• প্লেয়ার রেটিং
  • " />

     

    প্লেয়ার রেটিং : বেলজিয়াম-জাপান

    প্লেয়ার রেটিং : বেলজিয়াম-জাপান    

    বেলজিয়াম

    থিবো কোর্তোয়া ৭/১০
    প্রথমার্ধে বড় একটা ভুল করতে বসেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনোমতে আবার ভুলটা শুধরে নিয়েছিলেন। শেষদিকে কিয়েসুকি হোন্ডার ফ্রি কিক ঠেকিয়ে দলকে টিকিয়ে রেখেছিলেন ম্যাচে। পরে কর্নার থেকে বেলজিয়ামের শেষ গোলটার আক্রমণের শুরু তার দেওয়া বল থেকেই।  

    টমাস অ্যাল্ডারউইরেল্ড ৮/১০
    বেলজিয়ামের সেরা ডিফেন্ডার ছিলেন তিনি। থ্রি ম্যান ব্যাকলাইনে তার দুইজন সঙ্গী ভুল করেছেন, সে ভুল থেকেই গোল খেয়েছে বেলজিয়াম। কিন্তু তিনি ছিলেন নির্ভুল। ৭২ আর ৭৪ মিনিটে দুইবার দারুণ দুইটি ব্লক না করলে সেখানেই ম্যাচটা হেরে যেতে পারত বেলজিয়াম।

    ভিনসেন্ট কোম্পানি ৫/১০
    হেডে বল ক্লিয়ার করতে পারেননি ভালোমতো। ৫২ মিনিটে সেখান থেকেই পরে গোল করেছেন তাকাশি ইনুই। কোম্পানি প্রথমার্ধে একটা গোল করার সুযোগও পেয়েছিলেন, কাজে লাগাতে পারেননি। তবে শেষদিকে এসে হোন্ডার একটা শট ব্লক করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।

    ইয়ান ভেট্রোনহেন ৬/১০
    ম্যাচটা ভেট্রোনহেনের গেছে ভালো মন্দ মিলিয়ে। গাকু শিবাসাকির পাসটা আগেই বিপদমুক্ত করতে পারেননি, পরে জাপান প্রথম গোল করেছে সেখান থেকেই। পরে ৬৯ মিনিটে অবশ্য শাপমোচন করেছেন, দারুণ এক গোল করে দলকে লাইফলাইন এনে দিয়েছিলেন।

    থমাস মুনিয়ের ৬/১০
    পুরো ম্যাচে মোটেই সুবিধা করতে পারেননি বেলজিয়ামের রাইট উইংব্যাক। শেষের গোলে ক্রসটা তারই করা ছিল, ওটাই যথেষ্ট হয়েছে বেলজিয়ামকে ম্যাচ জেতাতে। ৬১ মিনিটে লুকাকুকে একটা ভালো ক্রস করেছিলেন। তাছাড়া গড়পড়তা মানের পারফরম্যান্স ছিল। নাগাতোমোর তাকে টপকে সহজেই আক্রমণে উঠে গেছেন।

    কেভিন ডি ব্রুইন ৬/১০
    জাপানের দ্বিতীয় গোলে ইনুইকে প্রেস না করে নিজের জায়গায়ই দাঁড়িয়েছিলেন। ম্যাচটা হেরে গেলে আফসোসই করতে হত ডি ব্রুইনকে। অবশ্য তার কাজ যেটা ছিল সেটা ঠিকমতো পালন করেছেন। শেষ গোলের বিল্ড আপে তার ভূমিকাও কম নয়। জাপানের রক্ষণ থেকে বল নিয়ে তিনিই মুনিয়েরকে পাসটা দিয়েছিলেন।

    অ্যাক্সেল উইটসেল ৬/১০
    মিডফিল্ডে বলের দখল পেতে ভুগতে হয়েছে। জাপানের রক্ষণ ভেঙে দেওয়ার মতো কোনো পাসও দিতে পারেননি। ডিবক্সের বাইরে থেকে ছন্নছাড়া শট করে বরং জাপানের রক্ষণের ওপর চাপ কমিয়েছেন।

    ইয়ানিক কারাস্কো ৫/১০
    শুরুটা করেছিলেন ভালো, সময়ের সাথে মিলিয়ে গেছে তার খেলা। আজও নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। বাঁ প্রান্ত দিয়ে তেমন একটা ক্রসও করতে পারছিলেন না।

