• ফুটবল

রবার্তো মার্টিনেজ - বেলজিয়ামের ট্যাকটিক্যাল কারিগর

পোস্টটি ২৬০৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

স্প্যানিশ কোচ মানেই পজেশনাল ফুটবল, পাসের সমারোহ, টিকি টাকা। কিন্তু বেলজিয়ামের কোচ রবার্তো মার্টিনেজ আর দশটা স্প্যানিশ কোচ এর মত নন, যার প্রমাণ তার ট্যাকটিকস, তার অধীনে বেলজিয়াম বিশ্বকাপের আগে খেলেছে ১৮ ম্যাচ, হেরেছে ১ টি, ক্লিন শিট ছিলো ৯ টি, কি আছে তার ট্যাকটিকস এ আমার ফুটবল জ্ঞান দিয়ে তা বেরার করার একটা প্রয়াস আগামী কটা মিনিট করবো

ফরমেশন, ট্যাকটিকস এবং প্লেইং স্টাইল -

মার্টিনেজ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামকে ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলাচ্ছেন, যার প্রধান কারণ হিসেবে বলা যায় ভালো লেফটব্যক না থাকা, আর মার্টিনেজ সবার আগে তার ডিফেন্স ঠিক রাখতে পছন্দ করেন যার প্রমাণ ১৮ ম্যাচের মধ্যে ৯ টি ক্লিন শিট, অন দ্যা বল  বেলজিয়াম ৩-৪-৩ এবং ৩-৪-২-১ ব্যবহার করে, তিনিও তার উইংব্যাকদের উপরে উঠে এটাকে সাহায্য করার পারমিশন দিয়েছেন, যার ফলে হ্যাজার্ড মার্টিনস এবং লুকাকু তিনজনই সেন্ট্রাল এ পজিশন নেয়, আর ওয়াইড প্রোভাইড করে উইংব্যাকরা, এর ফলে বেলজিয়ামের এটাকের সময় অপোজিশন বক্সের সামনে সবসময় ৫ জন খেলোয়াড় পাওয়া যায়, তিনি নিজের হাফ থেকে একেবারে ডিফেন্স লাইন থেকে খেলা বিল্ড করতে পছন্দ করেন, এক্ষেত্রে তিনি কোম্পানির বল প্রোভাইডিং এবিলিটি কাজে লাগান, উইটসেল আর ডে ব্রুইন সেন্ট্রাল মিড হিসেবে খেলে, কিন্তু উইটসেল আর ব্রুইন দুই জন দুই রোলে খেলে, ডে ব্রুইন হচ্ছে মিড থেকে মেইন বল প্রোভাইডার, তার পাসিং দক্ষতা, দুর পাল্লার শট, থ্রু বল এর ক্ষমতার জন্য মার্টিনেজ তাকে উপরে প্রতিপক্ষের বক্সের কাছাকাছি যাওয়ার পারমিশন দিয়েছেন,  এর ফলে বেলজিয়ামের ৫ জন খেলোয়াড় একসাথে এটাক করলেও ডে ব্রুইন একজন এক্সট্রা এটাকার হিসেবে থাকে, তবে এর সমস্যাও আছে, যদি প্রতিপক্ষ ডে ব্রুইনকে ডেসপোজেস্ট করতে পারে তবে কুইক কাউন্টারের সুযোগ পায়, হ্যাজার্ড কে তিনি অলমোস্ট ফ্রি রোলে খেলান এবং পুরো টিমে হ্যাজার্ডের উপর সবচেয়ে কম ডিফেন্সিভ দায়িত্ব রয়েছে, যার ফলে হ্যাজার্ড এটাকে সবার থেকে বেশি সময় দিতে পারে, এই অপশন গুলো ছাড়াও যদি তার দল বিল্ড আপের স্পেস বা সময় না পায় তখন সে লং পাসের মাধ্যমে কাউন্টার এটাক করান এবং তখন লুকাকুর স্পিড এবং ট্যালেন্ট কাজে লাগিয়ে গোল আনার চেষ্টা করেন, মুনিয়ের আর কারাসকো দুই উইংব্যাকের কাজ করে, হ্যাজার্ড লুকাকু মার্টেন্স মুণিয়ের আর কারাসকো মিলে তৈরি হয় তার ফাইভ ম্যান এটাক, আর যেহেতু তার লেফট সাইড এ এটাকের জন্য অপশন বেশি সে জন্যে তিনি এটাক এর জন্যে বেশিরভাগ সময় লেফট সাইড ব্যবহার করেন,  অফ দ্যা বল বা ডিফেন্সের জন্যে তিনি ব্যবহার করেন ৫-৪-১ ফরমেশন, প্রতিপক্ষের নিকট থেকে বল বের করার জন্যে গেগেইন প্রেশিং করান, আর ৫ জনের ডিফেন্সিভ লাইনের ফলে অপোজিশন এর পাসিং লাইন বন্ধ হয়ে যায়, মার্টিনেজ এর এই টোটাল ট্যাকটিকস এ আমি দুইটা দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছি যার একটি হল কারাসকো, কারাসকো মূলত লেফট মিড বা লেফট উইঙ্গার হিসেবে খেলে, আর সে একজন ফরোয়ার্ড হবার দরুন তার ডিফেন্সিভ এবিলিটি বেশ কম, সুতরাং প্রতিপক্ষ চাইলেই এই দিক কাউন্টার এটাকের মাধ্যমে গোল পেতে পারে, আরেকটি দুর্বলতা হচ্ছে ডে ব্রুইন , তিনি যে রোল ডে ব্রুইনকে খেলান পেপ এই রোলে তাকে বেশ কয়েকবার খেলিয়ে বিপদে পড়েছেন, মূলত এই রোলের ডে ব্রুইনকে আটকে দিলে বেলজিয়ামের মিড ইউজ করে এটাক করা বন্ধ হয়ে যাবে আবার তাকে ডেসপোজেস্ট করতে পারলে কাউন্টার এটাকের সুযোগ পেতে পারে প্রতিপক্ষ, 

বর্তমানে একটা কথা বেশ শোনা যাচ্ছে সেটি হচ্ছে বেলজিয়ামের এটা গোল্ডেন জেনারেশন, এই প্রজন্মের ট্যালেন্ট এর সাথে যদি মার্টিনেজ এর কলা কৌশল ঠিক মত ক্লিক করে তবে সাফল্য পাওয়া তাদের জন্য কষ্টের কোনো কাজ না,