিন দেখার সৌভাগ্য হয়ে উঠে না।
 
 
অক্টোবর ১৬, শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম, আবুধাবি।
 
দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৪৫ ও ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে ৩৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে অজিরা। পাকিস্তান সফর শেষ করে দেশে ফিরে অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মের প্রস্তুতি। অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মের প্রথম টেস্টের প্রতিপক্ষ সময়ের সেরা শক্তিশালী ভারত। অজিদের টিম মিটিং, স্ট্রেটেজি মিটিং প্রায় পুরোটা জুড়ে ছিলেন বিরাট কোহলি। এসব জানার, দেখার সুযোগ হবে কোনদিন ভাবি নাই! দেখছি আর ক্রিকেটের গন্ডিতে নিজেকে নতুন করে জানার চেষ্টা করছি!
 
 
বলা হচ্ছিল ভারতের জন্য এটাই সেরা সুযোগ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে টেস্ট সিরিজ হারানোর। আর অস্ট্রেলিয়ার জন্য ঘরের মাঠে স্মিথ, ওয়ার্নার বিহীন সবচেয়ে কঠিন সিরিজ।
 
 
ডিসেম্বর ৬, ২০১৮ অ্যাডিলেড ওভাল, অ্যাডিলেড।
 
প্রথম টেস্ট - টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিলেন ভারতীয় কাপ্তান বিরাট কোহলি। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতি সুবিচার করতে পারে নাই ভারতীয় টপঅর্ডার। দুই ইনিংসে -ই কোহলিকে বোতলবন্দি করে রাখে অজিরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী সব আগালেও প্রথম ইনিংসে নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় চতুর্থ ইনিংসে ৩২৩ রানের লক্ষ্য পায় অজিরা। ইনিংসের প্রতি পরতে পরতে উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচ অজিরা হারে ৩১ রানে।
 
 
ম্যাচটা হারলেও একটা ছোঁয়া রেখে যেতে সক্ষম হয়েছে - চিরাচরিত অস্ট্রেলিয়ান চরিত্র লড়াকু মানসিকতা। হারার আগে হেরে না যাওয়ার ছাপ।
 
 
ডিসেম্বর ১৪, অপটাস স্টেডিয়াম, পার্থ।
 
চিরায়ত অস্ট্রেলিয়ান সংস্কৃতি মেনে দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং নিলেন অজি কাপ্তান টিম পেইন। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৩২৬ রানের বিপরীতে বিরাট কোহলির ১২৩ রানের পরও ভারত অলআউট ২৮৩ রানে। দুদলের শেষ দুই ইনিংসে চলেছে চরম কথার লড়াই। নাথান লায়ন অস্ট্রেলিয়ার জন্য মহামূল্যবান উইকেট কোহলিকে ১৭ রানে উসমান খাওজার ক্যাচে পরিণত করেন। শেষ লড়াইয়ে ১৪৬ রানে জয়ের হাসি অস্ট্রেলিয়ার। ভারত হারলো ১৪৬ রানে। সিরিজে ১-১ সমতা আনতে সক্ষম হয় অজিরা।
 
 
ক্রিকেটারদের বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে পড়েছি ড্রেসিংরুমের পরিবেশের কথা। আজ সচক্ষে অজিদের ড্রেসিংরুমের উদযাপনের দৃশ্য অবলোকন করছি! একজন সাধারণ দর্শকের জন্য ভাগ্য বটে!
 
 
 
ডিসেম্বর ২৬, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন বক্সিং ডে টেস্ট।
 
আমরা সাধারণ দর্শক একটা ম্যাচের মধ্যে আসলে কতটুকু ডুকতে পারি? টিভি পর্দায় কিংবা গ্যালারী থেকে দেখে আমরা ড্রেসিংরুমের অবস্থা, ক্রিকেটারদের মানসিক অবস্থা কতটুকু আঁচ করতে পারি? মনে হয় না খুব বেশী! আমরা পারফরম্যান্স চাই - আমরা জয় চাই! পরিস্থিতি খুব কম বিবেচনায় আসে। আমার ছোটবেলার শখ ড্রেসিংরুমে - একটা আউট কিংবা ম্যাচ চলাকালীন ড্রেসিংরুমের অবস্থা কিংবা জয়ের মুহূর্তগুলো সামন-সামনি দেখবো!
 