    ড্রিস মার্টেনস ৮/১০
    বেলজিয়ামের আক্রমণভাগে সপ্রতিভ ছিলেন মার্টেনস। নাগোতোমোকে বেশ কয়েকবার ফাঁকি দিয়ে ডান দিক থেকে ভালো ক্রস করেছিলেন তিনি। অন্তত দুইবার সেখান থেকেই গোল করতে পারতেন লুকাকু। কিন্তু মার্টেনসের চেষ্টা বৃথাই গেছে শেষ পর্যন্ত।



    এডেন হ্যাজার্ড ৭/১০
    প্রথমার্ধে একবার লক্ষ্যে শট করেছিলেন, বাঁ পায়ে। পরেরবার ভালো জায়গায় বল পেয়েও লক্ষ্যে শট করতে পারেননি। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর হ্যাজার্ডই দলকে ফিরিয়ে আনতে পারতেন ম্যাচে। তার নেওয়া শট গোলরক্ষককেও বোকা বানিয়েছিল, কিন্তু বারপোস্টকে ফাঁকি দিতে পারেনি হ্যাজার্ড। ৭৪ মিনিটে ফেলাইনির গোলের অ্যাসিস্টটাও হ্যাজার্ডেরই।

    রোমেলু লুকাকু ৫/১০
    বেলজিয়ামের শেষ গোলে তার ডামি থেকেই বল পেয়েছিলেন নাসের চাডলি। এরপর গোল। এছাড়া লুকাকুর জন্য ম্যাচটা হয়েছিল হতাশারই। অন্তত দুইবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও শটই করতে পারেননি লুকাকু। শারীরিক সক্ষমতার বাড়তি সুবিধাটুকুও আদায় করতে পারেননি জাপানের বিপক্ষে। লুকাকুর ছায়া হয়ে থাকা আরেকটু হলেই বেলজিয়ামের বাদ পড়ার কারণ হতে পারত।

    বদলি
    নাসের চাডলি, মারুয়ন ফেলাইনি ৮/১০
    ৬৫ মিনিটে দুইজন একসঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন, তখন বেলজিয়াম দুই গোলে পিছিয়ে। প্রথমে গোল করে বেলজিয়ামকে সমতায় ফিরিয়েছেন ফেলাইনি, আর ৯৪ মিনিটের নাটকীয় গোলটা করেছেন চাডলি। একজন উচ্চতার সবটুকু সদ্বব্যবহার করেছেন, আরেকজন ঠিক সময়ে জায়গা মতো ছিলেন। বেলজিয়ামের ম্যাচ জয়ের নায়কও দুই সুপার সাব।


    জাপান

    এইজি কাওয়াশিমা ৮/১০
    ৩ গোল হজম করেও কাওয়াশিমার এই নম্বর দেখে আতকে উঠতে পারেন। কিন্তু পুরো খেলা দেখে থাকলে এই নম্বরটা তার প্রাপ্র্যই মনে হবে। প্রথমার্ধে কোম্পানির হেডের সময় নিজের শরীর পুরোপুরি বিস্তৃত করে লক্ষ্য সংকুচিত করে এনেছিলেন। কোম্পানি তাই গোল করতে ব্যর্থ। হ্যাজার্ডের বুলেট গতির শটও আটকে দিয়েছিলেন। ৮৫ মিনিটে চাডলি আর লুকাকু দুইজনেই পরপর গোলবঞ্চিত করেছেন দারুণ দুই সেভে। দুর্ভাগ্য ম্যাচটা হেরেই শেষ হয়েছে তার।

    হিরোকি সাকাই ৬/১০
    আক্রমণে ওঠেননি খুব বেশি। রক্ষণ অবশ্য শুরুটা ভালো হলেও, চাডলির নামার পর সুবিধা করতে পারছিলেন না। ২৮ সেটপিস থেকে কোম্পানিকে গোল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনিই। ভুল থেকে অবশ্য শাস্তি পেতে হয়নি সে দফায়।  ৬৪ মিনিটে ভালো একটা ক্রস করেছিলেন, কিন্তু জায়গামতো সতীর্থের দেখা পাননি।  

    মায়া ইয়োশিদা ৬/১০
    লুকাকুকে কড়া পাহাড়ায় রেখেছিলেন। বেলজিয়ামের শেষ গোলে ডি ব্রুইনকে প্রেস করবেন নাকি জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে একটু বেশিই দেরি করে ফেলেছিলেন।

