• নিউজিল্যান্ড-শ্রীলংকা সিরিজ
  • " />

     

    ম্যাথিউস-মেন্ডিসে শ্রীলংকার অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো

    ম্যাথিউস-মেন্ডিসে শ্রীলংকার অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো    

    স্কোর

    চতুর্থ দিন শেষে

    শ্রীলংকা ২৮২ ও ১০২ ওভারে ২৫৯/৩ ( ম্যাথিউস ১১৭*, মেন্ডিস ১১৬*; সাউদি ২/৩৬, বোল্ট ১/৫০)

    নিউজিল্যান্ড ৫৭৮

    শ্রীলংকা ৩৭ রানে পিছিয়ে

    কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে মিড উইকেটে ফ্লিক করলেন, বল বাউন্ডারি লাইন ছোঁয়ার পরেই ব্যাট ও হেলমেট পাশে রেখে ব্যায়াম শুরু করলেন তিনি! ১০-১৫টি 'পুশ-আপ' দেওয়ার পর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস দেখালেন তাঁর বাইসেপ! পাশে দাঁড়ান আরেক সেঞ্চুরিয়ান কুশল মেন্ডিস শুধু হাসছিলেন সতীর্থের কান্ড দেখে। অভিনব এই সেঞ্চুরি উদযাপনের পেছনে হয়ত লুকিয়ে আছে নির্বাচক ও কোচের জন্য এক বার্তাও। ম্যাথিউস ও মেন্ডিসের জোড়া সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প রচনা করছে শ্রীলংকা। চতুর্থ দিনে ২৩৯ রান তুলে একটিও উইকেট হারায়নি শ্রীলংকা, ম্যাথিউস-মেন্ডিস জুটিতে ভর করে ড্রয়ের স্বপ্ন দেখছে লংকানরা। 

    প্রায় ছয় সেশন ফিল্ডিংয়ে কাটানোর পর ওয়েলিংটনে তৃতীয় দিনের শেষভাগে ১৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমত ধুঁকছিল শ্রীলংকা। দিনশেষে শ্রীলংকা পিছিয়ে ছিল ২৭৬ রানে। কিউইদের দ্বিতীয়বার ব্যাট করাতে পারে কিনা তাঁরা, সে নিয়েই ছিল সন্দেহ। এরপর আজ যা হয়েছে, সেটা কি কেউ কল্পনাতেও ভেবেছিলেন? চতুর্থ দিনের শুরু থেকেই দেখেশুনে ব্যাটিং করেছেন ম্যাথিউস-মেন্ডিস দুজনেই। গতদিন যেমন দেখা গেছে টিম সাউদিদের ভয়ঙ্কর রূপ, আজ কিউই বোলাররা তেমন সুবিধা করতে পারেনি।

    দিনের শুরু থেকেই কোনো ঝুঁকি নেননি মেন্ডিস ও ম্যাথিউস। প্রথম দুই ঘণ্টা অনায়াসেই ক্রিজে পার করেন তাঁরা। রান তোলার খানিকটা কম হলেও তাই লাঞ্চের আগে স্বস্তি নিয়েই ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন দুজন। এই সময় ফিফটি পূর্ণ করেন ম্যাথিউস। লাঞ্চের পর ফিফটি পেয়েছেন মেন্ডিসও। বারবার বোলিংয়ে পরিবর্তন এনেও উইকেটের দেখা পাননি কেন উইলিয়ামসন। স্লোয়ার, বাউন্সার, ভালো লেন্থের বল, সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেও উইকেট পাননি তাঁরা।

    শেষ সেশনে ম্যাথিউস-মেন্ডিস দুজনেই খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন। দারুণ সব শট খেলে সেঞ্চুরির কাছে পৌঁছে যান তাঁরা। প্রথমে সেঞ্চুরি পেয়েছে মেন্ডিস। নেইল ওয়াগনারের বলে ফাইন লেগে চার মেরে করেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। এর কয়েক ওভার পরেই সেঞ্চুরি পান ম্যাথিউস। ঠিকমতো দৌড়াতে পারেন না, ফিট নন; ইত্যাদি অভিযোগে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি। নিজের নবম টেস্ট সেঞ্চুরির পর পুশ-আপ করে ও বাইসেপ দেখিয়ে নির্বাচক ও কোচকে হয়ত বার্তা দিলেন, তিনি যথেষ্ট ফিটই আছেন!

    দিনের শেষভাগটা বিপদ ছাড়াই পার করেছে মেন্ডিস-ম্যাথিউস জুটি। পুরো একদিন কোনো উইকেট পড়েনি, এরকম ঘটনা এই নিয়ে বাইশবার ঘটল টেস্টে। সবশেষ ২০০৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ ও নিল ম্যাকেঞ্জি পুরো দিন ব্যাট করেছিলেন।  

    কাল বিকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫৭৭ টি বল সামলেছেন ম্যাথিউস-মেন্ডিস জুটি। এই জুটির যোগ করেছে ২৪৬ রান। তাদের কল্যাণেই নিউজিল্যান্ডের বড় লিড নেমে এসেছে ৩৭ রানে। পঞ্চম দিনে যদি এভাবেই ব্যাট করেন ম্যাথিউস ও মেন্ডিস, ম্যাচটা হয়ত বাঁচিয়ে ফেলতে পারবে শ্রীলংকা।