 
ঘটনার এখনো অনেক বাকী আসবো সেখানে। তৃতীয় টেস্টে ১৪৬ রানে হেরে সিরিজে ২-১ পিছিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। বাজেভাবে ম্যাচ হারের পর একটা ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতি কতটা বির্মষ হতে পারে ল্যাঙ্গার আর তার ছাত্রদের না দেখলে জীবনে অজানা থেকে যেত। আমার শখ আর স্বপ্নগুলো মন খারাপে আস্তে আস্তে পূর্ণতা পেতে চলেছে! 
 
 
জানুয়ারি ৩, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, সিডনি।
 
চার ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট। সমতা ফেরানোর লক্ষ্য টস হেরে ফিল্ডিংয়ে অজিরা। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের রানের চাপায় পিস্ট হয়ে ম্যাচ হারা থেকে অজিদের বাঁচিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি। কিন্তু ভারতের কাছে বোর্ডার-গার্ভাস্কার ট্রফি হারা থেকে বাঁচতে পারে নাই অজিরা।
 
 
ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বোর্ডার-গার্ভাস্কার সিরিজ হার কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে অজি টিম ম্যানেজমেন্টকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে বাদ তাই পড়লেন অ্যারন ফিঞ্চ, শন মার্শ। দলে আসলেন জো বার্নস একেবারে নতুন মুখ কুর্টিস প্যাটার্সন, জোয়ে রিচার্ডসন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে তাদের সবাই অসাধারণ পারফর্ম করেন - পারফর্ম করেন ট্রাভিস হেড, মার্নস লাবুশানেও। সেটা ছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের নতুন যুগের পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।
 
 
নবীন ক্রিকেটারদের ড্রেসিংরুমে স্বাগতম, সিদ্ধান্ত গ্রহণের আলোচনা এবং কোচদের মিটিং। আহ্! মনে হচ্ছে চোখের সামনে থেকে ক্রিকেট দেখছি!
নতুন যুগের হাওয়ায় সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়কের অ্যামব্রান্ড তুলে দেয়া হয় অ্যারন ফিঞ্চের হাতে। নেতৃত্বের প্রথম সিরিজ ভারতের বিপক্ষে এতটা দুঃস্বপ্নের শুরু হবে হয়তো স্বপ্নেও ভাবেন নাই ফিঞ্চ। সিডনি, অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন - তিন ওয়ানডেতে পিঞ্চের স্কোর যথাক্রমে ৬,৬,১৪ অস্ট্রেলিয়াও সিরিজ হারে ২-১ ব্যবধানে।
 
 
ফিঞ্চ ভাবতে শুরু করেন হয়তো-বা বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন! যদিও দুঃসময়ে পাশে পেয়েছেন সতীর্থ-সহ কোচের ভালোবাসা। 
 
 
সাধারণ দর্শকরা বিদেশি দল সফর করতে আসলে তারকাদের দেখতে উন্মুখ হয়ে থাকে। তবে মানুষের মধ্যে সেই অনুভূতি কেমন কাজ করে সামনা-সামনি কখনো দেখার সৌভাগ্য হয়ে উঠে নাই! অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরে দর্শকের ভালোবাসা আর অনুভূতি সামনা-সামনি দেখার মতো নিজেকে আবিস্কার করছি। ক্রিকেট ভারতীয়দের কাছে কোন লেভেলে গিয়ে ঠেকেছে সেটাও এক পসলা দেখা হবে। প্র্যাকটিস, হোটেল লবিতে - হোটেলে ক্রিকেটারদের প্রতি মুহূর্তের কার্যক্রম সব দেখতে পাবেন এখানে।
 
 
মার্চ ২, ২০১৯ রাজিব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, হায়দ্রাবাদ।
 
প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি ভারত আর অস্ট্রেলিয়া। ফিঞ্চের অধিনায়কত্বের দুঃস্বপ্নের যাত্রা আরো লম্বা হয় যখন ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে বুমরার শিকার হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেন। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ হারলো ছয় উইকেটে। 
 