    গেন সোজি ৬/১০
    ৭৩ মিনিটে দারুণ এক ব্লক করে ডি ব্রুইনকে গোল করতে দেননি। তার সেই পরিশ্রম অবশ্য বিফলেই গেল শেষ পর্যন্ত।

    নাগাতোমো ৭/১০
    জাপানের আক্রমণের বেশিরভাগই হয়েছে বাঁ প্রান্ত দিয়ে। তার বেশিরভাগেরই উৎস ছিলেন নাগাতোমো। কম হলেও ৪ টি ভালো ক্রস করেছিলেন। একটি থেকে তো প্রায় গোলই আদায় করে নিয়েছিল জাপান। কর্নার থেকেও ভালো রক্ষণ করে দলকে স্বস্তি যুগিয়ে যাচ্ছিলেন।

    হাসিবি ৫/১০
    সব ভালো করেও শেষে মনঃসংযোগ হারিয়ে ডুবিয়েছেন দলকে। ডি ব্রুইনকে আটকানোর দায়িত্ব ছিল। ৯৩ মিনিটে পাওয়া কর্নারে আক্রমণেই মন ছিল বেশি। ডি ব্রুইনকে যে ফাঁকায় ফেলে এসেছেন সেটা মনেই ছিল না!

    গকু শিবাসাকি ৭/১০
    হোল্ডিং মিডফিল্ডারের দায়িত্বটা ভালোভাবেই পালন করেছেন। ভেট্রোনহেনকে বোকা বানিয়ে হারাগুচিকে দেওয়া পাসটাও তারই ছিল।  

    তাকাশি ইনুই ৮/১০
    প্রথম গোলে তিনিই নিজের অর্ধ থেকে শিবাসাকিকে বলটা পাঠিয়েছিলেন তিনি। পরের গোলটা তো নিজেই করেছেন। অসাধারণ দক্ষতা, নিখুঁত ফিনিশে কোর্তোয়াকে কোনো সুযোগ না দিয়েই ২০ গজ দূর থেকে শট নিয়েছিলেন। প্রথমার্ধেও একটা হেড করেছিলেন, কিন্তু গতি ছিল না তাতে। তবে বেলজিয়ামকে ভুগিয়েছেন পুরো ম্যাচজুড়েই।

    শিনঝি কাগাওয়া ৬/১০
    কাগাওয়ার পায়ের কাজ দেখে বেশ কয়েকবার হ্যাজার্ড আর ডি ব্রুইনেরই ঈর্ষায় পড়ে যাওয়ার কথা। দ্বিতীয় গোলেও বলটা দারুণ দক্ষতায় নিজের নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ইনুইকে ভালো জায়গায় পাস দিয়েছিলেন। তবে জাপানের আক্রমণে গতির সঞ্চার করতে পারেননি।

    গিনকি হারাগুচি ৭/১০
    প্রথম গোলটা হারাগুচির করা। ডান পায়ের শটে কোণাকুণি মেরেছিলেন, কোর্তোয়াকে সুযোগই দেননি।  

    ইয়ুয়া ওসাকো ৬/১০
    প্রথমার্ধে ফাঁকায় বল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। আগের তিন ম্যাচের তুলনায় আজ কিছুটা নিষ্প্রভ ছিলেন। কিন্তু মাঝমাঠে নেমে এসে জাপানকে বলের দখক ফিরিয়ে দেওয়ার কাজটা করেছেন আগের মতোই।

    বদলি
    কিয়েসুকি হোন্ডা ৬/১০
    দারুণ একটা গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন, শটও করেছিলেন বাঁ পায়ে। কিন্তু আজ আর রূপকথার মতো জাপানকে জিতিয়ে ফিরতে পারেননি। শেষদিকে ভালো একটা ফ্রি কিকও নিয়েছিলেন। পুরো টুর্নামেন্টের মতোই হোন্ডা নামার পর জাপানের আক্রমণে ধার বেড়েছিল। কিন্তু একটা জিনিসেরই পুনরাবৃত্তি হয়নি, হোন্ডার নামার আর গোল পায়নি জাপান। ৮১ মিনিটে নেমে অবশ্য যা করেছেন সেটাও কম ছিল না।

    হতারো ইয়ামাগুচি
    তিনিও ৮১ মিনিটেই নেমেছিলেন, কিন্তু তার প্রভাব অল্পই অনুভব করেছে জাপান।