• প্লেয়ার রেটিং
  • " />

     

    প্লেয়ার রেটিং: ক্রোয়েশিয়া-ডেনমার্ক

    প্লেয়ার রেটিং: ক্রোয়েশিয়া-ডেনমার্ক    

    ক্রোয়েশিয়া

     

    ড্যানিয়েল সুবাসিচ ৮.৫/১০

    ম্যাচের শুরুর গোলটায় ভুল করেছিলেন। তবে সময়ের সাথে ফিরেছেন স্বরূপে। প্রথমার্ধের শেষদিকে এরিকসেনের শট থেকে দারুণ এক সেভ করেছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে ডেলাইনির শট না ফেরালে হয়ত বিদায়ঘণ্টাটা আজ বাজত ক্রোয়েশিয়ারই। আর শুটআউটে ৩টি পেনাল্টি ঠেকিয়ে তো দলকে নিয়ে গেছেন শেষ আটে।

    সিমে ভ্রাসালকো ৬.৫/১০

    ডেনমার্কের গোলে জার্গেনসনকে মার্ক করার কাজটা ঠিকমত করতে পারেননি। তবে ডানপ্রান্তে ব্র্যাথওয়েটকে পুরোটা ম্যাচই পকেটবন্দি করে রেখেছিলেন। দু’বার ভয়ঙ্কর ট্যাকেল করলেও হলুদ কার্ড দেখেননি ভাগ্যক্রমে। রক্ষণে ভিদা-লভ্রেনদের সাহায্য করলেও আক্রমণে মানজুকিচের গোলে অ্যাসিস্ট বাদে তেমন জ্বলেই উঠতে পারেননি।

    দেয়ান লভ্রেন ৭/১০

    ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণে আবারও দারুণ খেলেছেন। পুরো ম্যাচে কর্ণেলিয়াস এবং ইয়োর্গেনসেনকে পকেটবন্দি করে রেখেছিলেন। লম্বা পাসে পেরিসিচ এবং ক্রামারিচদের বল যুগিয়ে সাহায্য করেছেন আক্রমণেও।  

    দোমাগজ ভিদা ৬/১০

    খুব সম্ভবত বিশ্বকাপে আজ নিজের সবচেয়ে খারাপ ম্যাচটা খেললেন। লভ্রেনকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি একেবারেই। সেটপিসে তাকে হেডে পরাস্ত করতে কোনো সমস্যাই হয়নি ইয়োর্গেনসেন এবং পলসেনদের। আর লম্বা পাসগুলো দিয়ে বল হারিয়েছেন অনেকবার।

    ইভান স্ট্রিনিচ ৫.৫/১০

    ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণের বাঁ-প্রান্তে আবারও জ্বলে উঠতে ব্যর্থ। ডেনিশ উইঙ্গার ব্র্যাথওয়েট রীতিমত নাকানিচুবানি খাইয়েছেন তাকে। আক্রমণেও মানজুকিচদের পাস যোগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ক্রসগুলো ক্লিয়ার করতে তেমন বেগ পেতে হয়নি ডেনিশ রক্ষণভাগকে।  

    মার্সেলো ব্রোজোভিচ ৭/১০

    মাঝমাঠে আবারও ইস্পাতদৃঢ় এক পারফরম্যান্স দিয়েছেন। এরিকসেনকে আটকানোর দায়িত্বটা পালন করেছেন ভালমতই। বার দুয়েক এরিকসেন তাকে পাশ কাটিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত বড় কিছু হয়নি। মানজুকিচের গোলে তার পাস থেকেই ডানপ্রান্তে বল পেয়েছিলেন ভ্রাসালকো।

    আনতে রেবিচ ৭.৫/১০

    ‘ওয়ার্কম্যান লাইক’ পারফরম্যান্স দিয়েছেন রীতিমত। পুরো ক্রোয়েশিয়া দলে তার মত ‘প্রেসিং’-এ দক্ষ খুব সম্ভবত কেউই নেই। তার প্রেসিংয়েই মাঝমাঠে বল হারিয়েছিলেন ক্রিস্টেনসেন। পরে সেখান থেকেই এসেছিল মানজুকিচের গোল। বল ধরে রাখার কাজটাও করেছেন দারুণভাবে। আবারও এক দারুণ পারফরম্যান্সে নজর কাড়লেন।