 
মার্চ ৫, নাগপুর।
 
দ্বিতীয় ওয়ানডের সারমর্ম "এত কাছে তবু এত দূরে"।শেষ ওভারে গিয়ে ৮ রানে ম্যাচ হেরে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। প্রতিটা ব্যর্থতায়, প্রতিটা হারে ড্রেসিংরুমে মুষড়ে পড়ার দৃশ্যগুলো অনুভূত হচ্ছে তাদের একজন হয়ে! আমি আজ তাদের -ই একজন! জাস্টিন ল্যাঙ্গারও হতাশা প্রকাশ করছেন। পরক্ষণে যুদ্ধ জয়ের রণকৌশল সাজাতে ব্যস্ত হচ্ছেন। হতাশা ঝেড়ে যোদ্ধাদের নিয়ে আবার ঝাপিয়ে পড়ছেন পরবর্তী পরিকল্পনায়। তিনি নতুন যুগের অস্ট্রেলিয়ার আসল কান্ডারী - জাস্টিন ল্যাঙ্গার। যার হাত ধরে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে একটি প্রজন্মের অভ্যুদয় ঘটে।
 
 
মার্চ ৮, রাঞ্চি।
 
তৃতীয় ওয়ানডে ফিঞ্চের অধিনায়-কোচিত ৯৩ রানের ইনিংস। পাশে পেয়েছেন সতীর্থ উসমান খাওজার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ৩২ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজের আলো জ্বালিয়ে রাখতে সক্ষম হয় অজিরা। সৌভাগ্য হবে তাদের একজন ভেবে আরেকটা ব্যাপার পরিলক্ষিত করার। প্রতিটা সফলতায় যেমন একজন আরেকজনের পিঠ চাপড়ে দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন। ঠিক প্রতিটা ব্যর্থতায় দ্বিগুণ ভালোবাসায় পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন। এটা ক্রিকেটের ভাতৃত্ব। ব্যর্থতার অপর পিঠেই তো সফলতা।
 
 
ভোরের সূর্য সবসময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না। অস্ট্রেলিয়ার এই ঐতিহাসিক যাত্রায়ও দেয় নাই। পরপর দুই ম্যাচে হারের পর ঘাটের পয়সা খরচ করে কাউকে দিয়ে বাজি ধরালে সেও অস্ট্রেলিয়া সিরিজ জিতবে - এটার পক্ষে বাজি ধরতে রাজি হতো না। কিন্তু ক্রিকেট বিধাতা অন্য চিন্তা করে রেখেছেন।
 
 
মার্চ ১০, মোহালি
 
সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে ভারতের দেয়া ৩৫৮ রানের লক্ষ্য অ্যাস্টন ট্রার্নারের অবিশ্বাস্য ৪৩ বলে ৮৪ রানের ইনিংস। তাতে ১৩ বল হাতে রেখে সেটা টপকে যায় অজিরা। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে একজন ক্রিকেটারের মনের ভেতরটা আমরা কতটা বুঝতে পারি? ৮৪ রানের ইনিংস নিয়ে অ্যাস্টন টার্নারের কথাগুলো শোনার পর - মন বললো আদৌ আমরা এসব থেকে অনেক দূরে আছি!
 
 
যে ইনিংসের মাহাত্ম্য বোঝাতে গিয়ে হার্শা ভোগলে বলেন "পাঁচ ম্যাচ সিরিজের বিজ্ঞাপন এই ইনিংস।"
 
 
সিরিজে ২-২ সমতা। এমন অবস্থায় সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচ।
 
অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম, দিল্লি
 
উসমান খাওজার দ্বিতীয় ওয়ানডে শতকের উপর ভর করে ২৭২ রানের টার্গেট পায় অজিরা। ভারতকে ২৩৭ গুটিয়ে দিয়ে - অজিরা ম্যাচ জিতে ৩৫ রানে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে নেয় তরুণ অস্ট্রেলিয়ান টিম।
 
 
সিরিজ জয়ের পর এবারের ড্রেসিংরুম আরেকটা নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্জার করাবে। খুব কাছ থেকে দেখলাম ছোট ছোট বিষয়গুলো দিয়ে সতীর্থ -কে কিভাবে আনন্দের উপলক্ষ আর শুভকামনা জানানো যায়।