• প্লেয়ার রেটিং
  • " />

     

    প্লেয়ার রেটিং : পর্তুগাল-উরুগুয়ে

    প্লেয়ার রেটিং : পর্তুগাল-উরুগুয়ে    


    উরুগুয়ে

    ফার্নান্দো মুসলেরা ৬/১০
    খুব বেশি পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি তাকে পর্তুগাল। এতোটা সহজ হবে সেটা হয়ত নিজেও বুঝতে পারেননি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কয়েকবার নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন। উড়ে আসা বল ধরতে পারেননি ঠিকমতো। ভাগ্যটা ভালো, বিপদ হয়নি সেখান থেকে।

    মার্টিন ক্যাসারেস ৭/১০
    প্রথম একঘন্টা ডান প্রান্ত ধরে ওপরে উঠেছেন, নেমে রক্ষণের দায়িত্বও পালন করেছেন ভালোভাবে। রিকার্ডো কারেসমা ডান প্রান্ত চলে যাওয়ার পর তাকে আবার ফেরত যেতে বাধ্য করেছেন। পকেটবন্দি করে রেখেছিলেন রাফায়েল গেরেরোকেও।

    হোসে মারিয়া হিমেনেজ ৮/১০
    ডিয়েগো গডিনের সঙ্গে তার জুটিটা সম্ভবত বিশ্বকাপের সবচেয়ে দুর্ভেদ্য রক্ষণ দুর্গ। দুই পাশ থেকে আসা ক্রসের কোনোটাই বিপদ হতে দেননি। রক্ষণের দিক দিয়ে নির্ভুল ম্যাচ খেলেছেন।

    ডিয়েগো গডিন ৭.৫/১০
    পুরো ম্যাচে ভুল করেছেন একটাই। রোনালদোকে আটকাতে এতো ব্যস্ত ছিলেন না কর্নার থেকে পেপেকে প্রায় ফাঁকায় রেখে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই গোল খেয়েছে উরুগুয়ে। ওই একটা ভুল অবশ্য পুষিয়ে দিয়েছেন বাকি সব কিছুকে। রোনালদোকে আটকে রাখায় সবচেয়ে বড় অবদান
    তার। গোলরক্ষক মুসলেরাকে অবসর সময় পার করেছেন সেটা গডিনের জন্যই।

    ডিয়েগো লাক্সালাট ৬.৫/১০  
    শেষদিকে দারুণ এক ট্যাকেলে বল ছিনিয়ে নিয়েছিলেন কারেসমার কাছ থেকে। ডানদিক থেকে করা পর্তুগালের আক্রমণগুলো আগে থেকেই পড়ে ফেলেছেন, তাই বিপদ হতে দেননি। আক্রমণে অবশ্য তেমন সাহায্য করতে পারেননি।  

    নাহিতান নান্দেজ ৬/১০
    সবকিছু উজাড় করে খেলেছেন। মাঝমাঠে কয়েকবার বলের দখল নিয়ে দলকে আক্রমণেও সাহায্য করেছেন। ডান প্রান্ত দিয়ে কয়েকটি ভালো পাসও পাঠিয়েছিলেন।

    টরিয়েরা ৭/১০
    বক্স টু বক্স মিডফিল্ডারের ভূমিকায় খেলেছেন। আক্রমণে যত না সাহায্য করেছেন, তার চেয়ে বেশি রক্ষণেই মনোযোগী ছিলেন। অস্কার তাবারেজের চাহিদাটা ভালোভাবেই পূরণ করেছেন। এক ম্যাচে মোট ৪টি শট ব্লক করেছেন আজ। এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি। শতভাগ এরিয়াল ডুয়েলও জিতেছেন।

    মাতিয়াস ভেসিনহো ৭/১০
    প্রথমার্ধে শতভাগ নির্ভুল পাস দিয়েছেন। সেটাই সাহায্য করেছে উরুগুয়েকে। মাঝমাঠে প্রায় সবগুলো লড়াইয়েও জিতেছেন ভেসিনহো।


    রদ্রিগো বেন্টাকুর ৬/১০

    প্রথমার্ধে ভালোই খেলেছেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গেই ফিঁকে হয়ে গেছে তার পারফরম্যান্স।

    লুইস সুয়ারেজ ৮/১০
    প্রথম গোলে নিখুঁত ক্রসটা তারই করা। পর্তুগালের দুই সেন্টারব্যাককে ব্যস্ত রেখেছেন পুরোটা সময়। শেষদিকে অবশ্য কিছুটা একা হয়ে পড়েছিলেন। এরপরও রদ্রিগেজকে দারুণ একটা ক্রস করেছিলেন। সেটা গোলে পরিণত হতেই পারত।

    এডিনসন কাভানি ৯/১০
    মোট শট নিয়েছেন তিনটি। গোল করেছেন দুইটিতে। দ্বিতীয় গোলটা তো বিশ্বকাপের অন্যতম সেরাই। উরুগুয়ের জার্সিতে এখন পর্যন্ত কাভানির সবচেয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স।