    লুকা মদ্রিচ ৭.৫/১০

    পুরো ম্যাচে তার পাসিং ছিল স্বভাবসুলভ। বল কেড়ে নেওয়ার কাজটাও করেছেন দুর্দান্তভাবে। প্রতি আক্রমণে যেমন সাহায্য করেছেন, তেমনি আবার নিচে নেমে ব্রোজোভিচদেরও সাহায্য করেছেন রক্ষণে। অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি মিস করলেও শাপমোচন করেছিলেন শুটআউটে গোল করে। তার অধিনায়কত্বেই ১৯৯৮-এর পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন দেখছে ক্রোয়েশিয়া।

    ইভান রাকিটিচ ৮/১০

    নিঃসন্দেহে ক্রোয়েশিয়ার সেরা খেলোয়াড় আজ। পুরো ম্যাচে বল হারিয়েছেন মাত্র ৫ বার। প্রেসিংটাও ছিল নিখুঁত। এরিকসেনকে আটকাতে ব্রোজোভিচকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। আর মাথা ঠান্ডা রেখে শেষ পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে নিয়ে গেলেন শেষ আটে।

    ইভান পেরিসিচ ৭/১০

    ডেনিশ রাইটব্যাক ডালসগার্ডকে নাচিয়েছেন পুরোটা ম্যাচ। মানজুকিচের সাথে বোঝাপড়াটাও ছিল দারুণ। তার গতি, ড্রিবলিং সামলতে সবসময় মার্কার হিসেবে দুজনকে রেখেছিলেন হারিদা। কিন্তু খুব একটা লাভ হয়নি। নিচে নেমে রক্ষণেও সাহায্য করেছেন ডেনিশ প্রতি আক্রমণের সময়।

    মারিও মাঞ্জুকিচ ৭.৫/১০

    ৩ মিনিটে তার গোলেই সমতায় ফিরেছিল ক্রোয়েশিয়া। এরপরের সময়টুকু খেলেছেন নিজের স্বভাবসুলভ খেলাটাই। লম্বা পাসগুলো কাজে লাগিয়েছেন, পজেশনও ধরে রেখেছেন দক্ষতার সাথে। খারাপ দিক বলতে গেলে রক্ষণে সাহায্য করার অপারগতার কথা বলা যেতে পারে, কিন্তু এজন্য অবশ্য তেমন ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়নি ক্রোয়েশিয়াকে। আবারও উতরে গেলেন ‘লেটার’ মার্কস নিয়েই।

     

    বদলি

    মাতেও কোভাসিচ ৬.৫/১০

    শেষ ২০ মিনিটে নেমেছিলেন নির্ধারিত সময়ের। কিন্তু নিজেকে তেমন মেলে ধরতে পারেননি। আক্রমণভাগে একেবারেই নীরব ছিলেন। ট্যাকলিংটাও ঠিকঠাক হয়নি তার। বলও হারিয়েছেন বেশ কয়েকবার। প্রতি আক্রমণের এক চমৎকার সুযোগও নষ্ট করেছেন অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষদিকে।

    জোসেপ পিভারিচ ৪.৫/১০

    একেবারেই বিবর্ণ ছিলেন পুরোটা সময়। ৮১ মিনিটে নামার পর থেকেই প্রচন্ড নার্ভাস মনে হয়েছে তাকে। ফার্স্ট টাচে যে কতবার বল হারিয়েছেন, তা হয়ত জানেন না নিজেও। একদম শেষদিকে ডিবক্সের বাইরে থেকে শটের একটি সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু বল পাঠিয়েছেন দর্শকসারিতে। পেনাল্টিও মিস করেছেন।

    আন্দ্রে ক্রামারিচ ৫/১০

    দুর্দান্ত পেরিসিচের জায়গায় নেমে আবারও ব্যর্থ হলেন নিজেকে প্রমাণ করতে। যে ডালসগার্ডকে নাচিয়েছিলেন পেরিসিচ, সে-ই ডালসগার্ডই পকেটবন্দি করে রেখেছিলেন তাকে। অবশ্য পেনাল্টি থেকে গোল করেছিলেন ঠিকই।

