কারো কাছে সে ফ্লাইং ফিশ, কারো কাছে সাঁতারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, কারো কাছে বিশ্বসেরা প্রতিযোগি অলিম্পিকের৷ বলছিলাম লিজেন্ডারি সাঁতারু মাইকেল ফেল্পসের কথা।
১৯৮৫ সালের ৩০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোরে জন্মগ্রহণ করেন।তার পুরো নাম মাইকেল ফ্রেড ফেল্পস, উচ্চতা ছিলো ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং অলিম্পিকের মতো আসরে যার রয়েছে ২৮ টি পদক যার ২৩ টি পদকই ছিলো গোল্ড। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট্ট। তার বাবা ও ছিলেন একজন অ্যাথলেট। ২০০০ সালে ১৫ বছর বয়সী ফেল্পস যে বিশ্বজয় করবে একদিন সেটা ক'জনই বা ধারনা করেছিলেন? বাকি ক্যারিয়ারটা যেন জাদুর কাঠির মতো বদলে গেলো এই সাঁতারুর।
সময়টা ২০০১ সাল মাত্র ১৫ বছর ৯ মাসের সে ছেলেটা বিশ্বরেকর্ড করেছিলেন। ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিনশীপে ২০০ মিটার প্রজাপতি( বাটারফ্লাই) সাঁতারে করেন রেকর্ড। ২০০২ পান প্যাসিফিক চ্যাম্পিয়নশীপে তিনটি গোল্ড এবং দুটি সিলভার পদক জয় করেন। সেগুলো ছিলো ২০০ মিটার, ৪০০ মিটার এবং ৮০০ মিটার প্রতিযোগিতা।
এথেন্স অলিম্পিক ২০০৪ সাল থেকে মাইকেল ফেল্পসের অলিম্পিকের পদক অভিযান শুরু হয়। সেই অলিম্পিকে আটটি পদক অর্জন করেন তিনি। যার ছয়টিই ছিলো স্বর্ণ এবং দুটি ছিলো ব্রোঞ্জ পদক । অলিম্পিকের প্রথম স্বর্ন পদক অর্জন করেন ৪০০ মিটার এককে মেডলি, যা জিততে সময় নেন ৪ মিনিট ৮.২৬ সেকেন্ড, যা ছিল বিশ্ব রেকর্ড। বাকি স্বর্ন পদক আসে ১০০ ও ২০০ মিটার বাটারফ্লাই, ২০০ মিটার মেডলি, ৪×২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলে এবং ৪×১০০ মিটার মেডলি রিলেতে।
২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে অংশ নিয়ে ৮টি ক্যাটাগরিতে স্বর্ণ জিতে ফেল্পস ভেঙে দেন স্পিৎজের ৪০ বছরের পুরোনো রেকর্ড। বেইজিং অলিম্পিকে ৭টি ইভেন্টে করেন বিশ্ব রেকর্ড এবং আরেকটি ছিল অলিম্পিক রেকর্ড।
২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ৪টি সোনা এবং দুটি রৌপ্য পদক অর্জন করেন মাইকেল ফেল্পস। পদকের দিক দিয়ে পুরোনো ৪৮ বছরের রেকর্ডটাই ভেঙে নিজের করে নেন এই সাঁতারু। দেখতে দেখতে বয়স হয়ে যায় ৩১।
২০১৬ সাল ব্রাজিলের রিও অলিম্পিকে ৩১ বছর বয়সী সাঁতারু ফেল্পস অংশ নেন। সবাইকে তাক লাগিয়ে ৬টি পদক, যার মধ্যে ৫টিই ছিলো স্বর্ণ এবং ১টি রৌপ্য পদক।
সেই ১৫ বছর বয়সী ছেলেটা অর্জন করে ফেলেছে অলিম্পিকে ২৮ খানা পদক অর্জন করেন। তাছাড়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপ, পান প্যাসিফিক চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি ৬৬ বার ১ম স্থান অর্জন করেন। লম্বা উচ্চতা,বড় পায়ের পাতা, পরিশ্রম, কঠোর অনুশীলন, ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা থেকেই হয়তো তার এমন বিশ্বরেকর্ড।