বিশ্বচ্যাম্পিয়নরাই শুধু নয়, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ ইতিহাসও
দেশ ছাড়ার আগে সালমা-রুমানারা বলে গিয়েছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সেরাটা এবার দিতে চায় বাংলাদেশ। অগ্নিপরীক্ষার প্রথম ধাপটাই শুরু হচ্ছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ছয়টায় শুরু হবে গায়ানার প্রভিডেন্সে। তবে ইতিহাস আর ফর্ম, আপাতত কোনোটাই বাংলাদেশের মেয়েদের পক্ষে নেই।
ফর্মটা অবশ্য কিছুদিন আগে হলেও পক্ষে ছিল। বলতে গেলে এই বছরটা স্বপ্নের মতোই কেটেছে বাংলাদেশের মেয়েদের। পাকিস্তান ও ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটে যা প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা। এশিয়া কাপের সেই আত্মবিশ্বাস সঙ্গে নিয়ে এরপর আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে এসেছে তাদের মা্টিতে। পরে নেদারল্যান্ডসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও হয়েছে চ্যাম্পিয়ন, সবার ওপরে থেকেই কেটেছে বিশ্বকাপের টিকিট। কিন্তু উড়তে উড়তে এরপর ধুপ করেই পড়েছে মাটিতে, দেশের মাটিতে পাকিস্তানের কাছে তিনটি টি-টোয়েন্টিতেই হারতে হয়েছে। একটি ওয়ানডেতে জিতেছে বটে, কিন্তু তাতে তিন হার আড়াল হয়ে যাচ্ছে না। প্রস্তুতি ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে জেতার পর সেই পাকিস্তানের কাছে আবার হেরেছে। বি গ্রুপে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ তো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আর আছে গত বারের ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এক শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই যা একটু সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের, ২০১৪ সালে দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে লঙ্কানদের হারিয়েছিল সালমারা।
কিন্তু বাকি প্রতিপক্ষদের সবাই যে বাংলাদেশের জন্য একরকম অজেয়। কালকের ম্যাচের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে দুইটি ম্যাচ খেলে দুইটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সেই ২০১২ সালে একটি ম্যাচে জয়ের পর টানা আট ম্যাচে হেরেছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে দুই ওয়ানডেতে কোনো জয় নেই। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ইতিহাস যা একটু পক্ষে, সেখানেও প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর সর্বশেষ দুই ম্যাচেই হারতে হয়েছে। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ডও ভরসা করার মতো নয়। ২০১৪ ও ২০১৬ সালের দুই টুর্নামেন্টে নয় ম্যাচ খেলে জিতেছ্যে মাত্র দুইটিতে। সেই দুইটি আবার শ্রীলঙ্কা আর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চার বছর আগে দেশের মাটিতে। দুই বছর আগে ভারতে চারটি ম্যাচের সবকটিতেই হারতে হয়েছে বড় ব্যবধানে।
গায়ানার উইকেট অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্য ভেন্যুর তুলনায় একটু বেশি স্পিন-বান্ধব। আর স্পিনই এই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। গত এক বছরে স্পিনেই বাংলাদেশ উইকেট নিয়েছে ৮৪টি, তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু ভারতের (৮৫টি)। আর ব্যক্তিগত অর্জন হিসেব করলে গত এক বছরে শীর্ষ ১০ স্পিনারের মধ্যে চার জনই বাংলাদেশের। ২৬ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে আছেন রুমানা আহমেদ, এই সময়ে শুধু ভারতের পুনম যাদবই স্পিনে তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন।
তারপরও বাংলাদেশের সামনে কাজটা কঠিন বললেও কম বলা হয়। গ্রুপের পাঁচ দলের মধ্যে দুইটি সেমিফাইনালে যাবে। এর মধ্যে তিনটি দলের সঙ্গেই কখনো জেতেইনি সালমারা। এই বছর বড় টুর্নামেন্টে সালমারা জ্বলে উঠেছেন, সেটাই যা একটু আশার কথা। এই টুর্নামেন্টে মনে রাখার মতো কিছু করতে হলে এশিয়া কাপের মতোই জ্বলে উঠতে হবে সালমাদের।