• নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ
  • " />

     

    জেতার তীব্র ইচ্ছাটা আমি দলের মধ্যে দেখিনি

    জেতার তীব্র ইচ্ছাটা আমি দলের মধ্যে দেখিনি    

    কেমন করল প্রথম ওয়ানডের বাংলাদেশ দল? দশের মধ্যে যদি নম্বরফর্দ করা হয়, তাহলে কাকে কত দেওয়া যায়? সেই কঠিন কাজটাই করার চেষ্টা করেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল...  

     

    মাশরাফি বিন মুর্তজা : ৭.৫/১০

    ১০ ওভারে কোনো উইকেট না পেয়ে ৬০- এটা দিয়ে আসলে ঠিক মাশরাফিকে বোঝা যাবে না। ও উইকেট পায়নি ঠিক, তবে দুইটি পাওয়ারপ্লেতে বল করার কঠিন দায়িত্বটা নিতে হয়েছে। তার ওপর ওই সময় ল্যাথামও সেট হয়ে গিয়েছিল। ওর বৈচিত্র্য বা লাইন ও লেংথটা রাখতে পেরেছিল। 

     

    মুস্তাফিজুর রহমান : ৮/১০

    শেষের দুই ওভার ছাড়া মুস্তাফিজ তো অসাধারণ ছিল। ও মাত্র চোট থেকে ফিরে এসেছে, গতিটাও কম ছিল। উইকেটের কারণে নিজের মূল অস্ত্র কাটারটাও ওভাবে ব্যবহার করতে পারেনি।

     

    তাসকিন আহমেদ : ৬/১০  

    আমার কাছে মনে হয়েছে তাসকিন আসলে সেভাবে মাথা কাটিয়ে বল করতে পারেনি। শুরুর দিকে উইলিয়ামসনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা নিয়েছিল, কিন্তু পরে ও উইকেটের চরিত্র বুঝে বল করেনি। তার ওপর ও উইকেটের দুই দিকে বল করে গেছে। মুস্তাফিজ যেমন থেমে থেমে বল করেছে, সেটা সে ওভাবে করতে পারেনি।

     

    সাকিব আল হাসান : বোলিং ৮.৫/১০, ব্যাটিং ৮.৫/১০

    বোলিং-ব্যাটিং দুইটিতেই সাকিব আজকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ ছিল। ইনিংসের খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুইটি ব্রেক থ্রু দিয়েছে ও। বিশেষ করে নিল ব্রুম ও জিমি নিশম যখন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারত, তখন ও দুইজনকেই ফিরিয়ে দিয়েছে। আর ব্যাটিংয়ে আমি বলব, ওই সময়ে ওই ইনিংসটাই পরিস্থিতির দাবি ছিল। আমরা যে ২৬৩ পর্যন্ত গেছি, ওখানে ওর বড় অবদান। ও তখন স্লথ হয়ে গেলে আমরা হয়তো ২০০-ও করতে পারতাম না।

     

    সৌম্য সরকার : বোলিং ৭/১০, ব্যাটিং ৩/১০

    সৌম্য যে ৪ ওভার বল করেছে, আমি সেটাকে ভালোই বলব। বিশেষ করে একজন অকেশনাল বোলারের কাছ থেকে অধিনায়ক খুব বেশি কিছু চাইতে পারতেন বলেও মনে হয় না। সেই হিসেবে ওকে আমি বলে দশে সাত দেব।

    কিন্তু ওর মূল কাজ যেটি, ব্যাটিংয়ে সে আরও একবার হতাশ করেছে। ওর পেছনে আসলে অনেকই বিনিয়োগ হয়ে গেছে, কিন্তু সেই আস্থার প্রতিদান দিতেই পারছে না। 

     