    মিলান বাদেল ৪/১০

    আগের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সেরা পারফরমার আজ ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই। শেষের ১২ মিনিটে মোট ৯বার বল হারিয়েছেন একাই। ডেনিশ আক্রমণভাগে গতির অভাবে বেঁচে গেছেন তিনি। মিস করেছেন পেনাল্টিও। মূল একাদশে নামার যে জোর দাবিটা রেখেছিলেন আইসল্যান্ডের বিপক্ষে, আজ হারালেন সেটিও।

     

     

     

    ডেনমার্ক

    ক্যাসপার স্মেইকেল ৯/১০

    দলকে জেতাতে একজন গোলরক্ষকের যা যা করার প্রয়োজন, সম্ভাব্য সবই করেছিলেন। খালি হাতে ফিরলেও মাথাটা উঁচু করেই বিশ্বকাপকে বিদায় জানালেন তিনি। ১১৫ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার পেনাল্টি ঠেকিয়ে দলকে পেনাল্টি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানেও ঠেকিয়েছিলেন দুটি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে খুব সম্ভবত একজন গোলরক্ষকের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স।

    হেনরিক ডালসগার্ড ৫.৫/১০

    পেরিসিচকে সামলাতেই পারেননি একেবারে। ওভারল্যাপ করেও আক্রমণভাগে তেমন সাহায্য করতে পারেননি। খুবই নড়বড়ে মনে হয়েছে পুরোটা ম্যাচ। রেবিচের প্রেসিংয়ে বল হারিয়েছেন কয়েকবার। একেবারেই হতাশাজনক পারফরম্যান্স।

    সিমন কিয়ার ৭/১০

    পেছন থেকে দুর্দান্ত অধিনায়কত্বের আরেক স্মারক লিখে গেলেন। মানজুকিচ, লভ্রেনদের সেটপিসে হেডে পরাস্ত করেছেন, পুরো রক্ষণভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন। লম্বা পাসে এরিকসেন-পলসেনদের পাসও জুগিয়েছেন। স্মেইকেলের মতই আজকের হারটা কোনোভাবেই প্রাপ্য নয় তার। দুর্দান্ত এক পেনাল্টিতে গোল করেছিলেন শুটআউটে।

    মাথিয়াস ইয়োর্গেনসেন ৭.৫/১০

    ৫৮ সেকেন্ডে গোল করে দলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। ১১৫ মিনিটে ক্রোয়েশিয়াকে পেনাল্টি উপহার দিয়েছিলেন তিনিই। মুদ্রার দুপিঠই দেখেছেন। তবে পেনাল্টির ঘটনা বাদে পুরো ম্যাচই ছিলেন দারুণ। কিয়ারের সাথে রক্ষণটা সামাল দিয়েছেন দারুণভাবে। প্রথমার্ধের শেষদিকে কর্ণার থেকে তার হেড গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে না গেলে হয়ত গল্পটা হতে পারত অন্যরকম।

    ইয়োনাস নুডসেন ৮/১০

    ইয়োর্গেনসেনের গোলটা এসেছিল তার লম্বা থ্রো থেকেই। ৩ মিনিটেই ক্রোয়েশিয়ার গোলে ডেনিশদের আত্মবিশ্বাস কিছুটা নড়ে গেলেও নুডসেন ছিলেন দুর্দান্ত। লেফত উইঙ্গার হিসেবেই খেলেছেন বলতে গেলে। তবে ডেনিশ ফরোয়ার্ডদের এতটুকু জায়গা দেননি। রক্ষণেও ছিলেন দারুণ। ম্যাচে ডেনমার্কের অন্যতম সেরা পারফরমার।

    আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ৬.৫/১০

    ডেনমার্কের উজ্জ্বল নক্ষত্র আজ কিছুটা বিলীনই ছিলেন। রক্ষণ থেকে উঠিয়ে তাকে মাঝে খেলানোর জুয়াটা ঠিক কাজে দিল না। বল হারিয়েছেন অনেকবার। আর ডিফেন্ডারসুলভ ট্যাকেলে অনর্থক ক্রোয়েশিয়াকে বেশ কয়েকটি ফ্রিকিক উপহার দিয়েছেন। হলুদ কার্ড যে দেখেননি, এটাই তার সৌভাগ্য। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাকে উঠিয়ে নেন হারিদা।