    ক্রিশ্চিয়ান রদ্রিগেজ ৭/১০
    ৬৩ মিনিটে মাঠে নেমে নিজের অভিজ্ঞতার সবটুকু ঢেলে দিয়েছেন। সময়মতো খেলার গতি কমিয়ে দিয়েছেন, তাতে উরুগুয়ের বল পজেশন ধরে রাখতেও সুবিধা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত গোলটা করতে পারলে আফসোস করার মতো কিছুই থাকত না রদ্রিগেজের।

    ক্রিশ্চিয়ান স্টুয়ানি ৫/১০
    কাভানির জায়গায় নেমেছিলেন। খেলায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি।

    ম্যানুয়েল ফার্নান্দেজ
    ৮৪ মিনিটে নেমে দলের রক্ষণ আরেকটু মজবুত করেছেন।

     

    পর্তুগাল

    রুই প্যাট্রিসিও ৬.৫/১০

    প্রথমার্ধে সুয়ারেজের ফ্রিকিক থেকে দারুণ এক সেভ করেছিলেন। কিন্তু কাভানির দ্বিতীয় গোলে তার পজিশনিং বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। আগের ম্যাচের গুলোর মত ডিস্ট্রিবিউশনে আজ একেবারেই ভাল করতে পারেননি। তার লক্ষ্যভ্রষ্ট কিকে শেষদিকে বেশ কয়েকবার বল পায়ে সময় নষ্ট করার সুযোগ পেয়েছে উরুগুয়ে।

    রিকার্ডো পেরেইরা ৫.৫/১০

    বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচটা শুরু করেছিলেন ঠিকঠাক। কিন্তু ম্যাচ যত গড়িয়েছে, তিনিও খেই হারিয়েছেন পাল্লা দিয়ে। না পেরেছেন ঠিকমত ক্রস করতে, বার কয়েক ফাউল করে আবার উরুগুয়েকে সস্তা ফ্রিকিকও উপহার দিয়েছেন। হার ছাড়াও নিজের পারফরম্যান্সের কারণে ম্যাচটি ভুলে যেতে চাইবেন পেরেইরা।

    পেপে ৬.৫/১০

    কাভানির দ্বিতীয় গোলের ভুলটা বাদ দিলে পুরো ম্যাচে একেবারে ইস্পাতদৃঢ় ছিলেন। গোল করে দলকে সমতায়ও ফিরিয়েছিলেন। সুয়ারেজ-কাভানিদের আটকিয়েছেন দারুণভাবে। সেটপিস থেকেও হেড করে বল ক্লিয়ার করেছেন অনেকবার। কিন্তু ঐ এক ভুলেই শেষমেশ ফিরতে হচ্ছে খালি হাতেই।

    ফন্ট ৭/১০

    বয়সকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। আজও ছিলেন স্বরূপে। শেষদিকে পেপে উপরে উঠে যাওয়ায় উরুগুয়ের প্রতি আক্রমণগুলো ঠেকিয়েছেন একাই। সফলও হয়েছেন। পর্তুগিজদের মধ্যে আজ সবচেয়ে কম বল হারিয়েছেন তিনিই।

    রাফায়েল গুরেরো ৫.৫/১০

    লেফট উইং দিয়ে ক্রসের সুযোগ পেয়েছিলেন বেশ কিছু। পেয়েছিলেন দূরপাল্লার শটের সুযোগও। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন প্রতিবারই। পুরো ম্যাচে তার ক্রসিং ছিল একেবারেই সাদামাটা। আর কাভানির প্রথম গোলটাও হয়েছে তার ভুলেই। উপরে উঠে যাওয়ায় কাভানি, সুয়ারেজরা বাঁ-প্রান্ত দিয়েই আক্রমণ করছিলেন বেশি।

    উইলিয়াম কারভালহো ৬.৫/১০

    ‘ডেস্ট্রয়ার’ রোলটা বেশ ভালমতই রপ্ত করে নিয়েছেন। ‘ইন্টারসেপশন’ ক্ষমতা অসাধারণ। পুরো ম্যাচে তার কারণেই অনেকবার প্রতি আক্রমণের সুযোগগুলো কাএ লাগাতে পারেনি উরুগুয়ে। আক্রমণেও উঠে এসেছিলেন, কিন্তু শট নেওয়ার অপারগতায় ভুগেছেন পুরোটা ম্যাচ। বেশ কয়েকবার ডিবক্সের বাইরে তাকে জায়গা করে দিয়েছিল উরুগুয়ে, কিন্তু শট না নিয়ে আবারও সেই পিছনেই পাস পাঠিয়েছেন। বল কেড়ে নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু আক্রমণ শুরু করার ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যর্থ।

