• নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ
  • " />

     

    সৌম্যকে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে

    সৌম্যকে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে    

    আরও একটা ম্যাচ, আরও একবার ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আশা জাগিয়েও ব্যর্থ বাংলাদেশ। কিন্তু টপ অর্ডারের ব্যর্থতাই কি ডোবাল? সৌম্যকে খেলানো কি যুক্তিযুক্ত? ওই দুই ক্যাচের জন্য কতটা মাশুল দিতে হয়েছে? বোলিংয়ের পরিকল্পনায় কি গলদ ছিল? সেসব বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল


    টপ অর্ডার আবারও ব্যর্থ

    আজকে কিন্তু আমাদের টপ অর্ডার আবারও ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আজ আটজন ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলেছি। এখানে কিন্তু সৌম্য বাদে শীর্ষ পাঁচের সবাই সেট হয়েই আউট হয়ে গেছে। মাহমুদউল্লাহও প্রথম পাঁচে নামেনি, তারপরও সে যে তার সে খেলাটা খেলেছে তাও নয়। কিন্তু তাতেই কিন্তু দল ১৪১ রান করতে পেরেছে। অথচ প্রথম পাঁচের অন্য যে কেউ আর কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকলেই রান কিন্তু ১৭০-১৮০ পেরিয়ে যায়।

    এ ক্ষেত্রে আমি বলব, তামিম আজকে শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল। ওর আর ইমরুল দুইজনেরই শট সিলেকশন খুবই বাজে ছিল। ইমরুল যেমন ক্রস দ্য ব্যাট খেলেছে, তামিমও বলটা যাচাই করে খেলেনি। সাব্বিরকে দেখে মনে হয়েছে, ওর মনযোগে একটু সমস্যা আছে। শুরুটা ভালো করেও সে খেই হারিয়ে ফেলছে। আর, প্রথম ম্যাচের পর মনে হচ্ছে সাকিবের ব্যাটে ওর সেই ধারটাই নেই। বিপিএলেও মনে হয়েছে ব্যাটে ঠিক ওই সাকিব নেই। মোসাদ্দেক-মাশরাফি চেষ্টা করেছে, কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার আগেই হয়ে গেছে। তারপরও আমি বলব, সব মিলে আসলে ২০ রানের মতো কম হয়েছে।

     

    সৌম্যকে বিশ্রাম দেওয়া উচিত

    সৌম্য সরকারের ক্ষেত্রে আমি বলব, তাঁর ক্ষেত্রে ভুল নীতিতে আগানো হচ্ছে। আমি আবারও বলি, সে খুবই প্রতিভাবান একজন ব্যাটসম্যান। কিন্তু অনেক দিন থেকেই রানে নেই। তাকে না খেলিয়ে বরং কিছু ম্যাচ বিশ্রাম দেওয়া যেতে পারে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, একজন খেলোয়াড়কে শেষ করে দেওয়ার জন্য সব প্রক্রিয়াই ওর ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হচ্ছে। ওকে এভাবে চাপে পিষ্ট না করে নিজেকে আবার চেনানোর সুযোগ করে দেওয়া হোক।

     

    পরিকল্পনার অভাব এখনো প্রকট

    আমি অন্তত এই ফরম্যাটে দলের কাছ থেকে আরও বেশি কিছু আশা করেছিলাম। একটা ব্যাপার খেয়াল করলে দেখবেন, গত এক বছরে বাংলাদেশ বেশ কিছু টি-টোয়েন্টি খেলেছে। অনেকে তো বিপিএলও খেলে এসেছে। কিন্তু মনে হচ্ছে, তাদের অনেকেই বেশ ক্লান্ত। নিজেদের চেনানোর একটা সুযোগ ছিল আমাদের। বেশ কিছু মাল্টি স্কিলড খেলোয়াড়ও ছিল আমাদের। না পারার জন্য কিছুটা খেলোয়াড়দের ব্যর্থতা দায়ী, কিছুটা দায়ী পরিকল্পনার অভাব। আপনি যখন মোসাদ্দেককে দিয়েই দুই ওভার বল করাবেন, তখন মিরাজ তো তার জায়গায় অনেক বেশি কার্যকরী হতেই পারত। ওই জায়গায় একজন বোলারও কম হয়ে গিয়েছিল বলে আমার মনে হয়েছে। রুবেল বা সৌম্যের জায়গায় মিরাজ তো অনায়াসেই আসতে পারত।

     

    বোলিংয়ে ভুল কৌশল

    আমরা জানি, কেন উইলিয়ামসন স্পিন দারুণ খেলে। কিন্তু সাকিবকে দিয়ে ওপেন করানো হলো। তার ওভারে চার মেরেই উইলিয়ামসন নিজের আত্মবিশ্বাসটা অনেকটুকু বাড়িয়ে নিল। পরে অবশ্য সাকিব ফিরে এসেছে, কিন্তু উইলিয়ামসন কিন্তু তার আত্মবিশ্বাসটা পেয়ে গেছে। সত্যি বলতে, মুস্তাফিজ ছাড়া বাকি কারও বলই সেরকম মুগ্ধ করার মতো হয়নি। তবে এটা ঠিক, ১৪১ রানের পর বোলারদের জন্য কিছু করা কঠিনই ছিল।

     

    ক্যাচের দায়টা ওই দুজনেরই...

    একজনের পক্ষে কিন্তু পুরো মাঠে নজর রাখা সম্ভব না। সৌম্য সরকার বা তামিম ইকবাল যে নিজেদের জায়গা থেকে এগিয়ে ছিল, সেটা অধিনায়ক চাইলেও দেখতে পারবেন না। একটা আমি বলব, ফিল্ডিং কোচের ব্যর্থতা। বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডারদের সাধারণত ১০ গজ ভেতরে থাকতে বলা হয়, যাতে এক রান দুই না হয়। কিন্তু সেটা করতে গিয়েই আজকে ১০ রান বের হয়ে গেছে। এটা আসলে অধিনায়ক বা কোচ- কারও পক্ষে আসলে কিছু করা সম্ভব নয়। সেই দায়টা আসলে দুজনের আলাদাভাবেই নিতে হবে।

     

    একটা সুযোগ দরকার...

    আমাদের আসলে একটা সুযোগ দরকার। একটা আশার দিক, এর মধ্যে মাহমুদউল্লাহ ফিরে এসেছে। আশা করি, পরের ম্যাচে অন্যদের কেউ নিজেদের ফিরে পাবে। তবে আমি মনে করি, পরের ম্যাচে অবশ্যই মিরাজকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। আর আটজন ব্যাটসম্যান খেলানোর আমি মোটেই পক্ষপাতী নই। টি-টোয়েন্টিতে ওই বিলাসিতা চলে না।