    থমাস ডেলাইনি ৭.৫/১০

    এরিকসেনকে আটকানোর দিকে ক্রোয়েশিয়ার ঝোঁকটার সদ্ব্যবহার করেছেন দারুণভাবে। ড্রিবলিং এবং বলের নিয়ন্ত্রণের এক পসরাই সাজিয়ে বসেছিলেন। লম্বা শটগুলো অবশ্য কিছুটা লক্ষ্যভ্রষ্ট ছিল। আবারও প্রমাণ করলেন নিজেকে।

    ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন ৬.৫/১০

    ঘুরেফিরে আসবে তার পেনাল্টি মিসের কথাটাই। কিন্তু ম্যাচে এরিকসেন ছিলেন স্বরূপেই। সেটপিস গুলোতে আরেকটু ভাল করা উচিত ছিল। তবে পাসিং রেঞ্জের কথা বললে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৩ মিনিটে তার অবিশ্বাস্য চিপটা ক্রসবারে না লাগলে হয়ত অতিরিক্ত সময়েই যেত না ম্যাচটি।

    ইউসেফ পলসেন ৭.৫/১০

    স্ট্রাইকারের ভূমিকা ছেড়ে খেলেছেন উইংয়ে। ভালোই করেছেন, তবে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি। বার কয়েক ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলেন ড্রিবলিং করে, কিন্তু ক্রসগুলো একেবারেই ভাল হয়নি। ডিবক্সের বাইরে থেকে শট নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন কয়েকবার, কিন্তু বিচিত্র কারণে পাস ছাড়তেই বেশি আগ্রহী মনে হয়েছে তাকে।

    আন্দ্রেয়াস কর্ণেলিয়াস ৫.৫/১০

    ইয়োর্গেনসেনের জায়গায় তাকে নামিয়েছিলেন হারিদা। কিন্তু কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে একেবারেই ব্যর্থ তিনি। সেটপিসগুলোতে উচ্চতার ব্যবহারটা ঠিকমত করতে পারেননি। প্রতিপক্ষ সেন্টারব্যাক লভ্রেনের পকেটেই ছিলেন পুরোটা সময়। ৬৬ মিনিটে তাকে উঠিয়ে নেন হারিদা।

    মার্টিন ব্র্যাথওয়েট ৬/১০

    আবারও ব্যর্থ। উইং দিয়ে একবারও ডিবক্সে ঢুকে ত্রাস ছড়াতে পারেননি। ভ্রাসালকো রীতিমত পকেটবন্দিই করে রেখেছিলেন তাকে। ইয়োর্গেনসেনের উচ্চতার সুযোগ নিয়ে করা ক্রসগুলোর কোনোটিই মাপা ছিল না।

     

    বদলি

    লাস শোনে ৫/১০

    ক্রিস্টেনসেনের বদলে নেমেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। কিন্তু মেলে ধরতে পারেননি নিজেকে। লক্ষ্যভ্রষ্ট পাস দিয়েছেন প্রচুর। আর শুটআউটেও সুবাসিচকে পরাস্ত করতে পারেননি।

    নিকোলাই ইয়োর্গেনসেন ৬/১০

    জয়সূচক গোলের আশায় তাকে নামিয়েছিলেন হারিদা। কিন্তু কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ তিনি। ৫ম পেনাল্টি মিসটা ছিল মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।

    মাইকেল ক্রন-দেলি ৫/১০

    পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন ঠিকই, কিন্তু ম্যাচের শেষ ২০ মিনিটে নেমে একেবারেই নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। আক্রমণভাগে পাওয়া ‘ফ্রি রোল’টাও কাজে লাগাতে পারেননি। দুটি চমৎকার প্রতি আক্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন অতিরিক্ত সময়ে।

    পিওনে সিস্টো

    ম্যাচের শেষ ১৪ মিনিটে নেমেছিলেন। তেমন কিছুই করতে পারেননি।