    আদ্রিয়ান সিলভা ৬/১০

    তার সমস্যাও কারভালহোর মতই। অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক চিন্তাধারা থেকে বেরই হয়ে আসতে চান না। কতবার যে সুযোগ পেয়েও ব্যাকপাস দিয়ে আক্রমণ গড়ার সুযোগ হারিয়েছেন, তার হিসেব নেই। তবে উরুগুয়ের আক্রমণ রুখে দেওয়ার কাজটা করেছেন ভাল মতই। গতির অভাবে উরুগুয়ের তরুণ মিডফিল্ডারদের সাথে পেরে উঠেননি কয়েকবার। তবে সেজন্য অবশ্য দলকে বড় ধরণের মাশুল গুণতে হয়নি।

    হোয়াও মারিও ৫/১০

    ঠিক কী কারণে প্রত্যেক ম্যাচেই তাকে নামাচ্ছেন সান্তোস, তা পরিষ্কার নয় এখনও। না পেরেছেন উইং দিয়ে আক্রমণ গড়তে, না পেরেছেন মাঝমাঠ থেকে রোনালদোদের পাস যোগাতে। আবারও পুরোপুরি ব্যর্থ। সেটপিসে থেকে ক্রসগুলো ক্লিয়ার করতে একেবারেই সমস্যা হয়নি উরুগুয়ে রক্ষণভাগের। হোয়াও মুতিনিয়োর জায়গায় তাকে নামানোর সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিতে পারলেন না আবারও।

    বের্নার্দো সিলভা ৭/১০

    পর্তুগালের সেরা খেলোয়াড় আজ। পুরোটা ম্যাচই পর্তুগিজদের আক্রমণভাগে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন। ম্যাচে পর্তুগালের গোলের যে হাতেগোনা সুযোগ কয়টি এসেছে, প্রতিটির মূলেই ছিলেন তিনি। ড্রিবলিং করে ভিতরে ঢুকে সুযোগসন্ধানী চকিত পাস যুগিয়েছেন, আবার ক্রসগুলোও ছিল মাপা। কিন্তু শেষমেশ ফরোয়ার্ডদের ভুলে ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই

    গঞ্জালো গুইদেস ৪/১০

    পুরো ম্যাচে খূঁজেই পাওয়া যায়নি তাকে। ‘সেকেন্ড স্ট্রাইকার’ হিসেবে খেললেও তাকে আটকাতে কোনো সমস্যাই হয়নি উরুগুয়ে রক্ষণভাগের। এক মুহূর্তের জন্যও গোলের সামনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেননি। রোনালদোর সাথে বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল চোখে পড়ার মত।

    ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ৪/১০

    পর্তুগালের জার্সিতে তার অন্যতম বাজে পারফরম্যান্স। শুরুর দিকে জোরাল এক শটে নিজের উপস্থিতির কথা জানান দিয়েছিলেন মুসলেরাকে। কিন্তু এরপর আর পুরো ম্যাচে তেমন খুঁজে পাওয়া যায়নি তাকে। তার উদ্দেশ্যে দুই উইং থেকে ভেসে আসা ক্রসগুলোও কাজে লাগাতে পারেননি। দলের সংকটময় মুহূর্তে ত্রাণকর্তা হতে পারলেন না রোনালদো। পর্তুগালও ফিরল খালি হাতেই।

     

    বদলি

    মানুয়েল ফার্নান্দেজ ৪.৫/১০

    মুতিনিয়ো, ব্রুনোদের না নামিয়ে তাকে নামিয়ে একটা ‘বাজি’ খেলেছিলেন সান্তোস। কিন্তু একেবারেই কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগটি। শট নিয়েছেন কয়েকবার, কিন্তু প্রত্যেকটিই লক্ষ্যভ্রষ্ট। সুয়ারেজদের কাছে বলও হারিয়েছেন, ট্যাকলিংটাও ঠিক যুতসই ছিল না।

    আন্দ্রে সিলভা ৫/১০

    গুইদেসের বদলে নেমেছিলেন শেষ ১৫ মিনিটে। কিন্তু একেবারেই নিষ্প্রভ ছিলেন। ধারাভাষ্যকার তার নাম না বললে হয়ত তাকে খুঁজেই পাওয়া যেত না। গোলের সামনে সুযোগ অবশ্য পেয়েছিলেন একবার, কিন্তু শট নেওয়ার আগেই বল কেড়ে নিয়েছিলেন হিমেনেজ। আবারও ব্যর্থ।

    রিকার্ডো কারেসমা ৬.৫/১০

    জয়ের জন্য তাকেই সবার আগে নামিয়েছিলেন। পর্তুগিজ দলের অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন আজ। দুই উইং দিয়ে ত্রাস ছড়িয়েছেন বেশ কয়েকবার, ক্রসগুলোও ছিল দারুণ। কিন্তু উরুগুয়ের রক্ষণের কাছে হার মানতে হয়েছে ‘কিং অফ ট্রিভেলা’কেও।