    তামিম ইকবাল : ৬.৫/১০

    শুরুটা বেশ ভালো করেছিল। কিন্তু রানরেটের গতির সাথে তাল মেলাতে পারেনি। কিন্তু থিতু হওয়ার পর ওর কাছ থেকে বড় একটা ইনিংসই প্রত্যাশা ছিল দলের, সেটা সে মেটাতে পারেনি।

     

    ইমরুল কায়েস : ৪/১০

    শুরুটা কায়েসও খারাপ করেনি, কিন্তু কয়েকটা ভালো শট খেলেই আউট হয়ে গেছে। ওপেনিং জুটিতে ও তামিমকে আরও কিছুক্ষণ সঙ্গ দিলে ম্যাচের ফলটা অন্যরকমও হতে পারত।

     

    মাহমুদউল্লাহ : ৩/১০

    ওর তো আসলে সেভাবে মূল্যায়ন করার কিছু নেই। নামার পর পরেই আজকে আউট হয়ে গেছে। ফিল্ডিংয়েও ব্রুমের সহজ একটা ক্যাচ মিস করেছিল, যদিও সেটার জন্য খুব বেশি মাশুল দিতে হয়নি।

     

    মুশফিকুর রহিম : ৭.৫/১০

    মুশফিক আসলে মাঠে দলে তিনটা ভূমিকা পান করে। ব্যাটসম্যান, উইকেটকিপার হিসেবে তো আছেই, উইকেটের পেছনে দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবেও ও বড় একটা অবদান রাখে। ওখান থেকে কিন্তু সে পুরো মাঠের চিত্রটা পায়। আমি তিনটা ভূমিকাতেই ওর মূল্যায়ন করতে চাই। সেই ভূমিকায় আমি ওকে পাঁচ দেব, আমার মনে হয় এখানে সে আরও ভালো করতে পারবে। উইকেটকিপিংও ওর খারাপ হয়নি। তবে ব্যাটিংয়ের জন্য সব মিলে ওকে ৭.৫ দিতে হবে। আমার মনে হয়, ও যে অ্যাপ্রোচ নিয়ে ব্যাট করছিল ওটা দলের জন্য দরকার ছিল। চোট না পেলে আরও হয়তো বেশ কিছুদূর যেতে পারত।

     

    সাব্বির রহমান : ৫/১০

    ও যখন নেমেছে, পরিস্থিতির দাবি মেটাতে তাকে মেরে খেলতেই হতো। সেটা করতে গিয়েই সে আউট হয়ে গেছে। আর ফিল্ডিংয়ের জন্য ওকে আমি বাড়তি পয়েন্ট দেব।

     

    মোসাদ্দেক হোসেন : বোলিং ৭.৫ /১০, ব্যাটিং ৭/১০

    বোলার হিসেবে সে খুবই ভালো করেছে। ওর ইকোনমি রেটও ছিল বেশ ভালো। আর ব্যাটিংয়ে ও যখন নেমেছে, তখন শুরু থেকে হয়তো ওর মানসিকতা আরেকটু অন্যরকম হতে পারত। সেটার জন্য আমি ওকে দোষ দিচ্ছি না, পরে ব্যাট করে আসলে কাজটা কঠিনও। তারপরও সে হয়তো আরেকটু অন্যরকম খেলতে পারত।

     

    দল হিসেবে : ৭/১০

    আমার কাছে মনে হয়েছে, প্রথম ম্যাচ হিসেবে খারাপ করেনি, কিন্তু জেতার ওই তীব্র ইচ্ছাটা একটু কম দেখেছি। আর আমি আগেই বলেছি, ম্যাচের সংখ্যার দিক দিয়ে ওদের চেয়ে আমরা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। কিন্তু ফিটনেসের দিক দিয়ে ওরা অনেক বেশি ভালো। সেটাই আজ আরেকবার দেখা গেছে।আর আমি নাসিরকে মিস করেছি। আমার মনে হয়, ওর অভিজ্ঞতা কাজে আসতে পারত। 


    আরও পড়ুনঃ মাশরাফির ভুল যেন মুস্তাফিজে না হয়