• নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ
  • " />

     

    ক্যাচ মিসের জন্যই আফসোস করতে হতে পারে

    ক্যাচ মিসের জন্যই আফসোস করতে হতে পারে    

    ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে উঠে এসেছে বেশ কিছু প্রশ্ন। ম্যাচ কি ড্রয়ের দিকেই এগুচ্ছে? বাংলাদেশকে জয়ের জন্য কী করা উচিত? মুশফিকের অভাব কতটুকু বোঝা গেছে? স্পিনারদের নিষ্প্রভতার কারণ কী? ক্যাচ মিসের দায়টা কার? প্যাভিলিয়নে বিশ্লেষণ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল 


    ম্যাচ ড্রয়ের দিকেই এগুচ্ছে
     

    প্রথম দিন হিসেবে ড্র ধরে নিলাম, দ্বিতীয় দিনে আমরা জিতেছি, আজকেও আমি বলব আমরা একেবারে হেরে যাইনি। এই টেস্টের এখন যে অবস্থা, অলৌকিক কিছু না হলে ড্রর দিকেই এগুচ্ছে। 

     

    শরীরী ভাষা আরও ইতিবাচক থাকতে হবে
     

    আমরা বড় একটা ভুল করেছি, দিনের শেষ বলে একটা ক্যাচ মিস করেছি। সকাল বেলা আরও এক দুইটা ক্যাচ মিস করেছি। এগুলো না হলে আমরা ভালো অবস্থানে থাকতে পারতাম । কাল সকালে লাঞ্চের আগে যদি বেশ কয়েকটা উইকেট ফেলে দিতে পারি, তাহলে হয়তো আমাদের ম্যাচে ফেরার একটা চেষ্টা করতে পারব। আমার মনে হয়েছে, টিমের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আরেকটু বেশি ইতিবাচক থাকা উচিত ছিল। কাল সকালে সবাই আরেকটু বেশি চাঙা থাকলে অন্যরকম কিছু আশা করা যেতেই পারে।

     

    তামিমের অধিনায়কত্বে অভিজ্ঞতার একটু অভাব


    আমার কাছে মনে হয়েছে, বোলিং হ্যান্ডলিং খুব ভালো ছিল না, চলে গোছের বলা যায়। সাকিবকে যেমন অনেক পরে এনেছে। ফিল্ড প্লেসমেন্ট মাঝে মাঝেই একটু বেশি আক্রমণাত্মক মনে হয়েছে। যেমন রস টেলর সাকিবের বলে একই জায়গা দিয়েই বেশ কয়েকটা চার মেরেছে। সেখানে একটু অন্যভাবে ফিল্ডিং সাজালে ওরা হয়তো ৩০ থেকে ৪০ রান কম করতে পারত। 

     

    ফাস্ট বোলাররা ভালোই করেছে


    আমি বলব, আমাদের তিন পেসারই বেশ ভালো করেছে। মনে রাখতে হবে, বেসিন রিজার্ভে সাধারণত তৃতীয় দিনেই ব্যাট করাটা তুলনামূলক বেশি সহজ। সেক্ষেত্রে আমাদের একেবারেই আনকোরা তিন পেসারের অগ্নিপরীক্ষাই ছিল। তিন উইকেটের সবগুলোই নিয়ে তারা উতরে গেছেই বলা যায়। যদিও রাব্বি দুই উইকেট নিয়েছে, তবে আমি তাসকিন ও শুভাশীষকেই বেশি গিয়ে রাঝতে চাই। বিশেষ করে শুভাশীষ দারুণ লাইন ও লেংথ মেনে বল করে গেছে, একটা উইকেট ও পেতেই পারত। ভাগ্য সহায় থাকলে তাসকিনের উইকেটও আরও বেশি হতে পারত। তাসকিনকে যদিও একটু খরুচে মনে হবে, কিন্তু আমার মনে হয় অভিষেক হিসেবে সে ভালোই করেছে। 

     

    মুশফিকের অভাব বোঝা গেছে


    উইকেটের পেছনে ওর মতো অভিজ্ঞ কেউ না থাকাটা অবশ্যই একটা ধাক্কা। মুশফিক এখানে একই সঙ্গে দুইটি ভূমিকা পালন করে। উইকেটকিপার তো বটেই, অধিনায়ক হিসেবেও পুরো মাঠের একটা ছবি তার সামনে থাকে। বোলারের লাইন, লেংথ এসবও সে কাছ থেকে দেখতে পায়। ইমরুল আজকে ভালোই করেছে, ক্যাচ মিস করেনি, স্টাম্পিং মিস করেছে। তার কাজটা সে ভালোমতোই করেছে। তারপরও মুশফিক থাকলে কিছু রান হয়তো কম হতো।

     

    স্পিন কোচের অভাব বোঝা গেছে


    সাকিবের বল আজকে আমার কাছে একটু অ্যাভারেজই মনে হয়েছে। লেফট আর্ম স্পিনারের অর্থোডক্স ডেলিভারিটা ঠিকঠাক দিতে পারেনি। মিরাজের ক্ষেত্রেও শুরুতে সেই সমস্যা ছিল। তবে মিরাজ পরের দিকে বল যেভাবে ড্রিফট করেছে, সেটা দেখার জন্য আসলেই দারুণ ছিল। ওর লাইন দুর্দান্ত ছিল, লেংথের ব্যাপারে আরেকটু মনযোগী হলে আরও ভালো কিছু হতে পারত। এখানে আমি বলব, একজন স্পিন বোলিং কোচের অভাবটা বোঝা গেছে। উপমহাদেশে যে কন্ডিশনে স্পিনাররা বল করে, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে বল করার কায়দাটা হবে অন্যরকম। আমাদের স্পিনাররা তো নিয়মিত বল করার সুযোগ পায় না ওখানে, একজন কোচের পরামর্শ পেলে সেটা হয়তো কাজে আসতে পারত।

     

    স্লিপে স্পেশালিস্ট ফিল্ডার দরকার


    ওয়াসিম আকরাম আমাকে একবার একটা কথা বলেছিলেন," মার্ক ওয়াহ বা শেন ওয়ার্নের মতো একজন স্লিপ ফিল্ডার আমার দলে থাকলে আমার টেস্ট উইকেট ৬০০ হতে পারত"। আজকে স্লিপে যে সহজ ক্যাচ মিস হলো, আমাদের জন্য সেটা একেবারেই অবাক করার নয়। আমি কাউকে আলাদা করে দোষও দেব না। স্লিপে ক্যাচ ধরা অভ্যাসের ব্যাপার, সেটার জন্য অনেক দিনের চর্চা লাগে। আমাদের দেশের উইকেটে যখন বল স্লিপ পর্যন্ত ঠিকমতো আসেই না, সেই দক্ষতা একদিনে আশা করাটাও অনুচিত।